তথ্য প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বলেছেন, আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে গুজব শনাক্ত করতে ৯ সদস্যের মনিটরিং সেল গঠন করেছে তথ্য মন্ত্রণালয়। এই মনিটরিং সেল এই মাসেই গুজব শনাক্ত করা শুরু করবে। এই কমিটির প্রধান করা হয়েছে তথ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. মিজানুর রহমানকে।মঙ্গলবার (৯ অক্টোবর) সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে তিনি এ তথ্য জানান।তারানা হালিম বলেন, কোনও এলাকায় কোনও গুজব ফেসবুকসহ সোশ্যাল মিডিয়ায় পাওয়া গেলে ওই এলাকার সংশ্লিষ্ট থানার ওসিদের ঘটনাস্থলে পাঠানো হবে এবং তারা পরিদর্শন করে মন্ত্রণালয়কে ওই গুজব সম্পর্কে তথ্য দেবে।

তারানা হালিম আরও বলেন, তথ্য যাচাই করতে গোয়েন্দাদের কাছ থেকেও তথ্য নেওয়া হবে। পরে তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে বিটিআরসি’কে ওইসব পেইজ বন্ধ করার জন্য অনুরোধের পাশাপাশি গণমাধ্যমকেও জানানো হবে।তিনি বলেন, দেশ-বিদেশে প্রায় ৩০০ পেজ ব্যবহার করে সরকারবিরোধী প্রচারণা চালানো হচ্ছে। এসব প্রচারণায় নানা ধরনের গুজব ছড়ানো হচ্ছে।গুজব সনাক্তকরণ সেল সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে মতপ্রকাশ নিয়ন্ত্রণ বা সোশ্যাল মিডিয়া পুলিশিং করবে না বলে জানান তথ্য প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম।প্রতিমন্ত্রী বলেন, কোন সমালোচনার উত্তর দেওয়ার কাজ নয় বা কোনো কিছু নিয়ে ট্রল করছে সেটা দেখা কাজ নয়, আমাদের পুলিশিং করা কাজ নয়, আমরা শুধু গুজব সনাক্ত করে দ্রুততার সাথে অবহিত করতে চাই, কারণ অনেক সময় এই গুজবগুলো মানুষের বিশ্বাস করার প্রবণতা রয়েছে।

তিনি বলেন, বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমকে অনুরোধপত্র পাঠাবো যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে সমস্ত বিষয়গুলো ঘুরে বেড়ায় সেগুলোকে তথ্যসূত্র হিসেবে ব্যবহার না করা। অনেক ক্ষেত্রেই সেটা তথ্যভিত্তিক না হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।তারানা বলেন, আমাদের মূল চ্যালেঞ্জ হচ্ছে গুজব হিসেবে আমরা কোনটাকে ধরছি। মিথ্যা, অসত্য বা বানোয়াট তথ্য, অতিরঞ্জন, যেটির কারণে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ক্ষুণ্ন হয়, রাষ্ট্রের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়, রাষ্ট্র বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে যায় এবং যেটি যে কোনো আন্দোলনকে ভিন্নপথে প্রবাহিত করতে পারে অসত্য তথ্য দিয়ে।মূলত আমাদের কাজ হচ্ছে, এ বিষয়টিকে আইডেন্টিফাই করে গণমাধ্যমকে জানানো। তথ্য অধিদপ্তর একটি কমিটি গঠন করেছে যেখানে ৯ সদস্য রয়েছে, তাদের অধীনে কাজ করবে আরো কিছু কর্মকর্তা।

গুজব যাচাইয়ের প্রক্রিয়া নিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, গোয়েন্দা সংস্থা প্রাথমিকভাবে অনলাইনে গুজব’ সনাক্ত করার পর স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সত্যতা যাচাই করে নিশ্চিত হবে। তারপর জানানো হবে।একটি কমিটি গঠন করা হবে অন্যান্য সংস্থা থেকেও সদস্য এখানে অন্তর্ভুক্ত থাকবে। তথ্য সংগ্রহ ও তথ্য যাচাইয়ে অন্যের সহযোগিতা নিচ্ছি, শুধু অবহিতকরণ তথ্য মন্ত্রণালয় করবে।তথ্য সরবরাহে গোয়েন্দা সংস্থা ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েকে আনুষ্ঠানিক চিঠি দেওয়া হবে জানিয়ে তারানা হালিম বলেন, তথ্য অধিদপ্তর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছ থেকে গুজব তা নিশ্চিত হয়ে গণমাধ্যমকে জানাবে। পরে গুজবের তালিকা তৈরি করে বিটিআরসিকে দেওয়া হবে। কনটেন্ট ব্লক ও ফিল্টার’ করতে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে বিটিআরসি।গুজবের বিষয়ে প্রাথমিক তথ্য সংগ্রহের জন্য বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একসেস টু ইনফরমেশন (অ২ও), কাউন্টার টেরিরিজমের কাছে চিঠি পাঠানো হবে বলে প্রতিমন্ত্রী জানান। এ মাসের মধ্যে তথ্য মন্ত্রণালয় কাজ শুরু করে দেবে জানিয়ে তারান হালিম বলেন, কাজ শুরু হয়েছে ইনফারমালি, আনুষ্ঠানিকভাবে যেদিন জানাতে পারবো এটি গুজব তখন থেকেই বলতে পারবো কাজ শুরু করেছি। কোন সমালোচনার উত্তর দেওয়ার কাজ নয় বা কোন কিছু ট্রল করছে সেটা দেখা কাজ নয়, আমাদের পুলিশিং করা কাজ নয়, আমরা শুধু গুজব সনাক্ত করে দ্রুততার সাথে অবহিত করতে চাই, কারণ অনেক সময় এই গুজবগুলো মানুষের বিশ্বাস করার প্রবণতা রয়েছে।এই গুজব সনাক্তকরণ কেন্দ্র নির্বাচনকে প্রভাবিত করবে কি না তা জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা কোনো কনটেন্ট ডেভলপ করবো না, তাহলে নির্বাচনকে প্রভাবিত কীভাবে করবো।… না সেজন্য করছি না, আমরা সেভাবে করলে বাজেট করতাম, লোকবল নিয়োগ দিতাম।আমাদের যা জনবল আছে তা দিয়েই করা হচ্ছে। বিটিআরসি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গুজবের বিরুদ্ধে প্রত্যেক্ষভাবে কাজ করছে। আমাদের কিছু অভিজ্ঞতা হয়েছে, কীভাবে সোশ্যাল মিডিয়া গুজব ছড়ানোর কারখানা হয়ে যায়। আমাদের কাছে মনে হয়েছে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সম্পৃক্ত হওয়া প্রয়োজন। মানুষ যেন সোশ্যাল মিডিয়া দিয়ে বিভ্রান্ত না হয়।