২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ে সন্তুষ্ট আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তবে তাঁরা আশা করেছিলেন, এ ঘটনার মূল নায়ক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানেরও মৃত্যুদণ্ড হওয়া উচিত ছিল। রায় পাওয়ার পর সেটি পর্যালোচনা করে তারেক রহমান, কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ ও হারিছ চৌধুরীর সাজা ফাঁসিতে বর্ধিত করা যায় কি না, সে জন্য উচ্চ আদালতে আপিল করবেন তাঁরা।

বুধবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের কাছে এ রায়ের প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে আইনমন্ত্রী এ কথা বলেন।আইনমন্ত্রী বলেন, তাঁরা যতটুকু জেনেছেন, এ ঘটনায় ৫২ জন আসামির মধ্যে ৪৯ জনের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা হয়েছে। এর মধ্যে ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও ১৯ জনকে যাবজ্জীবন দেওয়া হয়েছে। অন্যদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়েছে।আইনমন্ত্রী বলেছেন, তাঁরা মনে করেন, এ ঘটনার মূল নায়ক তারেক রহমান। তাই রায়ে তারেকের মৃত্যুদণ্ড হওয়া উচিত ছিল। মামলার বিচার শেষ হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, রায়ের কাগজপত্র পাওয়ার পরে আমরা চিন্তা-ভাবনা করব যে এই রায়ে তারেক রহমানকে এবং আরও দুজন- কায়কোবাদ এবং হারিছ চৌধুরীকে যে যাবজ্জীবন দেওয়া হয়েছে সেটার জন্য আমরা উচ্চতর আদালতে গিয়ে তাদের ফাঁসির জন্য আমরা…এনহান্সমেন্ট বলে সেটা আইনে…এনহান্সমেন্টের জন্য আমরা আপিল করব কি না।এই হামলার মূল নায়ক তারেক রহমান। তিনি আওয়ামী লীগকে ও জননেত্রী শেখ হাসিনাকে সপাটে শেষ করে দেওয়ার ষড়যন্ত্রের নায়ক ছিলেন। মূল হোতা তারেকের মৃত্যুদণ্ড হওয়া উচিত ছিল।

২০০৪ সালের ২১ অগাস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসবিরোধী শোভাযাত্রায় গ্রেনেড হামলায় আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন; আহত হন কয়েকশ নেতাকর্মী। সেদিন অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান আজকের প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু গ্রেনেডের প্রচণ্ড শব্দে তার শ্রবণশক্তি নষ্ট হয়। শেখ হাসিনাকে হত্যা করে দলকে নেতৃত্বশূন্য করতেই এই হামলা হয়েছিল এবং তাতে তৎকালীন ক্ষমতাসীন বিএনপি-জামায়াত জোটের শীর্ষ নেতাদের প্রত্যক্ষ মদদ ছিল বলে এ মামলার রায়ে উঠে আসে।

ঢাকার এক নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন এই মামলার রায়ে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছেন।খালেদা জিয়ার বড় ছেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরীসহ ১৯ জনকে দেওয়া হয়েছে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।এছাড়া এ মামলার আসামি ১১ পুলিশ ও সেনা কর্মকর্তাকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।আইনমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, যখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার আসে তখন জজ মিয়া নাটকের ব্যাপারটি উদ্ঘাটিত হলে আবার তদন্ত করা হয়। সুষ্ঠ তদন্তের পর যারা যারা এ মামলায় ষড়যন্ত্রে হত্যার কাজে এবং আলামত গুম করার জন্য দায়ী তাদেরকে বিচারে সোপর্দ করা হয়।পলাতক ১৮ আসামিকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হবে বলেও তিনি জানান।