২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা মামলার রায় হওয়ার পর বুধবার বগুড়ার শাজাহানপুর এলাকায় ঢাকাগামী বাসে পেট্রোল বোমা হামলা হয়েছে।এঘটনায় আঞ্জুমনারা বেগম(৫০),মনিরা বেগম(৪০) ও শামিমা(২৭) নামে ৩ যাত্রী আহত হয়। পুলিশ ঘটনার পরপরেই ঘটনাস্থল সংলগ্ন এলাকা থেকে ধাওয়া করে হামলার সঙ্গে জড়িত নুর মাহমুদ(৩০) নামে এক যুবদল নেতাকে গ্রেফতার করে। সে জাতীয়তাবাদী যুবদল বগুড়া জেলা শাখার সহ কৃষি বিষয়ক সম্পাদক। বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঠেকাতে বিএনপি জামায়াত জোটের আন্দোলনের নামে নাশকতার সময় অন্যতম ত্রাসের পয়েন্ট ছিলো শাজাহানপুর উপজেলার ওই এলাকা।

পুলিশ ও স্থানীয় সুত্র জানায়, দুপুর ১টার দিকে নাবিল পরিবহনের একটি বাস(ঢাকা মেট্রো-ব-১৫-৬৪৪) নিলফামারী থেকে ঢাকা যাচ্ছিল। পথে বগুড়া-ঢাকা মহসড়কের ফটকি ব্রীজ সংলগ্ন রাধার ঘাট এলাকায় ৮/১০ জন সেখানে এসে বাসে হামলা চালায়। হামলার শিকার বাসটির সামনে আরো ২টি বাস ছিলো। হামলাকারীরা প্রথমে একটি বাস লক্ষ করে পেট্রোল বোম নিক্ষেপ করলে বাসটি দ্রুত চলে যায়। এর পরেই নাবিল পরিবহনের বাসের সামনের দিক থেকে পেট্রোল বোমা ছুঁড়ে মারে হামলাকারীরা। এতে গাড়ির সিটে আগুন ধরে যায় এবং ধোঁয়ার সৃষ্টি হলে যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে আর্তচিৎকার শুরু করেন। এসময় হামলাকারীরা লাঠি দিয়ে গাড়িতে হামলা চালিয়ে গ্লাস ভাংচুর করে। নাবিল পরিবহনের বাসচালক আসলাম জানান, তার গাড়িতে হামলার আগে একটি হামলাকারীরা লাঠিসোটা নিয়ে আরো একটি ট্রাক ও বাসে হামলা চালায়। এরপরেই তার গাড়িতে হামলা হয়। পেট্রোলবোমায় গাড়ির সিটে আগুন ধরে গেলে তিনি দ্রুত যাত্রী সহ বাসটি পাশের ফিলিং স্টেশনে নিয়ে যান এবং পানি দিয়ে আগুন নিভিয়ে ফেলেন। ওই বাসের যাত্রী নীলফামারীর উত্তরবালা পাড়ার আমিনা থাতুন জানান, আকষ্মিক হামলায় বাসের সকল যাত্রী আতঙ্কিত হয়ে চিৎকার শুরু করেন।

আগুন আর লাঠি সোটা নিয়ে বাসে হামলায় তারা প্রান শঙ্কায় পড়েন। বাসটি থামার সঙ্গে সঙ্গে কোলে থাকা শিশু সন্তান নিয়ে তিনি আতঙ্কে বাসের জানালা দিয়ে নীচে নামেন। নাবিল পরিবহনের হেলপার শরিফ জানান, তিনি ২টি পেট্রোল বোমা বিস্ফোরিত হওয়ার শব্দ শুনেন। ঘটনার পর পরেই টহল পুলিশের একটি টিম সেখানে যায় এবং হামলাকারীদের ধাওয়া করে। এসময় পুলিশের টহল দলটি বেশ কিছু দুর পর্যন্ত ধাওয়া করে হামলায় অংশ নেয় যুবদল নেতা নুর মাহমুদকে গ্রেফতার করে বলে পুলিশ জানায়। তার বাড়ি শাজাহানপুর উপজেলায়। বগুড়ার পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভুইয়া জানান, পেট্রোল বোমা হামলায় ৩ জন আহত হয়েছে। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ এক জন পেট্রোলবোমা হামলাকারীকে গ্রেফতার করে। তিনি আরো জানান, মোট কতজন হামলাকারী ছিলো তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। প্রসঙ্গত বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বগুড়ায় বিএনপি জামায়াত জোট সড়ক মহাসড়ক জুড়ে পেট্রোল বোমার ত্রাস সৃষ্টি করেছিলে। তাদের লাগাতর পেট্রোল বোমা হামলার কারনে ওই সময় বহু হতাহতের ঘটনা ঘটে। এবার ২১ আগষ্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ের পর যাত্রীবাহী বাসে আবার পেট্রোল বোমা হামলা ও ৩ মহিলা যাত্রী আহত হওয়ার ঘটনা ঘটলো।