একুশে অগাস্ট গ্রেনেড হামলার রায়ে আওয়ামী লীগ অখুশি না হলেও মাস্টারমাইন্ড তারেক রহমানের সর্বোচ্চ সাজা না হওয়ায় পুরোপুরি সন্তুষ্টও নয় আওয়ামী লীগ।

রায়ের পর বুধবার দুপুরে ঢাকায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এক অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের তাৎক্ষণিকভাবে এই প্রতিক্রিয়া জানান।তিনি বলেন,আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আমি বলতে চাই, আমরা বিলম্বিত হলেও এই রায়ে অখুশি নই। কিন্তু পুরোপুরি সন্তুষ্ট নই। কারণ এই রায়ে প্ল্যানার এবং মাস্টারমাইন্ডের শাস্তি হওয়া দরকার উচিত ছিল, সর্বোচ্চ শাস্তি, ক্যাপিটাল পানিশমেন্ট।২০০৪ সালের ২১ অগাস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসবিরোধী শোভাযাত্রায় গ্রেনেড হামলায় আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন; আহত হন কয়েকশ নেতাকর্মী।

সেদিন অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান আজকের প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু গ্রেনেডের প্রচণ্ড শব্দে তার শ্রবণশক্তি নষ্ট হয়। শেখ হাসিনাকে হত্যা করে দলকে নেতৃত্বশূন্য করতেই এই হামলা হয়েছিল এবং তাতে তৎকালীন ক্ষমতাসীন বিএনপি-জামায়াত জোটের শীর্ষ নেতাদের প্রত্যক্ষ মদদ ছিল বলে এ মামলার রায়ে উঠে আসে।

ঢাকার এক নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন এই মামলার রায়ে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছেন।খালেদা জিয়ার বড় ছেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরীসহ ১৯ জনকে দেওয়া হয়েছে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।এছাড়া এ মামলার আসামি ১১ পুলিশ ও সেনা কর্মকর্তাকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, সে সময় বনানীর হাওয়া ভবন থেকেই সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করা হত। তখন বেগম জিয়ার সরকার ক্ষমতায়, হাওয়া ভবনই বিকল্প পাওয়ার সেন্টার ছিল। মুফতি হান্নান নিজেই স্বীকারোক্তি দিয়ে গেছে যে, অপারেশন চালানোর পূর্ব মুহূর্তে তারেক রহমানের অনুমতি নেওয়া হয়েছিল।বিএনপি আমলে ওই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত ভিন্ন খাতে নিতে নানা চেষ্টা হয়। হামলার পরপরই নষ্ট করে ফেলা হয় আলামত।পরে ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে নতুন করে তদন্ত শুরু হলে প্রকৃত তথ্য’ বেরিয়ে আসতে থাকে। উদঘাটিত হয় ‘জজ মিয়া নাটক’।হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি আব্দুল হান্নানের দ্বিতীয় জবানবন্দির সূত্র ধরে এ মামলায় আসামি হন খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমান।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ওই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের প্রধান টার্গেট ছিল তৎকালীন বিরোধীদলের নেতা আজকের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাকে প্রধান টার্গেট করে যে হামলা এবং যে হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনাকারী, মাস্টারমাইন্ড কে এটা দেশের জনগণ ভালো করে জানে, এটা এখন আর গোপন কিছু নয়। প্রকাশ্য দিবালোকের মতো সত্য।ওই হামলায় ২৪ জনের মৃত্যুর কথা মনে করিয়ে দিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের কোনো মূল্য সে সময়কার সরকারের কাছে ছিল না। এমনকি তখনকার সরকার মামলার আলামত পর্যন্ত নষ্ট করে দিয়েছে। এফবিআইকে তদন্ত করতে দেয়নি। স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডকে বাংলাদেশে আসতে দেওয়া হয়নি। একটা ছেলেকে ধরে এনে জজ মিয়া নাটক সাজানো হয়েছিল।