ঢাকা বিশ্ববিদ্যলয়ে ঘ ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। অনুষ্ঠিত পরীক্ষার প্রশ্নের সঙ্গে ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্রের মোট ৭২টি প্রশ্নের হুবহু মিল পাওয়া গেছে। পরীক্ষা শুরুর ৪৩ মিনিট আগে নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সোর্সের কাছ থেকে শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকরা ফাঁস হওয়া ওই প্রশ্নপত্রের কপি পান।শুক্রবার (১২ অক্টোবর) সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে ‘ঘ’ ইউনিটের অধীনে প্রথম বর্ষের (স্নাতক সম্মান) ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।

প্রশ্নগুলোর ফাঁস হওয়া প্রশ্নের সঙ্গে মিল রেয়েছে সাংবাদিকদের কাছে আসা ফাঁস হওয়া ওই প্রশ্নপত্রের সঙ্গে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র মিলিয়ে দেখা যায় বাংলা, ইংরেজি ও সাধারণ জ্ঞান বিষয়ে ১০০টি প্রশ্নের মধ্যে বাংলা অংশে ১৯টি, ইংরেজি অংশে ১৭টি, সাধারণ জ্ঞান অংশে ৩৬টিসহ (বাংলাদেশ বিষয়াবলীর ১৬টি ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলীর ২০টি) মোট ৭২টি প্রশ্নের সঙ্গে ফাঁস হওয়া প্রশ্নের সঙ্গে হুবহু মিল রয়েছে।

জানা যায়, শুক্রবার সকাল ৯টা ১৭ মিনিটে উত্তরসহ হাতে লেখা প্রশ্ন সাংবাদিকরা পান। পরে সাংবাদিকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক সোহেল রানাকে প্রশ্নগুলোর ছবি দেখান। পরীক্ষা শেষে অনুষ্ঠিত হওয়া প্রশ্নের সঙ্গে ফাঁস হওয়া প্রশ্নের হুবহু মিল পাওয়া যায়।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ও বাইরের ৮১টি কেন্দ্রে ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। তবে প্রশ্নফাঁসের বিষয়ে প্রক্টর একেএম গোলাম রব্বানী সাংবাদিকদের বলেন, আমরা কোনও নির্ভরশীল সূত্র থেকে প্রশ্নফাঁসের তথ্য নিশ্চিত হতে পারিনি। কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে।’তিনি বলেন, এখানে জালিয়াতি বা প্রশ্নফাঁসের কোনও সুযোগ নেই। বিষয়টি তদন্ত করা হবে। ঘটনা সত্য হলে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৮-২০১৯ শিক্ষাবর্ষে ‘ঘ’ ইউনিটের অধীনে ১ম বর্ষ স্নাতক সম্মান শ্রেণিতে ভর্তি পরীক্ষা হয়েছে।শুক্রবার (১২ অক্টোবর) সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও ক্যাম্পাসের বাইরের মোট ৮১টি কেন্দ্রে এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষা শুরু হয়েছিল ১০টা থেকে।বিশ্ববিদ্যালযের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর ১৬১৫টি (বিজ্ঞানে- ১১৫২টি, বিজনেস স্টাডিজে- ৪১০, মানবিকে- ৫৩টি) আসনের জন্য ভর্তিচ্ছু আবেদনকারীর সংখ্যা ৯৫ হাজার ৩৪১ জন।ঘ ইউনিটের পরীক্ষার সমন্বয়ক ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সতর্ক অবস্থানে আছে। ভর্তি পরীক্ষায় কেউ কোনো ধরনের অপরাধ সংগঠিত করার চেষ্টা করলে বিশ্ববিদ্যালয় সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রসংগঠন ও এলাকাভিত্তিক সংগঠনগুলো ভর্তিচ্ছুদের সহযোগিতার জন্য বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করছে। ছাত্রলীগ কর্তৃক বিভিন্ন একাডেমিক ভবনের সামনে তৈরি করা হয় তথ্য প্রদান ও শিক্ষার্থী সহায়তা কেন্দ্র। সুপেয় পানির ব্যবস্থা রয়েছে হাকিম চত্বর, অপরাজেয় বাংলা, কার্জন হল ও ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ ভবন। মেডিকেল টিম ছিল কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি ও কার্জন হলে।