মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে দিনভর বৃষ্টিঘূর্ণিঝড় তিতলি আরো দুর্বল হয়ে ভারতের ওড়িষা ও আশপাশের উপকূলীয় এলাকা থেকে উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হচ্ছে। বৃষ্টিঘূর্ণি ঝড়টি উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে দুর্বল হয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে।তবে তিতলির প্রভাবে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে বলে আবহাওয়া বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে।

আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, শুক্রবার সকালে ভারতের ওড়িষা ও সংলগ্ন উপকূলীয় এলাকায় (২০.৮ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ, ৮৪.৫ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশ) অবস্থান করছিল তিতলি। এটি আরও উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে ক্রমশ দুর্বল হতে পারে।গভীর নিন্মচাপের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় গভীর সঞ্চালণশীল মেঘমালার সৃষ্টি হচ্ছে।বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা ও সমুদ্র বন্দরসমূহের ওপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমূদ্র বন্দরসমূহকে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।একইসঙ্গে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানানো হয়, ঢাকা, ময়মনসিংহ, রংপুর, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ী দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।

সেইসঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণ হতে পারে। সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে।এদিকে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘তিতলি’ গভীর নিম্নচাপ আকারে ভারতের উড়িষ্যা ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। এর প্রভাবে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম, বরিশাল, খুলনা, ঢাকা, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণ হতে পারে।

ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণের কারণে চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও ভূমি ধসের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।ঘূর্ণিঝড় নিয়ে শুক্রবার (১২ অক্টোবর) আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ভারতের উড়িষ্যা এবং তৎসংলগ্ন উপকূলীয় এলাকায় অবস্থারত ঘূর্ণিঝড়টি অগ্রসর এবং দুর্বল হয়ে একই এলাকায় গভীর নিম্মচাপে পরিণত হয়েছে।সকাল ৬টায় ভারতের উড়িষ্যা ও তৎসংলগ্ন উপকূলীয় এলাকায় অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে ক্রমশ দুর্বল হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।আবহাওয়াবিদ মো. আবদুর রহমান খান জানান, গভীর নিম্মচাপের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালার সৃষ্টি হচ্ছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্র বন্দরগুলোর ওপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমূদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।এদিকে, সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঢাকা, ময়মনসিংহ, রংপুর, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ী দম্কা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বৃষ্টির কারণে সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে। আগামী তিনদিনে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা হ্রাস পেতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।সকাল ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ টেকনাফে ১০৮ মিলি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়া ঢাকায় ১ মিলি, ময়মনসিংহে ১০ মিলি, চট্টগ্রামে ৩৩ মিলি, রাজশাহীতে ৪৮ মিল, রংপুরে ২৭ মিল, খুলনায় ২ মিলি, বরিশালে ২৮ মিলি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অধিদফতর।