২০ দলীয় জোট থেকে দুটি দলের নেতাদের বেরিয়ে যাওয়ার পেছনে বৈষয়িক লাভালাভের বিষয় রয়েছে বলে মনে করছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।তিনি বলেছেন, আপনারা নিশ্চয়ই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিখ্যাত উপন্যাস শেষের কবিতা পড়েছেন। শেষের কবিতায় আছে, ‘আমরা সবাই চলতি হাওয়ার পন্থি।অনেকে এই চলতি হওয়ার পন্থি থাকে আর কী। মনে করছে যে, বিএনপির জোটের কী হবে না হবে? কোথাও থেকে কিছু বৈষয়িক লাভ হয়ে যেতে পারে।একাদশ সংসদ নির্বাচনের কয়েকমাস আগে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলন করে বাংলাদেশ ন্যাপ ও এনডিপি। তারা কামাল হোসেনের সঙ্গে বিএনপির জোট গঠন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে, পাশাপাশি বিএনপির পাশ থেকে অবহেলা পাওয়ার অভিযোগও তুলেছে।

বুধবার নয়া পল্টনে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসে রিজভী দাবি করেন, ২০ দলীয় জোট ভাঙছে না। ওই দল দুটিও থাকছে।দুই-একজন নেতা চলে গেছেন, তাদের দল থাকছে। তারা ইতোমধ্যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন, তাদেরকে বহিষ্কার করেছেন। তারা আপনাদের জানাবেন, এ ব্যাপারে আপনাদের কোনো সংশয় থাকবে না বলে আমি মনে করি।এর আগে শেখ শওকত হোসেন নীলু নেতৃত্বাধীন এনপিপি ২০ দল থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর দলটির একাংশ ওই নামেই ২০ দলীয় জোটে থেকে যায়। এবারও তেমন ঘটার ইঙ্গিত মিলল রিজভীর কথায়।বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট ছাড়ার ঘোষণা দিয়ে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ন্যাপের চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও এনডিপির চেয়ারম্যান খোন্দকার গোলাম মুর্তজাবিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট ছাড়ার ঘোষণা দিয়ে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ন্যাপের চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও এনডিপির চেয়ারম্যান খোন্দকার গোলাম মুর্তজাতবে বাংলাদেশ ন্যাপের চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও এনডিপির চেয়ারম্যান খোন্দকার গোলাম মুর্তজা সদলবলে জোট ছাড়ার ঘোষণাই দিয়েছিলেন মঙ্গলবার তাদের যৌথ সংবাদ সম্মেলনে।

রিজভী বলেন, কিছু মানুষ তো ঘাপটি মেরে থাকে সব জায়গায়। কিছু কিছু মানুষ বৈষয়িক প্রশ্নে অনেক আপস করেন। এটা যুগ যুগ ধরে হয়ে আসছে। স্বাধীনতার যুদ্ধের সময়ও হয়েছে।গণতান্ত্রিক সংগ্রামের সময়ে আপনারা দেখেছেন এরশাদের অধীনে নির্বাচনে গেলে তারা ‘জাতীয় বেঈমান’। আবার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কেউ কেউ চলে গেলেন। এই আপসকামিতা, স্ববিরোধিতা, এটা তো যুগ যুগ ধরে চলেছে।
নির্বাচনের আগে গণমাধ্যমের মুখ বন্ধ রাখার উদ্দেশ্যে সরকার সম্প্রচার নীতিমালা তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে বলে দাবি করেছেন রিজভী।তিনি বলেন, গণমাধ্যমকে সম্পূণরূপে নিশ্চিহ্ন করে দিতে এবং মানুষকে বোবা বানিয়ে দিতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের পর সম্প্রচার নীতিমালা নামে আরেকটি ভয়ংকর আইন করতে যাচ্ছে সরকার। সম্প্রতি মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে এই বিষয়ে একটি খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।একেবারে মধ্যযুগীয় সম্রাট-সম্রাজ্ঞীদের দেশে পরিণত করার চেষ্টা চলছে। যে শাসকের বিরুদ্ধে কথা বললে গর্দান চলে যাবে- এই আইনগুলো হচ্ছে তারই নামান্তর।নির্বাচনের আগে দুর্নীতি-অনিয়মের খবর প্রকাশ বন্ধ করতেই সরকার এই আইন করেছে বলে আমরা মনে করি, বলেন রিজভী।

সংবাদ সম্মেলনে রিজভীর সঙ্গে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ফরহাদ হালিম ডোনার, হায়দার আলী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন উপস্থিত ছিলেন।