গাজীপুরের শ্রীপুরে বৃহষ্পতিবার শ্রমিকলীগের এক নেতাকে কুপিয়ে ও দু’হাত বিচ্ছিন্ন করে খুন করেছে সন্ত্রাসীরা। নিহতের নাম ওমর ফারুক (২৭)। শ্রীপুর পৌর শ্রমিকলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ওমর ফারুক শ্রীপুরের কেওয়া পশ্চিম খন্ড গ্রামের বহেরার চালা এলাকার হাফিজুল ইসলামের ছেলে। সে শ্রীপুর উপজেলা ছাত্রলীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল হাসানের ভাতিজা।

নিহতের পিতা হাফিজুল ইসলাম ও শ্রীপুর মিজানুর রহমান মহিলা কলেজের শিক্ষক মাসউদসহ স্থানীয়রা জানান, শ্রীপুরের মাওনা চৌরাস্তা এলাকায় আমেরিকান টোবাকো নামের সিগারেটের একটি প্রতিষ্ঠানে স্থানীয় বাজারজাতকারী কর্মকর্তা হিসেবে চাকুরী করত ফারুক। সে প্রতিদিনের মতো বৃহষ্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কর্মস্থলের উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হয়। অটোরিক্সা যোগে যাওয়ার পথে মাওনা-বারতোপা সড়কের মসজিদ মোড় এলাকায় পৌছলে স্থানীয় সুমন ও বাবুলসহ ৮/১০ জন যুবক ফারুকের পথরোধ করে এলোপাতাড়ি মারধর করে। এসময় যুবকরা জোরপূর্বক ফারুককে একটি পিকআপে উঠিয়ে কড়ইতলা বাজার এলাকায় নিয়ে যায়। যুবকরা সেখানে চাপাতি, দা ও ছুরি দিয়ে ফারুককে এলোপাতাড়ি কোপায় এবং তার দু’হাত শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলে। পরে তারা দু’হাত বিচ্ছিন্ন অবস্থায় ফারুককে কেওয়া পশ্চিম খন্ড সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে ফেলে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে স্বজনরা ঘটনাস্থল থেকে বিচ্ছিন্ন হাত দু’টিসহ ফারুককে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় আল-হেরা হাসপাতাল ও পরে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক ফারুককে মৃত ঘোষনা করেন। তবে কি কারনে তার ছেলেকে ঘাতকরা হত্যা করেছে এ বিষয়ে কিছু জানাতে পারেননি নিহতের বাবা।

শ্রীপুর উপজেলা স¦াস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক তাসনিয়া আক্তার জানান, হাসপাতালে আনার আগেই যুবকের মৃত্যু হয়েছে। দু’হাত বিচ্ছিন্ন ছাড়াও তার সারা শরীরে আঘাতের অনেকগুলো চিহ্ন রয়েছে।

এদিকে শ্রমিকলীগ নেতা ফারুক হত্যার ঘটনার প্রতিবাদে এলাকায় অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ে। খুনের এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার ও শস্তির দাবীতে বেলা ১১টার দিকে শ্রীপুর পৌর শহরে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সভা করেছে শ্রমিকলীগ ও ক্ষুব্ধ এলাকাবাসি। খবর পেয়ে গাজীপুরের পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেন। তিনি শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে লাশ দেখেন এবং নিহতের স্বজনদের সান্তনা দেন। এসময় তিনি এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন।

শ্রীপুর মডেল থানার ওসি জাবেদুল ইসলাম জানান, পুলিশ ময়না তদন্তের জন্য নিহতের লাশ গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে। বিকেল পর্যন্ত এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে আটক করা সম্ভব হয় নি। তবে জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান শুরু হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে পূর্ব বিরোধের জেরে এঘটনা ঘটেছে।