বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা বলেছি, নির্বাচন কমিশন সরকারের আজ্ঞাবহ। সরকার যা চাইছে, তারা তাই করছে। এই নির্বাচন কমিশনের অধীনে যে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না, তা আমরা বারবার বলেছি।এ বিষয়ে বিএনপি নেতা আরো বলেন, এটা শুধু বিশ্বাসের কথা নয়, এটাই বাস্তবতা। সুতরাং বর্তমান নির্বাচন কমিশন কখনোই একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে সক্ষম হবে না।বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদলের ৪০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে শুক্রবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সমাধিসৌধে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা শেষে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।

এ সময় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলেও উল্লেখ করেন বিএনপির মহাসচিব। তিনি বলেন, গত কয়েক বছরে আওয়ামী লীগের লক্ষ্যটা হচ্ছে যে, বিরোধী দলগুলোকে বাইরে রেখে তারা নির্বাচনে যেতে চায়। এ জন্য বাংলাদেশের গণতন্ত্রে যার অবদান সবচেয়ে বেশি,সেই খালেদা জিয়াকে জেলে নিয়েছে এবং বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে কারারুদ্ধ করছে।মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আওয়ামী লীগ একতরফাভাবে নির্বাচন করতে চায়। অন্যান্য দল যাতে নির্বাচনে না আসে, সে ব্যবস্থা করছে তারা। আর ৫ জানুয়ারির মতো আরেকটা নির্বাচন করে তারা ক্ষমতায় যেতে চায়।ক্ষমতাসীনরা দেশে পুরোপুরিভাবে ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠিত করেছে বলেও মন্তব্য করেন বিএনপির এই শীর্ষ নেতা। তিনি আরো বলেন, তাদের লক্ষ্যই হচ্ছে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করা। সেই লক্ষ্যেই তারা চলছে।এ সময় বিএনপিতে এক-এগারোর সংস্কারপন্থী নেতাদের ফেরানোর বিষয়ে জানতে চাইলে দলের মহাসচিব বলেন, যারা দলের বাইরে ও নিষ্ক্রিয় ছিল, তাদের ভূমিকা পালন করার জন্যই সক্রিয় করা হচ্ছে দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী।বিরোধীদের আহ্বানে সাড়া না দিয়ে সরকার গতবারের মতো এবারও একতরফা নির্বাচনের পাঁয়তারা করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, তারা (সরকার) নির্বাচনটা করতে চায় একতরফাভাবে। বিরোধী দলগুলো যেন নির্বাচনে না আসে এবং তারা একা একাই ২০১৪ সালের মতো একটা নির্বাচনের মাধ্যমে আবার ক্ষমতায় যেতে চায়।
সরকারকে হুঁশিয়ার করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণ কখনোই এটা মেনে নেবে না এবং গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করার জন্য, জনগণের অধিকারকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার জন্য নিশ্চয়ই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে তারা বিজয় অর্জন করবে।বিএনপি সংসদ ভেঙে, খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে এলেও তাতে সাড়া নেই ক্ষমতাসীদের। তাই সরকারকে দাবি পূরণে বাধ্য করার লক্ষ্যে কামাল হোসেন, আ স ম রব ও মাহমুদুর রহমান মান্নার সঙ্গে মিলে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নামে নতুন জোট গঠন করেছে তারা।

সরকারের সমালোচনা করে ফখরুল বলেন, আজকে শুধু বিএনপি নেতৃবৃন্দ নয়, যারা গণতন্ত্রের পক্ষে কথা বলেছেন তাদেরও কারারুদ্ধ করেছে। গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় প্রবক্তা, বাংলাদেশে যার অবদান সবচেয়ে বেশি তাকে কারারুদ্ধ করেছে। দেশের সকল গণতান্ত্রিক কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দিচ্ছে এবং কারাগারে বন্দি করেছে।তিনি বলেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে গণতান্ত্রিক শক্তিগুলো আরও বেশি ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে। সেই সঙ্গে যারা বাইরে ছিল, নিষ্ক্রিয় ছিল, তাদের সকলকে সক্রিয় করা হয়েছে দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী।জিয়ার কবরে ফুল দেওয়া ও মোনাজাতে ফখরুলের সঙ্গে ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, সিনিয়র সহসভাপতি মোরতাজুল করীম বাদরু, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন প্রমুখ।