যুক্তরাষ্ট্র সাংবাদিক জামাল খাশুগজি হত্যাকাণ্ডের তদন্ত গুরুত্বের সঙ্গে করছে না অভিযোগ তুলে তার বাগদত্তা হাতিস চেঙ্গিস হোয়াইট হাউজের আমন্ত্রণ ফিরিয়ে দিয়েছেন।

তুরস্কের একটি টেলিভিশনে শুক্রবার দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে হাতিস বলেন, খাশুগজি হত্যাকাণ্ড নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের দৃষ্টিভঙ্গি প্রভাবিত করতে তাকে এ আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। চোখভরা পানি নিয়ে তিনি আরও বলেন, সৌদি কর্তৃপক্ষের এভাবে খাশুগজিকে হত্যা পরিকল্পনার বিষয়টি যদি তিনি ঘুণাক্ষরেও টের পেতেন তবে তাকে কিছুতেই কনসুলেটের ভেতরে প্রবেশ করতে দিতেন না।আমি এই নিষ্ঠুর ষড়যন্ত্রের পেছনে থাকা সবচেয়ে শীর্ষ পর্যায়ের ব্যক্তি থেকে শুরু করে সবচেয়ে নিম্ন পর্যায়ের ব্যক্তির শাস্তি চাই। সৌদি আরবের পক্ষ থেকে কেউ তার সঙ্গে যোগাযোগ করেনি বলেও জানান তিনি।বিবিসি জানায়, খাশুগজির মৃতদেহ এখনও সনাক্ত হয়নি।হাতিসকে বিয়ে করতে নিজের আগের বিয়ের তালাকের নথিপত্র সংগ্রহে গত ২ অক্টোবর ইস্তাম্বুলে সৌদি কনসুলেটে গিয়েছিলেন খাশুগজি। কনসুলেট ভবনে তাকে হত্যা করা হয়।শুরুতে খাশুগজিকে হত্যার অভিযোগ অস্বীকার করলেও পরে সৌদি আরব তা স্বীকার করে।

তবে এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সৌদি আরবের ক্ষমতাসীন রাজপরিবারের কোনো হাত নেই বলেও দাবি রিয়াদের।যুক্তরাষ্ট্রের দৈনিক ওয়াশিংটন পোস্টের কলামনিস্ট খাশুগজি সম্প্রতি তার কয়েকটি লেখায় সৌদি আরবের চলমান রাজতন্ত্র, বিশেষ করে ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সমাজ সংস্কারমূলক কিছু উদ্যোগের সমালোচনা করেছেন।তুরস্কের অভিযোগ, বর্তমান যুবরাজের নির্দেশেই তার লোকজন খাশুগজিকে হত্যা করেছে।রাজপরিবারের সদস্যদের জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করলেও খাশুগজি হত্যাকাণ্ড পূর্বপরিকল্পিত বলে বর্ণনা করেছেন সৌদি পাবলিক প্রসিকিউটর।যদিও সৌদি আরবের এ ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট নন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।খাশুগজি হত্যাকাণ্ড নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র রিয়াদের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারে বলে যে ধারণা করা হচ্ছিল তা উড়িয়ে দিয়েছেন ট্রাম্প। বরং তিনি দুই দেশের বন্ধুত্বের উপর গুরুত্বারোপ করেন।তিনি বলেন, সম্ভবত ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান এ হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে কিছু জানতেন না। কে খাশুগজিকে হত্যার নির্দেশ দিয়েছে তা রিয়াদকে স্বীকার করে নেওয়ার এবং মৃতদেহ কোথায় তা বের করার দাবি জানিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোয়ান। এদিকে বৃহস্পতিবার খাশুগজির বড় ছেলে সালাহ পরিবার নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র পাড়ি জমিয়েছেন। বাবার সমালোচনামূলক লেখালেখির কারণে গত কয়েক মাস ধরে সৌদি কর্তৃপক্ষ তার ভ্রমণের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে রেখেছিল। সালহ সৌদি আরব-যুক্তরাষ্ট্রের দ্বৈত নাগরিক।