বাংলাদেশে নিজের জন্য হুমকি আছে স্বীকার করেও দ্রুত দেশে ফিরতে চাচ্ছেন বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন আহমেদ। ভারতে অনুপ্রবেশের মামলায় স্থানীয় এক আদালতে বেকসুর খালাস পাওয়ার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে নিজের এমন অবস্থানের কথা জানান তিনি। দ্য শিলং টাইমস এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে আনা অনুপ্রবেশের অভিযোগ শুক্রবার (২৬ অক্টোবর) নাকচ করে দেন ভারতের মেঘালয় রাজ্যের রাজধানী শিলংয়ের প্রথম শ্রেণির জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট। একইসঙ্গে তাকে দ্রুত বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তনেরও নির্দেশ দেন আদালত। এর মধ্য দিয়ে ভারতে প্রায় তিন বছরের বিচার প্রক্রিয়া শেষে মুক্ত হলেন সালাউদ্দিন আহমদ। আদালতের রায়ের মধ্য দিয়ে প্রতীয়মান হলো, ভারতে সালাউদ্দিনের প্রবেশ বেআইনি ছিল না।রায়ের পর সাংবাদিকদের সালাউদ্দিন বলেন, আদালত আমাকে খালাস দিয়ে ন্যায়বিচার সম্পন্ন করায় আমি আনন্দিত। তারা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িতদের আমার যত দ্রুত সম্ভব দেশে ফেরার ব্যাপারে নির্দেশনা দিয়েছেন। আমি ন্যায়বিচার পেয়েছি। দ্রুত দেশে ফিরতে চাই।

তৃতীয় কোনও দেশে আশ্রয় নিতে চান কিনা এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের সাবেক এ প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমি কখনও এটা বলিনি যে আমি তৃতীয় কোনও দেশে যেতে চাই। আমি দ্রুত আমার নিজ দেশে ফেরার অপেক্ষায় রয়েছি।বাংলাদেশের আগামী সাধারণ নির্বাচনে অংশ নেবেন কি-না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে ইতিবাচক মনোভাবের কথা জানান সালাউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, যথাসময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে তিনি এতে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ব্যাপারে আশাবাদী।বাংলাদেশ সরকার তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আনতে পারে এমন আশঙ্কার কথা জানিয়ে সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, সব ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তিনি প্রস্তুত। তিনি বলেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্র কার্যকর নেই এবং রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় সন্ত্রাস চলছে সেখানে।তার ভাষায়, বর্তমান সরকার যথার্থভাবে নির্বাচিত হয়নি। ২০১৪ সালের নির্বাচনে মাত্র পাঁচ শতাংশ ভোট পড়েছে এবং সরকার বলছে, তারা নির্বাচিত।

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের মার্চে ঢাকার উত্তরা থেকে নিখোঁজ হওয়ার প্রায় দুই মাস পর মে মাসে ভারতে মেঘালয়ের রাজধানী শিলংয়ের একটি রাস্তায় উদভ্রান্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় সালাউদ্দিন আহমেদকে। তবে কে বা কারা তাকে ওখানে নিয়ে এসেছিল বা কীভাবে তিনি ঢাকা থেকে শিলংয়ে এসে উপস্থিত হলেন, সে ব্যাপারে সালাউদ্দিন আহমেদ কিছুই জানাতে পারেননি। তবে পরিবারের অভিযোগ ছিল, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাকে উত্তরার বাসা থেকে তুলে নিয়ে গেছে।ভারতে অনুপ্রবেশের অভিযোগে ২০১৫ সালের মার্চে বিএনপির এই নেতার বিরুদ্ধে মামলা করে মেঘালয় পুলিশ। সিটি থানায় দায়ের করা ওই মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয় তাকে। তবে শারীরিক অসুস্থতার কারণে বিচারক তাকে শর্তসাপেক্ষে জামিন দেন। জামিনের প্রধান শর্তই ছিল শিলংয়ের বাইরে যাওয়া চলবে না। আর সে কারণেই সালাউদ্দিন আহমেদ আপাতত সেখানেই একটি গেস্ট হাউস ভাড়া করে আছেন। অসুস্থতার জন্য তার চিকিৎসাও চলছে ওই শহরেই। মাঝে মাঝে বাংলাদেশ থেকে স্ত্রী-সন্তান ও বন্ধুরা গিয়ে সেখানে দেখা করে যান। সালাউদ্দিনের পক্ষে তার মামলা পরিচালনা করেন সিনিয়র আইনজীবী এস পি মোহন্ত। আইনজীবী এ কে আগরওয়াল তাকে সহযোগিতা করেন।