গাজীপুরে যুবলীগের নেতা মোতালেব হোসেনকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা এবং তার বাবাকে আহত করার ঘটনায় মঙ্গলবার থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। পূর্ব বিরোধের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে। এঘটনায় জড়িত কাউকে মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। এদিকে এ ঘটনায় এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

এ ব্যাপারে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশে (জিএমপি) সদর থানার ওসি সমীর চন্দ্র সুত্রধর জানান, মঙ্গলবার নিহতের বাবা মোফাজ্জল হোসেন ওরফে মোফা বাদী হয়ে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সদর থানায় এ মামলা দায়ের করেন। মামলায় ফাইজুলকে প্রধান করে ৮জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও ৭/৮জনকে আসামী করা হয়েছে। নিহতের পিতা মোফাজ্জল হোসেন মামলার এজাহারে উল্লেখ করেন, অনেক আগে থেকে জায়গা সম্পত্তির বিষয়সহ বিভিন্ন বিষয়াদি নিয়ে আবদুল মোতালের সঙ্গে আসামীদের বিরোধ ও শত্রুতা চলে আসছিল। এর জেরে তারা বিভিন্ন মোতালেবকে খুন করার হুমকীও দিয়ে আসছিলো। সোমবার সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে আসামী জহিরুল ইসলাম মোবাইল ফোনে মোতালেবকে বাড়ি থেকে ডেকে পার্শ্ববর্তী মজিবুর মেম্বারের পরিত্যক্ত বাড়ির পুকুর পাড়ে নিয়ে যায়। মোতালেব সেখানে গেলে আসামীরা ছেন, রামদা, চাপাতি, ছোরা, হকিস্টিক ও লোহার রডসহ ইত্যাদি অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়ে তাকে হত্যা করে। এসময় আর্ত চিৎকার শুনে ছেলেকে বাঁচাতে এগিয়ে গেলে সন্ত্রাসীরা মোতালেবের বাবা মোফাজ্জলকেও এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করে। এঘটনায় জড়িত কাউকে মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। তবে আসামীদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান চলছে। আশাকরি শীঘ্রই তাদের গ্রেফতার করা সম্ভব হবে।

গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ২৯নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শাহজাহান মিয়া সাজু ও স্থানীয়রা জানান, নিহত মোতালেব হোসেন (২৬) গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ছোট দেওড়া এলাকার মোফাজ্জল হোসেন ওরফে মোফা’র ছেলে এবং গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ২৯ নং ওয়ার্ডের যুবলীগের একাংশের সভাপতি।

তারা আরো জানান, পূর্ব বিরোধের জেরে সোমবার সকালে যুবলীগের নেতা মোতালেব হোসেনকে (২৬) স্থানীয় যুবদল কর্মী জহির মোবাইল ফোনে ছোট দেওড়া এলাকায় বাড়ি থেকে ডেকে পার্শ্ববর্তী মজিবুর মেম্বারের পরিত্যক্ত বাড়ির পুকুর পাড়ে নিয়ে গেলে খুনের এ ঘটনা ঘটে।

খুনের এ ঘটনার দুইদিন আগে শনিবার সন্ধ্যায় মোতালেব হোসেন স্বপন লস্করের ভোড়া এলাকার বাড়িতে হামলা চালিয়ে বাড়ির লোকজনকে মারধার করে এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপায়। এতে স্বপনের বোন শাবানা ও ভাগ্নে সাজেনসহ কয়েকজন আহত হয়। হামলার এ ঘটনায় মোতালেবকে প্রধান আসামী করে আরো কয়েকজনের বিরুদ্ধে গাজীপুর সদর থানায় মামলা দায়ের করা হয়। অপরদিকে স্বপন লস্করের ছোটভাই রিপন লস্করের বিরুদ্ধে গত কয়েকদিন আগে ভোড়া এলাকার বাদলের বাসায় ডাকাতি করার অভিযোগ রয়েছে। দু’পক্ষের বিরোধের জেরে পাল্টাপাল্টি হামলা, ভাংচুর এবং হতাহতের ঘটনায় এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। অযথা হয়রানীর ভয়ে ইতোমধ্যে অনেকেই এলাকা ছেড়েছেন।