তুরস্ক সরকারের পক্ষ হতে জামাল খাসোগির হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে এই প্রথম কোনো অফিসিয়াল বিবৃতি দেওয়া হলো। যেখানে খাসোগি হত্যার বিস্তারিত প্রকাশ করা হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটের ভেতরে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে সৌদি সাংবাদিক জামাল খাসোগিকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। এরপর পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী মরদেহ কেটে টুকরো টুকরো করে সরিয়ে ফেলা হয়। বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। সৌদি আরবের প্রধান কৌঁসুলি শেখ সৌদ আল-মোজেব সম্প্রতি খাসোগি হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে কথা বলতে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে যান। তার তুরস্ক ছাড়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে এসব তথ্য প্রকাশ করল তুর্কি প্রধান কৌঁসলি ইরফান ফিদানের দফতর।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, তুরস্ক খোলা মনে সৌদি প্রধান কৌঁসুলির সঙ্গে বৈঠকে বসে। যাতে আসল সত্য সবার সামনে আসে। কিন্তু বৈঠকে কোনো সুনির্দিষ্ট ফল পাওয়া যায়নি।  এদিকে তুরস্ক সফরে যাওয়ার আগে সৌদির প্রধান কৌঁসুলি স্বীকার করেন, পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী খাসোগিকে সৌদি কনস্যুলেটের ভেতরে হত্যা করা হয়েছে। এ হত্যাকাণ্ডের তদন্তে তুরস্ককে সহযোগিতা করতেই তার এই সফর। এরই মধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন মহল থেকে খাসোগির মরদেহ হস্তান্তরের দাবি উঠেছে। এদিকে দাফন করার জন্য তার পরিবারের সদস্য ও বন্ধুরা তার মরদেহ চাইছেন।

গত ২ অক্টোবর সৌদি আরবের সাংবাদিক জামাল খাসোগি তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটের ভেতর থেকে নিখোঁজ হন। তুরস্কের দাবি ছিল, খাসোগিকে কনস্যুলেটের ভেতর হত্যা করে তার মরদেহ সরিয়ে ফেলা হয়েছে। যদিও সৌদি আরব তখন বলেছিল, খাসোগি সম্পর্কে তুরস্ক যে দাবি করেছে তা মিথ্যা।

এরপর ২০ অক্টোবর সকালে সৌদির জেনারেল প্রসিকিউটর নিশ্চিত করেন সাংবাদিক জামাল খাসোগিকে হত্যা করা হয়েছে। দেশটির রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত টেলিভিশন ‘প্রাথমিক তদন্তের’ বরাত দিয়ে জানিয়েছিল, তুরস্কের সৌদি কনস্যুলেটের ভেতরে ‘এক সংঘর্ষে’ খাসোগি নিহত হয়েছেন।

সৌদি রাজতন্ত্রের সমালোচক খাসোগি ২০১৭ সাল থেকে ওয়াশিংটনে স্বেচ্ছা-নির্বাসিত জীবন কাটাচ্ছিলেন। বিয়ের জন্য প্রয়োজনীয় নথিপত্র জোগাড়ে তিনি বাগদত্তাকে বাইরে রেখে ইস্তাম্বুলের কনস্যুলেটে প্রবেশ করেন। এরপর থেকেই তার খোঁজ নেই বলে দাবি করেছিল তার বাগদত্তা হেটিস চেঙ্গিজ।