প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা যুদ্ধাপরাধীদের সাজা দিয়েছি এবং সাজা কার্যকর করেছি। তারা আবার ক্ষমতায় আসুক, সেটা বাংলাদেশের জনগণ চায় না এবং আমরাও চাই না। যারা স্বাধীনতার চেতনায় বিশ্বাস করে, তারাও চাইবেন না যে যুদ্ধাপরাধীরা ক্ষমতায় আসুক। এখন সামনে নির্বাচন। আমরা চাই, দেশের যে উন্নয়ন আমরা করেছি, গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রেখে সেই উন্নয়নটাও যেন অব্যাহত থাকে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বাম গণতান্ত্রিক জোটের সঙ্গে সংলাপের সূচনা বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সংলাপের শুরুতে সবাইকে স্বাগত জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীনতার মাত্র সাড়ে ৩ বছরের মাথায় বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরবর্তী অবস্থা থেকে বাংলাদেশকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ফিরিয়ে আনাটাই ছিল আমাদের লক্ষ্য। সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল, দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নতি করা, সেটা আমরা করতে পেরেছি। তিনি বলেন, একাত্তরে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যেভাবে দেশের মানুষের ওপর অত্যাচার করেছে ঠিক একই কায়দায় ২০০১ সালে নির্বাচনের পর অত্যাচার-নির্যাতন করা হয়েছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর। খালেদা জিয়া ১২টা মামলা দিয়েছিল সরকারে এসে। আবার দেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার এসেও আরও ৫/৬ টি মামলা দেয় আমার বিরুদ্ধে। এক/এগারো সরকার আমাকে ইলেকশন না করার প্রস্তাব দিয়েছিল। বিনিময়ে একটি মর্যাদা দেয়ার প্রস্তাব দেয় তারা। কিন্তু আমি একটি কথা জোর দিয়ে বলেছি, নির্বাচন হবে। জনগণ যাকে চাইবে, সেই ক্ষমতায় আসবে।

তিনি আরও বলেন, ২০০১ সালে আমরা যেখানে বাংলাদেশ রেখে এসেছিলাম, সেখান থেকে বাংলাদেশ আবার পিছিয়ে যায়। ২০০৮ সালে যখন সরকার গঠন করি, তখন বিশ্বমন্দা ছিল। এর মধ্যদিয়ে আমরা এগিয়ে যাই। ২০১৩ সাল থেকেই নির্বাচন ঠেকানোর নামে অগ্নিসংযোগসহ নানা নাশকতা করা শুরু করে। সেটাও সামলে নিয়েছি। এর আগে, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের সংলাপের ধারাবাহিকতায় সংলাপে বসতে আগ্রহ জানায় বাম গণতান্ত্রিক জোটও। পরে ৪ নভেম্বর আওয়ামী লীগের উপদপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া জানান, মঙ্গলবার এই জোটের সঙ্গে সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে গণভবনে।

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সংলাপে আট দলের সমন্বয়ে গঠিত বাম গণতান্ত্রিক জোটের ১৬ নেতা অংশ নেন। তারা হলেন- বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, সাধারণ সম্পাদক মো. শাহ আলম, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বজলুর রশিদ ফিরোজ, বাংলাদেশ বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, পলিটব্যুরো সদস্য হায়দার আকবর খান রনো, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় পরিচালনা কমিটির সদস্য শুভ্রাংশু চক্রবর্তী, আলমগীর হোসেন দুলাল, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, রাজনৈতিক পরিষদ সদস্য ফিরোজ আহমেদ, বাংলাদেশ ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন নান্নু, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মমিনুর রহমান বিশাল, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আহ্বায়ক হামিদুল হক, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রণজিৎ কুমার।