বিএনপি এবং দলটির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের যেসব নেতাকর্মীর নামে মামলা রয়েছে তাদের নামের তালিকা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে জমা দিয়েছে বিএনপি। বুধবার (৭ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী আব্দুল হামিদের কাছে একটি আংশিক তালিকা জমা দেয় বিএনপির চার সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল।

এদিকে, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সংলাপে বসার পর মামলার একটি কপিও আওয়ামীল সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের হাতে হস্তান্তর করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আংশিক ওই নামের তালিকায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের স্বাক্ষর রয়েছে। বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইং সদস্য শায়রুল কবির খান বিষয়টি নিশ্চিত করেন ।

চার সদস্যেও প্রতিনিধি দলে ছিলেন বিএনপির সহ-দফতর সম্পাদক তাইজুল ইসলাম টিটু, আইনজীবী অ্যাডভোকেট জিয়াউদ্দীন জিয়া, শরিফুল ইসলাম লিটন ও বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইং সদস্য শামসুদ্দিন দিদার।মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, গত ১ নভেম্বর জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে আলোচনার সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে করা ডায়েরি ও মামলার তালিকা জমা দেওয়ার জন্য বলেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপি এবং দলটির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার আংশিক তালিকা পাঠানো হলো।

চিঠির বক্তব্য এখানে হুবহু তুলে ধরা হলো:শুভেচ্ছা নেবেন। গত কয়েক বছর ধরে বিএনপির জাতীয় নেতারাসহ দেশব্যাপী জেলা, মহানগর, উপজেলা, থানা এমনকি ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধেও ধারাবাহিকভাবে হাজার হাজার মিথ্যা, উদ্ভট, গায়েবি ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা দায়ের করা হচ্ছে, যা গতকাল (মঙ্গলবার, ৬ নভেম্বর ) পর্যন্ত অব্যাহত আছে। গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে দেশব্যাপী আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যাপক হারে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও গায়েবি মামলা দিয়ে গ্রেফতারের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠাচ্ছে এবং রিমান্ডে নিয়ে অকথ্য নির্যাতন করছে। এ ধরনের ন্যক্কারজনক ও অমানবিক ঘটনা নিঃসন্দেহে গভীর উদ্বেগজনক। ন্যূনতম কোনও সত্যতা কিংবা প্রমাণ না থাকলেও নেতাকর্মীদের এ ধরনের বানোয়াট ও হাস্যকর মামলায় প্রতিনিয়ত জড়ানো হচ্ছে। আশ্চর্য হলেও সত্যি, বিএনপি ও অঙ্গ-সংগঠনের মৃত কিংবা দেশের বাইরে অবস্থানরত ব্যক্তিদেরও মিথ্যা মামলায় আসামি করা হয়েছে। গত ১ নভেম্বর সংলাপে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর আলোচনার সময় প্রধানমন্ত্রী বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে করা গায়েবি মামলার তালিকা পাঠানোর জন্য বলেন। এরই আলোকে দেশব্যাপী বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা উল্লেখপূর্বক আংশিক তালিকা পাঠানো হয়েছে। মামলার তালিকা মোতাবেক গায়েবি মিথ্যা মামলায় নেতাকর্মীদের গ্রেফতার ও হয়রানি বন্ধ করে এসব মামলা প্রত্যাহার করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। পরবর্তীতে এ সংক্রান্ত আরও তালিকা পাঠানো হবে।

বিএনপির সহ-দফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু বলেন, আমরা আংশিক তালিকা জমা দিয়েছি। জমা দেওয়া তালিকায় ১ হাজার ৪৬টি মামলা রয়েছে। এসব মামলায় বর্তমানে কারাগারে আছে ৫ হাজার ২৭৪ জন। এসব মামলায় নাম উল্লেখ করা আসামির সংখ্যা ৯৬ হাজার ৭০০ জন, অজ্ঞাত আসামির সংখ্যা ৩ লাখ ৭০ হাজার।