নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করে নির্ধারিত তারিখে তফসিল ঘোষণা, ইভিএম ব্যবহার বন্ধ করাসহ আট দফা দাবি জানিয়ে এসেছে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ নেতৃত্বাধীন সম্মিলিত জাতীয় জোট।বুধবার বেলা সোয়া ১১টা থেকে প্রায় এক ঘণ্টার এই বৈঠকে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদের সম্মিলিত জাতীয় জোটের ১৫ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা এবং অন্য নির্বাচন কমিশনাররাও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে জোটের মুখপাত্র জাতীয় পার্টির মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার সাংবাদিকদের বলেন, আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে এবং তারা আমাদের সাথে একমত পোষণ করেছেন। আমরা ৮ দফা নিয়ে বক্তব্য রেখেছি। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার তারিখ ৮ নভেম্বর করা হোক।

হাওলাদার বলেন, আমরা যতটুকু জানি তাতে আজকের পরে আর কোনো সংলাপ হবে না। সংলাপের অজুহাত দিয়ে তারিখ পেছানোর দাবির পক্ষে কোনো যুক্তি থাকতে পারে না।জাতীয় পার্টির মহাসচিব বলেন, নির্বাচনের মনোনয়ন ফরম সহজ করার সুপারিশ করেছেন তারা। তাছাড়া নির্বাচন কালো টাকার প্রভাবমুক্ত করা, নির্বাচনের সময় অস্ত্রের ব্যবহার বন্ধ করতে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া এবং ভোটের প্রচারে সংঘাত এড়াতে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ রয়েছে এর মধ্যে।

জাতীয় পার্টির আট দফায় নির্বাচনের সময় মোটর সাইকেল বা গাড়ির ব্যবহার সীমিত রাখা, একই আকারের পোস্টার ব্যবহার, সেনাবাহিনীকে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে রাখার কথাও রয়েছে।

এর আগে সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে জাতীয় পার্টির সংলাপ শেষে রুহুল আমিন হাওলাদার বলেছিলেন, তারা নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের দাবি জানালেও তাদের হাতে বিচারিক ক্ষমতা দেওয়ার পক্ষপাতি নন।

বুধবার ইসির সঙ্গে বৈঠকের পর হাওলাদার বলেন, নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের ক্ষেত্রে জনগণের মনে এখনও দ্বিধা-সন্দেহ রয়েছে। এটা আধুনিক ভোটিং পদ্ধতি হলেও সাধারণ ভোটাররা ইভিএম ব্যবহারে এখনও অভ্যস্ত নয়। এটা ব্যবহারের আগে আরো পরীক্ষা নিরীক্ষার প্রয়োজন আছে। বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের জন্য সময়ের প্রয়োজন হবে।মহাসচিব বলেন, নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে হবে এবং নিশ্চয়তা দিতে হবে যে তারা স্বাধীনভাবে একটি সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত করবে। সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন করতে হবে। তারা একমত পোষণ করেছেন অধিকাংশ বিষয়ের সঙ্গে।এরশাদের সম্মিলিত জাতীয় জোটের ১৫ সদস্যের প্রতিনিধি দল বুধবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে নির্বাচন ভবনে এলে মিনিট বিশেক পর বৈঠক শুরু হয়।প্রতিনিধি দলে এরশাদের সঙ্গে ছিলেন জাতীয় পার্টির রুহুল আমিন হাওলাদার, আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মুজিবুল হক চুন্নু, সৈয়দ আবুল হোসেন বাবলা, এম এ সাত্তার, জিয়া উদ্দিন আহমেদ বাবলু, দেলোয়ার হোসেন খান, সুনীল শুভ রায়, এস এম ফয়সল চিশতী, আব্দুস সবুর আদু ও শফিকুল ইসলাম সেন্টু।

এছাড়া জোটের শরিক নেতাদের মধ্যে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশের মহাসচিব মাহফুজুল হক, জাতীয় ইসলামী মহাজোটের আবু নাসের ওয়াহেদ ফারুক, বাংলাদেশ ন্যাশনাল অ্যালায়েন্সের চেয়ারম্যান সেকেন্দার আলী মনি উপস্থিত ছিলেন বৈঠকে।