আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দলীয় মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু করেছে বিএনপি। সোমবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দীয় কার্যালয়ে বেগম খালেদা জিয়ার মনোনয়ন ফরম কেনার মধ্য দিয়ে এ কার্যক্রম শুরু হয়। প্রাথমিক অবস্থায় ৫ হাজার টাকা জমা দিয়ে মনোনয়ন ফরম কেনা হলেও জমা দেয়ার সময় অফেরতযোগ্য ২৫ হাজার টাকা জমা দিতে হবে জানায় কেন্দ্রীয় বিএনপি। এর আগে রোববার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিএনপিকে নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেয়ার ঘোষণা দেন জাতীয় ঐক্য ফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন। বিভিন্ন সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে জানা গেছে, নওগাঁ-০৩ আসনে ছেলে ও মায়ের ও নওগাঁ-০৬ আসনে ভাইয়ের বিপক্ষে ভাইয়ের প্রার্থী হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
নওগাঁ-০৩ আসনে বিএনপির মনোনয়ন চেয়ে ফরম সংগ্রহ করেছেন জাতীয় সংসদের সাবেক ডেপুটি স্পীকার প্রয়াত আখতার হামিদ সিদ্দিকী নান্নুর ছেলে পারভেজ আরেফিন সিদ্দিকী জনি ও তার মা নাসরিন আরা সিদ্দিকী।
অপরদিকে এদিকে, নওগাঁ-০৬ (রাণীনগর-আত্রাই) আসনের ভাইয়ের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে ভাই মনোনয়ন ফরম কিনেছেন। এক সময় এই দুই উপজেলা সর্বহারা (লাল পতাকা) এবং বাংলাভাইয়ের অধ্যুষিত এলাকা হিসেবে পরিচিত ছিল। ১৯৯১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত সাবেক প্রতিমন্ত্রী মোঃ আলমগীর কবীর। ২০০৬ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের শেষের দিকে আলমগীর কবির এলডিপিতে যোগ দেন। এরপর আলমগীর কবীরের আপন ছোট ভাই বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আনোয়ার হোসেন বুলু বিএনপির হাল ধরতে রাণীনগর বালিকা বিদ্যালয়ে বিএনপির আয়োজিত এক সভায় যোগ দেন। এ সময় বিএনপি নেতাকর্মীর তোপের মুখে পরে আলমগীরের কুশপুত্তলিকা দাহ করেন। এরপর এই দুই উপজেলার বিএনপি নেতা কর্মীদের মধ্যে বিশ্বাস হয় যে, আলমগীর কবীরের বিরুদ্ধে আনোয়ার হোসেন বুলু। সে সময় থেকে প্রায় ১০ বছর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আনোয়ার হোসেন বুলু এই দুই উপজেলার বিএনপির নেতা কর্মীদের অভিভাবক হিসেবে শক্ত হাতে দলের হাল ধরেছিলেন। এ লক্ষ্যে এলাকায় ব্যাপক গণসংযোগ, প্রচার-প্রচরণা ও তৃণমূল নেতা কমীদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন। আলমগীর কবীর এলডিপিতে যোগদানের বছরই আবার পদত্যাগ করেন। এরপর দীর্ঘদিন তিনি কোন দলে যোগদান করেছিলেন না। কিন্তু হঠাৎ করেই আলমগীর কবীর পুনরায় বিএনপিতে ফিরে আশার পর এলাকায় গনসংযোগে গেলে বিএনপি’র নেতারা ধিক্কার জানায় এবং থানা থেকে ওয়ার্ড পর্যন্ত দলের দায়িত্বশীল কোন নেতা-কর্মীরা তার সঙ্গে গনসংযোগে অংশ গ্রহণ করেনি। তারপর বিএনপির মনোনয়ন ফরমও সংগ্রহ করেছেন। কে পাবে এ আসনের মনোনয়ন টিকিট? এ নিয়ে এলাকায় চলছে ব্যাপক জল্পনা-কল্পনা। বিএনপি নেতা-কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। কে পাবেন বিএনপি থেকে এ আসনের মনোনয়ন পত্র তা দেখার অপেক্ষায় রয়েছে এলাকাবাসী।