কক্সবাজার, মুন্সীগঞ্জ ও সিলেটে একরাতে কথিত বন্দুকযুদ্ধে প্রাণ গেছে চারজনের। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, এদের মধ্যে তিনজন মাদক কারবারি এবং একজন ডাকাত। বুধবার ভোররাতে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলা থেকে দুজনের এবং মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ী ও সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলা থেকে আরো দু’জনের লাশ উদ্ধারের তথ্য দিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।কক্সবাজার ভোররাত ৩টার দিকে টেকনাফ উপজেলার সাবরাং কাটাবনিয়া মেরিন ড্রাইভ সড়কের ট্যুরিস্ট জোন সংলগ্ন বেড়িবাঁধ এলাকা থেকে দু’জনের লাশ উদ্ধার হয়।এরা হলেন- ১৯ মামলার আসামি নজির আহম্মদ (৪০) ও আব্দুল আলীম (৩৮)। পুলিশ দাবি করেছে, নজির ডাকাতদলের সদস্য আর আলীম মাদক কারবারি।

টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ দাবি করেন, পুলিশ আগে ডাকাত নজিরকে আটক করেছিল। পরে তাঁর দেওয়ার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, তাঁকে নিয়ে ভোররাতে ইয়াবা ও অস্ত্র উদ্ধারে যায় পুলিশ। এ সময় নজির ডাকাতের সহযোগীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি করে, আত্মরক্ষার্থে পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। প্রায় আধা ঘণ্টা বন্দুকযুদ্ধের পর একপর্যায়ে নজির ডাকাতের সহযোগীরা পিছু হটে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নজির ডাকাত ও ইয়াবা কারবারি আব্দুল আলিমকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে।এ সময় পুলিশের চার সদস্য আহত হয়। গুলিবিদ্ধ দুজনকে টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনাস্থল থেকে চারটি দেশীয় তৈরি অস্ত্র, ২১টি গুলি ও ১০ হাজার ১৫০টি ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে।

ওসি আরো দাবি করেন, নজির ডাকাতের বিরুদ্ধে থানায় মানবপাচার, ডাকাতি, অস্ত্রসহ ১৯টি মামলা এবং আব্দুল আলিমের বিরুদ্ধে মাদকসহ চারটি মামলা রয়েছে। দুজনের মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।মুন্সীগঞ্জ বুধবার ভোর ৪টার দিকে মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ী উপজেলার পূর্ব সোনারং গ্রামের আলম শেখের বালুর মাঠ এলাকায় একটি ‘বন্দুকযুদ্ধের’ ঘটনা ঘটে বলে দাবি করেছে র‌্যাব। নিহত ব্যক্তির নাম আবুল হোসেন (৪৭)। তিনি উপজেলার কুণ্ডেরবাজার এলাকার বাসিন্দা। র‌্যাব-১১ নারায়ণগঞ্জের উপ-পরিচালক মেজর আশিক বিল্লাহ দাবি করেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব ভোরে টঙ্গিবাড়ীর পূর্ব সোনারং গ্রামে অভিযানে যায়। সোনারং মেইন রোডের পাশে আবুল হোসেন তাঁর বাহিনীর চার-পাঁচজন সদস্য নিয়ে সভা করছিলেন।তারা র‌্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে গুলি করে। তখন র‌্যাবও পাল্টা গুলি চালায়। পরে সেখান থেকে আবুল হোসেনক গুলিবিদ্ধ অবস্থায় টঙ্গিবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। মরদেহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রাখা হয়েছে।র‌্যাব উপপরিচালক আরো দাবি করেন, এতে তাদের দুই সদস্য আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে একটি পিস্তল, তিনটি গুলি, একটি ম্যাগাজিন, ৫০০টি ইয়াবা, নগদ টাকা ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। আবুল হোসেনের বিরুদ্ধে ১৬টি মামলা আছে, যার বেশিরভাগ মাদক আইনে।অপরদিকে জেলার দক্ষিণ সুরমা উপজেলার মোগলাবাজার থানার শ্রীরামপুর এলাকায় কথিত বন্দুকযুদ্ধের ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত গভীর রাতে।নিহত ব্যক্তির নাম শহীদ মিয়া। তিনি তালিকাভূক্ত শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী ছিলেন বলে জানায় র‌্যাব।র‌্যাব-৯ এর গণমাধ্যম শাখার কর্মকর্তা সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মনিরুজ্জামান জনান, মাদক বেচাকেনার খবর পেয়ে র‌্যাব শ্রীরামপুর এলাকায় অভিযানে যায়। র‌্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদক ব্যবসায়ীরা গুলি করে। তখন র‌্যাবও পাল্টা গুলি চালায়।পরে মাদক ব্যবসায়ীরা পিছু হটে। পরে ঘটনাস্থল থেকে শহীদ নামের একজনের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া ঘটনাস্থল থকে একটি বিদেশি পিস্তল ও বিপুল সংখ্যক ইয়াবা উদ্ধার করা হয়’, যোগ করেন র‌্যাব কর্মকর্তা।