জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে দূষণ বৃদ্ধিকারী উন্নত রাষ্ট্রগুলো থেকে অর্থ আদায়ে বাংলাদেশের দর কষাকষি ও সমঝোতা দক্ষতার অভাব রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) এর নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। তিনি বলেন, ক্ষতিপূরণ বাবদ প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের উন্নত দেশগুলো দূষণকারী কর্তৃক পরিশোধযোগ্য’ নীতি অনুসরণের প্রতিশ্র“তি প্রদান করে। তবে সবুজ জলবায়ু তহবিল (জিসিএফ)- এর আওতায় থাকা সাতটি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক মহলে অর্থ আদায়ের জন্য ‘নেগোসিয়েশন স্কিল’-এর অভাব রয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২২ নভেম্বর) টিআইবি’র মেঘমালা সম্মেলন কেন্দ্রে এসব কথা বলেন তিনি। পোল্যান্ডের কাতোভিতসেতে আসন্ন কপ-২৪ সম্মেলনে প্যারিস চুক্তি বাস্তবায়নে স্বচ্ছতা কাঠামো সম্বলিত চূড়ান্ত রূপরেখা প্রণয়ন ও প্রতিশ্র“তি জলবায়ু অর্থায়নে দৃশ্যমান অগ্রগতি নিশ্চিতের দাবিতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে টিআইবি।ইফতেখারুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত ৩টি প্রকল্পের জন্য জিসিএফ থেকে মাত্র ৮৫ মিলিয়ন ডলার তহবিল অনুমোদন পেয়েছে। ২০১৩ সাল হতে শিল্পোন্নত দেশসমূহ বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন রেজিলিয়েন্স তহবিল (বিসিসিআরেএফ) এ নতুন কোনও অর্থায়ন করেনি। অথচ শুধুমাত্র অভিযোজনের জন্যই বাংলাদেশের প্রতিবছর কমপক্ষে ২.৫ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন।এ অবস্থায় উন্নত দেশগুলোর কাছ থেকে অর্থ আদায়ে বাংলাদেশের সমঝোতা দক্ষতার অভাব রয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। তিনি বলেন, উন্নত বিশ্বের কাছ থেকে অর্থ আদায়ে নেগোসিয়েশন স্কিল ও টেকনিক্যাল স্কিল প্রয়োজন। মোটাদাগে আমাদের সেটা কম রয়েছে। তবে আমরা আগের থেকে ভালো করছি। আমাদের স্কিলটা আরো বাড়ানো প্রয়োজন।

তিনি অভিযোগ করেন, জলবায়ু সংক্রান্ত যেসব কর্মকর্তা দায়িত্বে থাকেন বা জানেন, তারা সবসময় একই জায়গায় থাকেন না। ফলে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব যারা করেন, তারা বিষয়টা সম্পর্কে ভালো জানেন না বা দক্ষ নন। আবার কারো কারো মাঝে সম্মেলন উপলক্ষে ঘুরে বেড়ানো, বিদেশ ভ্রমণ উপভোগ করার মতো বিষয়গুলো দেখা যায়।তিনি বলেন, সরকারি- বেসরকারি উভয়পক্ষের সদস্যরা সম্মেলনে অংশ নেন। সেখানে দুই পক্ষকে একে অপরের সহযোগী হিসেবে কাজ করতে হবে। অন্যান্য দেশগুলো এভাবেই কাজ করে। উল্টো আমাদের এখানে বেসরকারি পর্যায়ে যারা যান, তাদেরকে প্রতিপক্ষ ভাবা হয়। এটা ভাবলে হবে না। সম্মেলনে বেসরকারি প্রতিনিধিরা যান সহযোগিতার জন্য।জলবায়ু সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা ও দর কষাকষির ক্ষেত্রে বেসরকারি প্রতিনিধিরা তুলনামূলক বেশি দক্ষ বলে জানান ড. ইফতেখারুজ্জামান।

টিআইবির পক্ষ থেকে জিসিএফ থেকে প্রয়োজনীয় তহবিল পাবার জন্য জাতীয় বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান (এনআইই) হিসেবে বাংলাদেশের ইনফ্রাস্কট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি (ইডকল) এবং পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনকে (পিকেএসএফ) সক্রিয় হবার আহ্বান জানানো হয়।