যশোরের বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী আবু বকর আবু হত্যায় সরকারকে দায়ী করেছে বিএনপি। দলটি বলছে, আবু বকরকে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় হত্যা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। রিজভী বলেন, দলের মনোনয়ন ফরম জমা দিয়ে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সাক্ষাৎকার দেয়ার জন্য ঢাকার একটি হোটেলে অবস্থান করছিলেন। যশোর জেলা বিএনপির সহসভাপতি ও চারবারের ইউপি চেয়ারম্যান আবু বকর।
অপহরণের শিকার হওয়া যশোরের বিএনপি নেতা আবু বকর আবুর লাশ মিলেছে রাজধানীর বুড়িগঙ্গা নদীতে।
নিহত আবু বকর আবু যশোর জেলা বিএনপির সহসভাপতি ও কেশবপুর উপজেলার মজিদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। মঙ্গলবার রাজধানীর বুড়িগঙ্গা নদী থেকে ঢাকার কেরানীগঞ্জ থানার পুলিশ অজ্ঞাত হিসেবে লাশটি উদ্ধার করে। বৃহস্পতিবার রাতে কেরানীগঞ্জ থানার ফেসবুক পেজে এ বিষয়টি দেখে আবু বকর আবুর লাশ সনাক্ত করেন তার ভাতিজা হুমায়ূন কবির। এর আগে রবিবার রাতে রাজধানীর পল্টন এলাকা থেকে তাকে অপহরণ করা হয়।
রিজভী অভিযোগ করে বলেন, গত রোববার তাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তুলে নিয়ে যাওয়ার পর কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না তার। বৃহস্পতিবার বুড়িগঙ্গা নদীতে তার লাশ পাওয়া গেছে। বর্তমান সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় এজেন্সির মাধ্যমে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। রিজভী বলেন, এলাকার একজন জনপ্রিয় নেতা ও জনপ্রতিনিধি আবু বকর আবুকে নির্মমভাবে হত্যা করার পর লাশ বুড়িগঙ্গায় ফেলে দেয় হত্যাকারীরা। কোটা সংস্কার আন্দোলনে এভাবেই একজন আন্দোলনকারীর লাশ ভেসে উঠেছিল বুড়িগঙ্গায়।
রিজভী বলেন, গোটা দেশ এখন মৃত্যু উপত্যকায় পরিণত হয়েছে। দেশব্যাপী প্রায় প্রতিদিনই বিএনপি নেতাকর্মীদেরকে গুম করা হচ্ছে। হত্যা করে লাশ নদী, খাল-বিল কিংবা রাস্তার ধারে ফেলে দেয়া হচ্ছে। আমি আবু বকর আবুর হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তীব্র ধিক্কার জানাচ্ছি।অবিলম্বে হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।
তিনি আরও বলেন, শাহবাগ থানার ২০নং ওয়ার্ড বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও ঢাকা মেডিকেল ইউনিট বিএনপির সভাপতি মো. আজিমকে বৃহস্পতিবার দুপুরে সাদা পোশাকধারী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা আটক করে নিয়ে গেলেও এখনো পর্যন্ত স্বীকার করছে না। সম্ভাব্য সব স্থানে খোঁজ নিলেও তার সন্ধান মেলেনি। আমি অবিলম্বে মো. আজিমকে জনসমক্ষে হাজির করার জোর দাবি জানাচ্ছি।
এছাড়া সূত্রাপুর থানা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি আব্দুস সাত্তার, ৪৩নং ওয়ার্ডের সিনিয়র সহসভাপতি কাউসার আহমেদ, সূত্রাপুর থানা বিএনপি নেতা মজিবুর রহমান আনু এবং শ্রমিক দল সূত্রাপুর থানা শাখার সহসভাপতি দেলোয়ার হোসেনকে গ্রেফতারের ঘটনায় নিন্দা জানান রিজভী। একই সঙ্গে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে তাদের অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তির জোর দাবি জানান বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব।