একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নির্দেশনা ছাড়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাউকে গ্রেপ্তার করছে না বলে দাবি করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি)কে এম নুরুল হুদা।শনিবার সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে জাতীয় নির্বাচন উপলক্ষে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের নির্বাচনী আচরণ বিধিমালা সংক্রান্ত ব্রিফিং শেষে সিইসি এ কথা জানান।নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের ব্রিফিংয়ের প্রথম দিন আজ। তিন দিনব্যাপী এই ব্রিফিং শেষ হবে আগামী সোমবার।ব্রিফিং শেষে সকালে সিইসি কে এম নুরুল হুদা সাংবাদিকদের বলেন, নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড আছে। আমাদের কথা পুলিশ মান্য করে। আমাদের কথার বাইরে গিয়ে বিনা কারণে কাউকে গ্রেপ্তার করে না। আইন মতো যেভাবে আমাদের যাওয়া দরকার, আমরা সেভাবে যাচ্ছি।

দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হচ্ছে, পুলিশকে আপনারা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, নিয়ন্ত্রণে আছে, সেদিনও আমরা পুলিশ সব পুলিশকে ডেকেছি। তারা আসছে না? আমাদের ইন্সট্রাকশন তারা নিয়েছে এবং আমাদের ইন্সট্রাকশনে তারা কাজ করবে, কথা দিয়েছে। এখন পর্যন্ত তারা সেটা করে যাচ্ছে।নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার-হয়রানি নিয়ে বিএনপির টানা অভিযোগের প্রেক্ষাপটে শনিবার নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের প্রশ্নে একথা বলেন নূরুল হুদা।

বিএনপিসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট অভিযোগ করে আসছে, পুলিশ বিরোধী নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার-হয়রানি থামায়নি, ফলে নির্বাচনে সবার সমান সুযোগ নিশ্চিত হচ্ছে না।সিইসি বলেন, নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ রয়েছে এবং আইনমতোই এগিয়ে যাচ্ছেন তারা।দলীয় সরকারের অধীনে ভোট হলেও স্থানীয় প্রশাসন ইসির নিয়ন্ত্রণে বলে দাবি করেছেন তিনি।

সিইসি বলেন, প্রশাসন ও পুলিশ আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। একটি বিশেষ সভা করে পুলিশকে নির্দেশনা দিয়েছি। তারা আমাদের কথা দিয়েছে এবং সে অনুযায়ী তারা কাজ করছে। এখানে সরকারের কোনো নির্দেশ নেই। নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয়ে আমাদের নির্দেশ মাঠে যায় এবং সেটাই প্রতিফলিত হয়।আগামী ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় একাদশ সংসদ নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারী নির্বাহী হাকিমদের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সামনে আসেন নূরুল হুদা।

নির্বাচন পরিচালনার জন্য প্রশাসনিক এই কর্মকর্তাদের সহায়তা নেয় ইসি। এদের নানা দায়িত্ব দেওয়া হয়।নির্বাচনের আচরণ বিধিমালা বিষয়ে এই হাকিমদের তিন দিনব্যাপী ব্রিফিংয়ের উদ্বোধন হয় শনিবার।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সিইসি নূরুল হুদা। ইসি সচিবালয়ের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার, মো. রফিকুল ইসলাম,কবিতা খানম ও শাহাদাত হোসেন চৌধুরী।স্বাগত বক্তব্য রাখেন নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক মোস্তফা ফারুক।

শনিবার ১৮টি জেলার নির্বাহী হাকিমরা অংশ নিয়েছে। ২৫ নভেম্বর ও ২৬ নভেম্বরও একই ধরনের অনুষ্ঠান হবে। রিটার্নিং কর্মকর্তা, সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা, পুলিশ প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে গণমাধ্যকর্মীরা উপস্থিত থেকে সংবাদ সংগ্রহ করেন। সাধারণত সিইসি উদ্বোধনী ভাষণ দেওয়ার পরই গণমাধ্যম প্রতিনিধিরা বেরিয়ে আসেন। কিন্তু শনিবার এর ব্যতিক্রম ঘটেছে।সিইসি বক্তব্য দেওয়া আগে হঠাৎ সাংবাদিকরা চলে যেতে পারেন বলে উপস্থাপক ঘোষণা দেন। এ নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়।পরে সিইসিকে সাংবাদিকরা জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, ব্রিফিংয়ের দুটি অংশ থাকে।একটি উদ্বোধনী অংশে গণমাধ্যম থাকতে পারে। পরবর্তীতে থাকতেও অসুবিধা নেই।