কিশোরগঞ্জ-১ (সদর- হোসেনপুর) আসনে ১৯৯৬ সাল থেকে টানা চারটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছেন বর্তমানে জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। দলের কেন্দ্র, তৃণমূল ও ভোটারদের তাঁর প্রতি আস্থা থাকায় ওই চারটি নির্বাচনে এই আসনে অন্য কেউ আওয়ামী লীগের মনোনয়নও চাননি।

এই আসনে সৈয়দ আশরাফের বিকল্প নেই এমনটাই মনে করেন আওয়ামী লীগের সকল পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা। তিনি অসুস্থ এমন খবরে তাঁর নির্বাচন করা নিয়ে অনিশ্চয়তায় এই আসনে দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী মোট ১১ জন। তবে তাঁর অনেকটা সুস্থ হওয়ার খবরে তাঁকেই প্রার্থী চান সবাই। কিশোরগঞ্জ-১ আসনে সৈয়দ আশরাফই শেষ পর্যন্ত প্রার্থী হচ্ছেন এমন খবরে নেতা-কর্মীদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে।

আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফ স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি (মুক্তিযুদ্ধকালে বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি) সৈয়দ নজরুল ইসলামের ছেলে। সৈয়দ নজরুল ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নিহত চার জাতীয় নেতার অন্যতম।আওয়ামী লীগের নেতারা বলেন, রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, দলের প্রতি অবিচল আনুগত্য, নির্মোহ জনঘনিষ্ঠতা সৈয়দ আশরাফের গ্রহণযোগ্যতা ও জনপ্রিয়তার কারণ। তিনি দলমত-নির্বিশেষে সবার কাছে সৎ ও সজ্জন ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত। এলাকার উন্নয়নও করেছেন যথেষ্ট।

কিশোরগঞ্জ পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার নাযমুন্নাহার মলী বলেন, সৈয়দ আশরাফ কোনো দলের নন, তিনি সবার।অসুস্থতাজনিত কারণে সৈয়দ আশরাফের নির্বাচন করা নিয়ে অনিশ্চয়তার গুঞ্জনে তিনি ছাড়া আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছেন ১০ জন। মনোনয়নপ্রত্যাশী অন্যদের মধ্যে রয়েছেন সৈয়দ আশরাফের দুই ভাই মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ শাফায়েতুল ইসলাম ও ড. সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম, চাচাতো ভাই কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল ইসলাম, কিশোরগঞ্জ সদর পৌরসভার মেয়র মাহমুদ পারভেজ, রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের মেজ ছেলে রাসেল আহমেদ।

৪ নভেম্বর কিশোরগঞ্জে জেলহত্যা দিবসের আলোচনা সভায় সৈয়দ আশরাফের ছোট ভাই মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ শাফায়েতুল ইসলাম বলেন, তাঁর ভাই আশরাফ গুরুতর অসুস্থ। এ অবস্থায় তাঁর রাজনীতিতে ফিরে আসার সম্ভাবনা ক্ষীণ। তিনি ভাইয়ের ছায়া হিসেবে নির্বাচনে প্রার্থী হতে এসেছেন।
তবে সৈয়দ আশফাকুল ইসলাম বলেন, ‘আশরাফ আগের চেয়ে অনেকটাই সুস্থ। তাই আমরা আশা করছি, তিনি আবার আমাদের মধ্যে ফিরে আসবেন এবং রাজনীতিতে সক্রিয় হবেন। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সূত্রেও জানা গেছে, এই আসনে সৈয়দ আশরাফই প্রার্থী থাকছেন।আরেক মনোনয়ন প্রত্যাশী মাহমুদ পারভেজ বলেন, সৈয়দ আশরাফের ভাইয়েরা এবং দলের অন্য আরও অনেকে মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন বলে তিনিও জমা দিয়েছেন। তবে তাঁদের সবারই প্রত্যাশা, সৈয়দ আশরাফই এই আসন থেকে নির্বাচন করবেন। সেটাই হবে সবার জন্য মঙ্গলজনক। এখানে সৈয়দ আশরাফের বিকল্প নেই। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কামরুল আহসান বলেন, আমরাও দলীয় সূত্রে জেনেছি সৈয়দ আশরাফই এই আসন থেকে প্রার্থী হচ্ছেন। বিষয়টি জানার পর দলের নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে। তাঁকে ছাড়া অন্য কাউকে মনোনয়ন দিলে দলে বিভেদ তৈরি হতো। এখানে সৈয়দ আশরাফই সবার আস্থাভাজন। তিনি আমাদের গর্ব।