সিঙ্গাপুরে অবস্থিত বাংলাদেশ হাই কমিশনের আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন বাংলাদেশের ১৫ জন নৃত্যশিল্পী। নৃত্যনাট্যটি নিদের্শনা দিয়েছেন গুণী নৃত্যশিল্পী শর্মিলা বন্দ্যোপাধ্যায়।চণ্ডালকন্যা প্রকৃতি ফুল চাইতেই তার স্পর্শ বাঁচিয়ে সবাই চলে গেল। দইওয়ালা এলো। সেও প্রকৃতিকে এড়িয়ে চলে গেল। কিন্তু এই শূদ্রাণির হাত থেকেই ঋষি আনন্দ জলপান করে জাতপাতের অভিশাপ থেকে মুক্তি দিলেন মানবকতাকে। ছন্দ, সুর ও নৃত্যে বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও অসাম্প্রদায়িক বৈশিষ্ট্যকে বিশ্বের সামনে তুলে ধরতে নৃত্যনন্দনের শিল্পীরা এবার সিঙ্গাপুরে পরিবেশন করলেন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নৃত্যনাট্য ‘চণ্ডালিকা’। গুণী নৃত্যশিল্পী শর্মিলা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিদের্শনায় এ নৃত্যনাট্যে অংশগ্রহণ করেছেন বাংলাদেশের ১৫ জন নৃত্যশিল্পী।

গত ১৬ নভেম্বর সিঙ্গাপুরে অবস্থিত বাংলাদেশ হাই কমিশনের আয়োজনে স্কুল অফ আর্টস সিঙ্গাপুর-এর কনসার্ট হলে পরিবেশিত হয় নৃত্যনাট্য চণ্ডালিকা। ধমীয় সংস্কার, বর্ণবিদ্বেষ ও জাত্যভিমানের স্বরুপ নিয়ে নৃত্যনাট্যটি রচনা করেছেন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।

বাংলাদেশ সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত হয় এ আয়োজন। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী কর্তৃক মনোনীত নৃত্যনন্দনের শিল্পীরা তাঁদের সাবলীল নাচ ও অভিনয়ের মাধ্যমে দর্শকদের ভূয়সী প্রশংসা লাভ করেন। এতে নির্দেশনার পাশাপাশি প্রকৃতি চরিত্রে রুপদান করেন নৃত্যশিল্পী শর্মিলা বন্দোপাধ্যায়। এছাড়া অভিনয় করেছেন নৃত্যশিল্পী প্রিয়াঙ্কা র‌্যাচেল প্যারিস, তপন, মেহরাজ তুষার, সুদেষ্ণা স্বয়ংপ্রভা তাথৈ, শফিকুল ইসলাম প্রমুখ।অনুষ্ঠানের শুরুতে সিঙ্গাপুরে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাই কমিশনার জনাব মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান আমন্ত্রিত অতিথিদের অনুষ্ঠানে স্বাগত জানান। তিনি তার শুভেচ্ছা বক্তব্যে বাংলাদেশে বিভিন্ন জাতি, গোষ্ঠী, সম্প্রদায়ের মানুষের সহাবস্থান এবং অসাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গির কথা উলে¬খ করেন। বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যই সবাইকে একসূত্রে প্রোথিত রেখেছে বলে তিনি উলে¬খ করেন।

নৃত্যনাট্যটি নিয়ে নির্দেশক শর্মিলা বন্দোপাধ্যায় বলেন, এই নৃত্যনাট্যটি শুধুমাত্র একটি আখ্যান নয়, এক অন্ত্যজ নারীর মানবতাকে মুক্তি দেওয়ারও গল্প। আমরা নৃত্যনন্দন পরিবার ভীষণভাবে গর্বিত দেশের বাইরে এ নৃত্যনাট্য প্রদর্শন করতে পেরে। শুধুমাত্র সেখানকার বাঙালী নয়, বিভিন্ন দেশের দর্শকরা নৃত্যনাট্য দেখেছেন এবং মঞ্চায়নের শেষে আমাদের প্রশংসা করেছেন। আমি মনে করি, এটা শুধু আমার অর্জন নয়, সমগ্র বাংলাদেশের একটি অর্জন। আমার অনুরোধ থাকবে, বিভিন্ন খণ্ড খন্ড নাচের বিপরীতে যেন এরকম নৃত্যনাট্যগুলোকে দেশের বাইরে প্রদর্শন করার সুযোগ করে দেয়া হয়, তাহলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরো বেশি উজ্জ্বল হবে।