গাজীপুরে শ্রমিক ছাটাইয়ের প্রতিবাদে এক পোশাক কারখানার শ্রমিকরা বৃহষ্পতিবার বিক্ষোভ ও কর্ম বিরতি করেছে। এসময় তারা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক প্রায় চার ঘন্টা অবরোধ ও অগ্নিসংযোগ করে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠিচার্জ করে ও টিয়ারসেল ছুড়ে।

পুলিশ ও শ্রমিকরা জানায়, গাজীপুর সদর উপজেলার ভবানীপুর এলাকার এন জেড গ্রুপের সি এ নীট ওয়্যার পোশাক কারখানার কয়েক শ্রমিককে গত কয়েকদিন ধরে পর্যায়ক্রমে ছাটাই করে কর্তৃপক্ষ। এতে শ্রমিকদের মাঝে অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ে। বৃহস্পতিবার সকালে কাজে যোগ দিতে কারখানায় আসে শ্রমিকরা। এসময় নিরাপত্তা কর্মীরা কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ৩০ শ্রমিককে কারখানায় প্রবেশ করতে বাধা দিয়ে তাদের পরিচয়পত্র জব্দ করে নেয়। এতে শ্রমিকরা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। একপর্যায়ে শ্রমিকরা ছাটাইয়ের প্রতিবাদে কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ শুরু করে। এক পর্যায়ে কারখানার পাশর্^বর্তী ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে টায়ার জ¦ালিয়ে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করতে থাকে। প্রায় চারঘন্টা অবরোধের কারণে মহা সড়কের উভয়দিকে যানবাহন আটকা পড়ে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে ও ৩ রাউন্ড টিয়ারসেল ছুড়ে। কিন্তু শ্রমিকরা অবরোধ প্রত্যাহার না করে তাদের আন্দোলন কর্মসূচি অব্যহত রাখে। একপর্যায়ে গাজীপুর পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার ঘটনাস্থলে পৌছে শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেন এবং চার শ্রমিকের পরিচয়পত্র ফিরিয়ে দিয়ে কাজে যোগদানের ব্যবস্থা করেন। এসময় তিনি আন্দোলনরত শ্রমিকদের দাবী নিয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষের আলোচনা করার আশ^াস দিলে শ্রমিকরা তাদের কর্মসূচি স্থগিত করে অবরোধ তুলে নিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

কারখানার লোডার আতিকুল ইসলাম জানান, আমাদের কারখানায় প্রায় সাড়ে তিনহাজার শ্রমিক কর্মরত আছে। কারখানার কোন নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থা নেই। পরিবহন সমস্যার কারণে দুর দুরান্ত হতে এসে কাজে যোগ দিতে পাঁচ দশ মিনিট দেরী হলে শ্রমিকদের কারখানায় প্রবেশ করতে দেয়া হয়না। আর বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই এ কারণে শ্রমিকদের ছাঁটাই করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে গাজীপুর পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার জানান, ছাঁটাইকৃত শ্রমিকদের চাকুরীতে পূনর্বহালের মাধ্যমে তাদের দাবী পুরণের আশ্বাস দেয়ায় তাঁরা মহাসড়ক থেকে চলে যায়, পরে শ্রমিকদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কারখানার তিন কর্মকর্তাকে আটক করা হয়।