বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও দলটির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান নজরুল ইসলাম খান ক্ষমতাসীন দলের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ করেছেন। একই সঙ্গে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ায় নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ একের পর এক ফাউল করছে। সরকার ও ইসি নিশ্চুপ ভূমিকা পালন করছে। নির্বাচন কমিশন সরকারের সহায়ক ভূমিকা পালন করছে। এভাবে চলতে থাকলে সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে নজরুল ইসলাম খান এসব অভিযোগ করেন।বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা নজরুল বলেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টসহ ২০-দলীয় জোট নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর থেকেই সরকারের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। নেতা-কর্মীদের মনোনয়নপত্র জমা দিতে পদে পদে বাধা দেওয়া হচ্ছে। ছোট থেকে বড় সবাইকে মামলায় আসামি করা হচ্ছে। অনেকেই নিখোঁজ হচ্ছে। এগুলো সুষ্ঠু নির্বাচনের অন্তরায়।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, ২০১৪ সালের মতো আরও একটি প্রহসনের নির্বাচন করতে সরকার গ্রেপ্তার-বাণিজ্য অব্যাহত রেখেছে। তিন মাস আগে মিথ্যা ও গায়েবি মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে থাকা অবস্থায় তেজগাঁও থানা ছাত্রদলের নেতা আবদুল্লাহ আল তামিম গাজীপুর জেলে গতকাল বুধবার মারা গেছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, কারা কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও সরকারের নির্যাতনেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে।কয়েক দিন ধরে বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাসের বাসা পুলিশ সার্বক্ষণিক ঘিরে রেখেছে বলেও অভিযোগ করেন নজরুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, মির্জা আব্বাসের বাসায় ঢোকা ও বেরোনোর সময় নেতা-কর্মীদের লাগাতার গ্রেপ্তার করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। গত মঙ্গলবার থেকে এ পর্যন্ত ৫০ থেকে ৬০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।বিএনপির এই নেতা বলেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদের পক্ষে মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে ফিরে আসার সময় দলটির নেতা-কর্মীদের ওপর আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা হামলা চালিয়েছে। পরে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করে।

আসন্ন নির্বাচনে কোনো যুদ্ধাপরাধীকে ধানের শীষ প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, যুদ্ধাপরাধীদের ধানের শীষ দেওয়া হবে না, এটা আপনাদের আশ্বস্ত করতে পারি। তাছাড়া, জামায়াতের মধ্যেও অনেক মুক্তিযোদ্ধা আছেন।বিএনপি, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলীয় জোট নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর থেকেই সরকারের মাথা খারাপ হয়ে গেছে মন্তব্য করে বিএনপির এই নেতা বলেন, মনোনয়ন জমা দিতে আমাদের নেতাকর্মীদের পদে পদে বাধা দেওয়া হয়। ছোট থেকে বড় সবাইকে আসামি করা হচ্ছে। অনেকেই নিখোঁজ হচ্ছে। এগুলো সবই সুষ্ঠু নির্বাচনের অন্তরায়।ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে নজরুল ইসলাম বলেন, আওয়ামী লীগ একের পর এক ফাউল করছে। সরকার ও ইসি নিশ্চুপ ভূমিকা পালন করছে। নির্বাচন কমিশন সরকারের সহায়ক ভূমিকা পালন করছে। এভাবে চলতে থাকলে সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না।

বিএনপির এই নীতি-নির্ধারক বলেন, ২০১৪ সালের মতো আরও একটি প্রহসনের নির্বাচন করতে সরকার গ্রেফতার বাণিজ্য অব্যাহত রেখেছে। তিন মাস আগে মিথ্যা ও গায়েবি মামলায় গ্রেফতার হয়ে কারান্তরীণ তেজগাঁও থানা ছাত্রদলের নেতা আব্দুল্লাহ আল তামিম গাজীপুর জেলে বুধবার (২৮ নভেম্বর) মৃত্যুবরণ করেছে। সরকারের নির্যাতন এবং কারা কর্তৃপক্ষের অবহেলায় তার মৃত্যু হয়েছে।বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আবদুল আউয়াল মিন্টু, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল ও হাবিব উন নবী খান সোহেল নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার বিষয়ে নজরুল বলেন, অন্য নেতাদের পক্ষে কাজ করার জন্য অনেক সিনিয়র নেতা মনোনয়ন জমা দেননি। এটাকে আপনারা নির্বাচনী কৌশলও বলতে পারেন।বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের শরিক স্বাধীনতাবিরোধী দল জামায়াতের প্রার্থীদের ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে নজরুল ইসলাম খান বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের ধানের শীষ দেওয়া হবে না, এটা আপনাদের আশ্বস্ত করতে পারি। তাছাড়া, জামায়াতের মধ্যেও অনেক মুক্তিযোদ্ধা আছেন।সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, সহ-দপ্তর সম্পাদক বেলাল আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।