চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অ্যানথ্রাক্স রোগে আক্রান্ত জাহা বক্স মন্ডল (৪৫) নামে এক ব্যাক্তি শনাক্ত করেছে। অ্যানথ্রাক্স রোগে আক্রান্ত জাহা বক্স মন্ডকে হাসপাতাল কতৃপক্ষ নিবিড় পর্যবেক্ষনে রেখেছে। গত ৯ দিন আগে রোগাক্রান্ত গরুর মাংস খাওয়ার পর তিনি এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে বলে ধারণা করছে ডাক্তাররা। অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত রোগী জাহা বক্স মন্ডল পাশ্ববর্তী মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলার মানিকদিহি গ্রামের আরশাদ আলীর ছেলে। চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন খায়রুল আলম ওই গ্রামে বিশেষজ্ঞ মেডিকেল টিম পাঠানোর জন্য স্বাস্থ্য বিভাগের মহাপরিচালক বরাবর চিঠি দিয়েছেন। ওই গ্রামের অনেকেই এই রোগে আক্রান্ত হলেও শুক্রবার দিবাগত রাত ১২ টা পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নতুন করে কোন রুগী ভর্তি হয়নি।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শামীম কবির জানান, জাহা বক্স মঙ্গলবার চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি হন। তাকে দেখেই আমরা অনুমান করেছিলাম তিনি অ্যানথ্রাক্স রোগে আক্রান্ত। আমারা নিশ্চিত হওয়ার জন্য ওই দিনই তার রক্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠাই। ঢাকা থেকে বৃহ¯পতিবার রাতে রিপোর্ট আমাদের হাতে এসে পৌঁছায়। রিপোর্টটি পেয়ে সিভিল সার্জন ডা. খায়রুল আলমের নেতৃত্বে ডা. আবুল হোসেন ও চক্ষ বিশেষজ্ঞ ডা. শফিউজ্জামান সুমনের সমন্বয়ে মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। মেডিকেল বোর্ড নিশ্চিত করে জাহা বক্স অ্যানথ্রাক্স রোগে আক্রান্ত।

জাহা বক্সের স্ত্রী জরিনা খাতুন জানান, গ্রামের আলিহিম নামের এক কসাইয়ের কাছ থেকে গত ৯ দিন আগে গরুর মাংস কিনে আনেন তার স্বামী জাহা বক্স। সেই মাংস খাওয়ার দু’দিন পর তার ঠোঁটে-মুখে ছোট ছোট ফোটা বের হয়। প্রথমে আমরা তা আমলে না নিলে আরও দু’দিন পর তার (স্বামী জাহা বক্স) চোখ ফুলে যায়। এক পর্যায়ে গত মঙ্গলবার (২৭ নভেম্বর) তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।তিনি আরও জানান, ওই গরুর মাংস খাওয়া গ্রামের অনেকেই এই রোগে আক্রান্ত হয়ে এরকম উপসর্গ নিয়ে গ্রামেই পড়ে আছে। তারা তেমন আমল দিচ্ছে না এবং চিকিৎসাও করাচ্ছেন না। মেডিকেল বোর্ডের সদস্য ডা. আবুল হোসেন জানান, ঢাকার রিপোর্ট পাওয়ার পর আমারা নিশ্চিত হয়ে রুগির চিকিৎসা সেবা দিচ্ছি এবং সার্বক্ষণিক তা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। তিনি আরও জানান, শুক্রবার দিবাগত রাত ১২ টা পর্যন্ত এ রোগে আক্রান্ত নতুন কোন রোগী ভর্তি হয়নি।চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ডা. খায়রুল আলম জানান, অ্যানথ্রাক্স মারাতœক ক্ষতিকর জীবাণু। এ রোগ পশুর মাংস থেকে সংক্রমিত হয়ে থাকতে পারে। তাই আমরা অ্যানথ্রাক্স নিশ্চিত হওয়ার পরপরই স্বাস্থ্য বিভাগের মহাপরিচালক বরাবর চিঠি পাঠিয়েছি। যাতে ওই গ্রামে জরুরি ভিত্তিতে একটি মেডিকেল টিম পাঠানো হয়।