কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম নেতা কাদের সিদ্দিকী বীরোত্তম প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ করে বলেছেন, যতক্ষণ পর্যন্ত আমার বোন ( শেখ হাসিনা) সরকারে থাকবেন, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাকে মনে হয় ইলেকশন করতে দেওয়া হবে না। এজন্য আমি খুশি। প্রতিদ্বন্দ্বী সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে বলে এটাই আমি আশা করছি।

তিনি আরও বলেন, আমার নির্বাচনে দাঁড়ানোটা বড় কথা নয়। আমি চাই নির্বাচনটা ভালো হোক। আমার সংগ্রাম হচ্ছে ভোটাররা যেন ভোট দিতে পারেন। দেশে যেন গণতন্ত্র অব্যাহত থাকে, দেশে যেন সুশাসন থাকে, এখন যে কুশাসন চলছে, এই শাসন ভালো না। রোববার (০২ ডিসেম্বর) দুপুরে কাদের সিদ্দিকীর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হলে জেলা রিটার্নিং অফিসারের কক্ষ থেকে বের হয় তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।তিনি বলেন, যদি আমার দেশপ্রেম সত্য হয়, আমি সারা জীবন আল্লাহ ও রাসুলের ওপর যে বিশ্বাস করে এসেছি, সে বিশ্বাস যদি বিন্দুমাত্র সত্য হয়, তাহলে ১৯ থেকে ২০টির বেশি সিট পাবে না বর্তমান সরকার।

মনোনয়নপত্র বাতিলের বিষয়ে তিনি বলেন, আমি ইলেকশন কমিশনে আপিল করবো। আমরা যখন ইলেকশন কমিশনে গিয়েছিলাম, তখন তারা বলেছিলেন ইলেকশন কমিশন কখনও কোর্টে বাদী হবেন না। আমি এটি দেখার জন্যই ইলেকশন কমিশনে যাবো।তিনি আরও বলেন, আমি যাচাই-বাছাই দীর্ঘ সময় দেখেছি, আমার কাছে ভালো লেগেছে। আমার মনে হয় রিটার্নিং অফিসার হিসেবে তিনি নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে পারবেন, সরকারের পা-চাটা হবেন না।এ সময় কাদের সিদ্দিকীর সঙ্গে জেলা কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি রফিকুল ইসলামসহ দলের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। খেলাপি ঋণ থাকার কারণে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি আবদুল কাদের সিদ্দিকীর মনোনয়নপত্র বাতিল করেছে নির্বাচন কমিশন। কাদের সিদ্দিকী টাঙ্গাইল-৮ (সখীপুর-বাসাইল) এবং টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসন থেকে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। এ ছাড়া টাঙ্গাইল-১ ও ৬ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থীসহ আরও অন্তত ১২ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে।

টাঙ্গাইলের জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মো. শহীদুল ইসলাম রোববার দুপুরে যাচাই–বাছাইয়ের পর ঋণখেলাপিসহ বিভিন্ন ত্রুটির কারণে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের এসব মনোনয়নপত্র বাতিল করেন।টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসকের সভাকক্ষে যাচাই বাছাই চলার সময় কাদের সিদ্দিকীর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান সোনার বাংলা প্রকৌশল সংস্থা ঋণখেলাপির তালিকায় আছে বলে অগ্রণী ব্যাংক টাঙ্গাইল শাখার সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. নাজিম উদ্দিন রিটার্নিং কর্মকর্তাকে জানান। এ সময় কাদের সিদ্দিকীর বক্তব্য জানতে চান রিটার্নিং কর্মকর্তা। কাদের সিদ্দিকী বলেন, আমার বলার তেমন কিছু নেই। অনেক বড় অর্থশালী মানুষ সালমান এফ রহমানের ৪ হাজার ৫৪৩ কোটি টাকা ২৫ বছরের জন্য বিনা সুদে ব্লক করা আছে। এটা সত্য যে ব্যাংক আমাদের কাছে টাকা পায়, আমরা সে টাকা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত আছি। এ নিয়ে তিনবার ভোটে দাঁড়ানো থেকে বঞ্চিত হলাম। কাদের সিদ্দিকী আরও বলেন, যা হয়েছে সব সরকারের ইচ্ছাতেই হয়েছে। তিনি এ ব্যাপারে আপিল করবেন।