অবশেষে ফ্রান্সে জ্বালানি কর বাড়ানোর সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে রাস্তায় নেমে আসা জনগণের জয় হয়েছে। প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে চলমান প্রতিবাদের মুখে সিদ্ধান্তটি ছয় মাসের জন্য স্থগিত ঘোষণা করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী এদুয়া ফিলিপে। মঙ্গলবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বিবিসি জানায়, ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক শেষে এই ঘোষণা দেন তিনি।

এদুয়া ফিলিপে বলেন, জনগণের কথা শোনা হবে। এছাড়া এই সিদ্ধান্তের ফলে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে, তাদের সঙ্গে ভালোভাবে আলোচনা ছাড়া জ্বালানি কর বাড়ানো হবে না। আগামী ১৫ ডিসেম্বর থেকে ১ মার্চ পর্যন্ত জ্বালানি কর বাড়ানোর বিষয়ে জনগণের মতামত সংগ্রহ করা হবে।

তিনি বলেন, আমরা জানি ইয়েলো ভেস্ট (হলুদ রঙের জ্যাকেট) পরা ফরাসি জনগণ তাদের দেশকে ভালোবাসে। তাদের প্রতি আমরা শ্রদ্ধাশীল। জনগণের ইচ্ছা বাস্তবায়নই রাষ্ট্রের প্রধান দায়িত্ব, কিন্তু জাতির ঐক্যের জন্য হুমকি স্বরূপ যেকোনো কিছুর বিরুদ্ধে আমাদের লড়তেই হবে।

প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে চলমান বিক্ষোভে ফ্রান্সের প্রধান শহরগুলো ইতোমধ্যে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়। সরকারের প্রতি ইয়েলো ভেস্ট পরা প্রতিবাদকারীদের ক্ষোভ ধীরে ধীরে দেশটির সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে।

বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা উত্তেজিত হয়ে সহিংসতা ও ভাঙচুরে জড়িয়ে পড়ে। বিশেষ করে গত শনিবার আর্ক দ্য ট্রাম্ফে মূর্তি ভাঙচুরের ঘটনাটি তীব্রভাবে নিন্দিত হয়।

পরদিন রোববার দেশটির রাজধানী প্যারিসে নিরাপত্তা বাহিনীর ২৩ সদস্যসহ ১০০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হন। ৪০০ জনেরও বেশি মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানায় দেশটির পুলিশ। দেশটিতে জরুরি অবস্থা জারি করা হতে পারে বলেও জানান ফরাসি সরকারের মুখপাত্র বেনজামিন গ্রিভেয়ক্স।

প্রসঙ্গত, প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ দুই বছর আগে নির্বাচিত হন। তখন তিনি সুদূরপ্রসারী সংস্কারের একটি অসাধারণ ম্যান্ডেট দেন। কিন্তু সাম্প্রতিক মাসগুলোতে তার জনপ্রিয়তা একেবারে তলানিতে গিয়ে পৌঁছেছে।