বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে জাতির গর্বের প্রতীক হিসেবে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেছেন, এই বাহিনী এখন আধুনিক প্রশিক্ষণ ও সরঞ্জামের সমন্বয়ে অনেক বেশি উন্নত, দক্ষ ও চৌকস।শনিবার চট্টগ্রামের ভাটিয়ারীতে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি আয়োজিত ৭৬তম বিএমএ দীর্ঘমেয়াদি কোর্সের কমিশনিং প্যারেডে অংশ নিয়ে রাষ্ট্রপতি এ কথা বলেন।রাষ্ট্রপতি বলেন, আজকের বাংলাদেশ সেনাবাহিনী অবকাঠামো, কৌশল ও প্রযুক্তিগত দিক থেকে এক দশক আগের সেনাবাহিনীর চেয়ে সম্পূর্ণ আলাদা এবং আধুনিক প্রশিক্ষণ ও সরঞ্জামের সমন্বয়ে অনেক বেশি উন্নত, দক্ষ ও চৌকস।

গত প্রায় ১০ বছরে সেনাবাহিনীর অবকাঠামোগত পরিবর্তনের পাশাপাশি এর সক্ষমতা বহুলাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। ফোর্সেস গোল-২০৩০ এর অংশ হিসেবে সেনাবাহিনীর আধুনিকায়নসহ শক্তিশালী প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সমরাস্ত্র এবং সরঞ্জাম সংগ্রহ করা হয়েছে, যোগ করেন আবদুল হামিদ।রাষ্ট্রপতির আশা, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী তাদের পেশাগত দক্ষতা, মেধা ও প্রযুক্তির সমন্বয়ে বিশ্বে নিজেদের অবস্থান আরো সুদৃঢ় করবে।

স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি দেশ সেবার মহান দৃষ্টান্ত স্থাপন করে সেনাবাহিনীর সদস্যরা সবার প্রশংসা অর্জন করেছে জানিয়ে আবদুল হামিদ বলেন, মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র স্থাপন,সুশৃঙ্খলভাবে ত্রাণ বিতরণ ও তাদের পরিচয়পত্র তৈরিতে সেনাবাহিনী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। দেশ-বিদেশে দায়িত্ব পালনে দক্ষতা ও পেশাদারত্ব দেখিয়ে ইতিমধ্যে আমাদের সেনাবাহিনী সব মহলের প্রশংসা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।

নবীন কর্মকর্তাদের উদ্দেশে রাষ্ট্রপতি বলেন, আজকের দিনটি তোমাদের জীবনে অত্যন্ত আনন্দের এবং একইসাথে গুরুত্বপূর্ণ। আজকে শপথগ্রহণের মধ্য দিয়ে তোমাদের ওপর ন্যস্ত হলো দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার পবিত্র দায়িত্ব। এ দায়িত্ব পালনে তোমাদের সর্বদা সজাগ ও প্রস্তুত থাকতে হবে। আর এটাই হবে তোমাদের পেশাগত জীবনের প্রধান ব্রত।মনে রাখবে, অনেক রক্ত আর ত্যাগ-তিতিক্ষার বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে আমাদের স্বাধীনতা। তোমরা এ দেশের সন্তান, জনগণের অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাই তোমাদের সবাইকে সাধারণ মানুষের সুখ-দুঃখ ও হাসি-কান্নার সমান অংশীদার হতে হবে। যেকোনো দুর্যোগ ও দুঃসময়ে বিপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে,’বলেন রাষ্ট্রপতি।এর আগে সেনা প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ অনুষ্ঠানস্থলে রাষ্ট্রপতিকে স্বাগত জানান।এবার বিএমএ দীর্ঘমেয়াদি কোর্সে ২৫৪ জন বাংলাদেশি, দুজন সৌদি ও একজন শ্রীলংকান ক্যাডেট কমিশন লাভ করেন। বাংলাদেশি কর্মকর্তাদের মধ্যে ২১৭ জন পুরুষ এবং ৩৭ জন নারী।অনুষ্ঠানে নৌ ও বিমান বাহিনী প্রধান, সংসদ সদস্য, কূটনীতিক এবং বঙ্গভবনের সংশ্লিষ্ট সচিবরা উপস্থিত ছিলেন।