দেশের ব্যাংক খাতের প্রকৃত চিত্র চিহ্নিত করতে নাগরিক কমিশন গঠন করবে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। জাতীয় নির্বাচনের পরই এ কমিটি গঠন করা হবে। এ নাগরিক কমিটি ব্যাংক খাতের সমস্যা চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় সুপারিশ তুলে ধরবে।
আওয়ামী লীগ সরকারের দুই মেয়াদে দেশের ব্যাংকিং খাত থেকে ২২ হাজার ৫০২ কোটি টাকা লুটপাট হয়েছে বলে জানিয়েছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।শনিবার সকালে বাংলাদেশের ব্যাংক খাত নিয়ে আমরা কী করব’ শীর্ষক এক সংলাপে এ তথ্য জানান সিপিডির বিশেষ ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি জানান, নাগরিক কমিশন ব্যাংক খাতের প্রকৃত চিত্র তুলে ধরবে। ব্যাংক খাত নিয়ে যে আশঙ্কা করা হচ্ছে, তার প্রকৃত কারণ চিহ্নিত করা হবে। সমাধানের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় আইন সংশোধনসহ বিভিন্ন সুপারিশ তুলে ধরবে এ কমিশন।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ব্যাংক খাত অর্থনীতির হৃৎপিণ্ড। এ হৃৎপিণ্ড সচল রাখতে সবাইকে জোরালো ভূমিকা রাখতে হবে।সংলাপে দেশের আর্থিক খাতের বিশেষজ্ঞ, সাবেক ব্যাংকার ও আমলারা নানা সমস্যা তুলে ধরে সমাধানের পরামর্শ দেন। তারা সবাই ব্যাংক খাত ঠিক রাখতে সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বাধীন ভূমিকার আশা করেন।সংলাপে মূল প্রবন্ধে সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরের সূত্র ধরে বলেন, গত ১০ বছরে ব্যাংক খাতে ২২ হাজার ৫০২ কোটি টাকার অনিয়ম হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে গেলো এক দশকে ব্যাংক থেকে সাড়ে ২২ হাজার ৫০২ কোটি টাকা লোপাট হয়েছে। যা পদ্মাসেতু নির্মাণ খরচের চার ভাগের তিন ভাগ।সংস্থাটির মতে, ২০০৯ সাল থেকে ২০১৭ সাল অবধি সরকারি-বেসরকারি ও বাংলাদেশ ব্যাংক মিলিয়ে ১৪টি ব্যাংকের মাধ্যমে এসব অর্থ খোয়া গেছে।বাড়তি খেলাপি ঋণ, যাচাই-বাছাই ছাড়া ঋণ অনুমোদন, ঋণ দেওয়ায় রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার, ব্যাংকারদের পেশাদারিত্বের অভাবে চরম সংকটাপন্ন অবস্থায় এখন দেশের ব্যাংক খাত।একইসঙ্গে রাজনৈতিক বিবেচনায় ব্যাংকের অনুমোদন, পরিচালনা পর্ষদে রাজনৈতিকদের যুক্ত করা, পরিচালকের দুর্বৃত্তায়ন, দুর্বল ব্যাংক ব্যবস্থাপনা ও সবশেষে ঋণ দেওয়ায় সরাসরি রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের কারণে ভঙ্গুর হচ্ছে দেশের ব্যাংকগুলো।ব্যাংক খাতে শৃঙ্খলা ফেরাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক শক্তিশালীকরণ, নতুন ব্যাংক অনুমোদন না দেওয়া, দুর্নীতির বিরুদ্ধে শক্তিশালী বিচারিক ব্যবস্থাসহ জরুরি ভিত্তিতে পাঁচটি ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে সিপিডি।
