গাজীপুরে ব্যাডমিন্টন খেলার মাঠে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে রবিবার রাতে হামলায় এক স্কুল ছাত্র নিহত ও অপর চারজন আহত হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে একজনকে আটক করেছে পুলিশ। এদিকে খুনের এ ঘটনার প্রতিবাদে এবং দায়ীদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবীতে সোমবার নিহতের সহপাঠীরা ক্লাশ বর্জন করে বিক্ষোভ করেছে। নিহতের নাম জাহিদ হাসান শ্রাবন (১৫)। সে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের গাছা থানার চান্দরা এলাকার সাইদুল ইসলামের ছেলে। শ্রাবন স্থানীয় গাছা উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের গাছা থানার ওসি ইসমাইল হোসেন ও স্থানীয়রা জানান, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের গাছা থানার চান্দরা এলাকার বাড়ির পার্শ্ববর্তী মাঠে (চান্দরা কেন্দ্রীয় মসজিদ সংলগ্ন) রবিবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে ব্যাডমিন্টন খেলতে যায় শ্রাবন। খেলার মাঠে লাইট লাগাতে দেরী হওয়ায় তপু নামের এক যুবক কানার ঘরের কানা বলে শ্রাবনকে গালি দিলে শ্রাবনও পাল্টা গালি দেয়। এনিয়ে দু’পক্ষের মাঝে হাতাহাতি ও সংঘর্ষ হয়। এতে ইমরান ও মাসুদ রানাসহ উভয় পক্ষের অন্ততঃ ৪ জন আহত হয়। এদিকে সংঘর্ষের এ খবর পেয়ে নাহিদ (১৫), সরু মিয়া (৬৫) ও জাহিদ হাসান মায়াসহ তপুর পক্ষের লোকজন ঘটনাস্থলে এসে শ্রারন ও তার সমর্থকদের মারধর শুরু করে। এক পর্যায়ে আত্মরক্ষার্থে শ্রাবন দৌড়ে বাড়ির দিকে ছুটে যাওয়ার সময় তার বুকের বাম পাশে নাহিদ ছুরিকাঘাত করে। এতে শ্রাবন মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। স্থানীয়রা আহত শ্রাবণ, ইমরান ও মাসুদ রানাকে উদ্ধার করে শহীদ তাজ উদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতেই শ্রাবন মারা যায়। হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক গুরুতর আহত ইমরানকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। আহত অন্যদের বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে প্রেরণ করে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ সরু মোল্লাকে আটক করেছে। সে স্থানীয় মৃত তালেবর মোল্লার ছেলে।

পুলিশের ওই কর্মকর্তা আরো জানান, এঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। সোমবার নিহতের ময়না তদন্ত গাজীপুরের শহীদ তাজ উদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করা হয়।

এদিকে খুনের এ ঘটনার প্রতিবাদে এবং দায়ীদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবীতে সোমবার সকালে নিহতের সহপাঠীরা বিদ্যালয়ের ক্লাশ বর্জন করে বিক্ষোভ শুরু করে। এক পর্যায়ে তারা মিছিল নিয়ে বিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। ময়না তদন্ত শেষে বিকেলে নিহতের লাশ নিয়ে এলে নিহতের সহপাঠী ও স্বজনরাসহ এলাকাবাসী কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। এতে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।