জন্মভূমি গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া থেকে নির্বাচনী প্রচার শুরু করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ১২ ডিসেম্বর থেকে ভোটের প্রচার শুরু করবেন প্রধানমন্ত্রী। সোমবার সকালে রাজধানীর ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক।জাহাঙ্গীর কবির নানক জানান, আগামী বুধবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সড়কপথে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া যাবেন। সেখানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানানোর পর টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়ায় নির্বাচনী প্রচারণার কাজ শুরু করবেন তিনি।

এই বক্তৃতা শেষ করে আবারও দুপুরেই কোটালীপাড়ায় এক জনসভায় বক্তৃতা দেওয়ার মধ্য দিয়েই নির্বাচনি প্রচারণা শুরু করবেন।এর আগে সংবাদ সম্মেলনে দলের পক্ষ থেকে লিখিত বক্তব্যে নানক বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনগণ বিএনপি- জামায়াত অপশক্তির ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলে ব্যালটের মাধ্যমে আগুন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে, মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধীদের বিরুদ্ধে রায় দেবে। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের মদতদাতা বিএনপি- জামায়াতের বিরুদ্ধে রায় দেবে। দুর্নীতিতে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন, অর্থপাচারকারী, এতিমের টাকা আত্মসাতকারী, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলাকারী, আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদের পৃষ্ঠপোষক তারেক রহমানের দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে জনগণ রায় দেবে।

বিএনপির মনোনয়ন বাণিজ্যের আড়ালে বিএনপি কত টাকা বিদেশে পাচার করেছে প্রশ্ন তুলে নানক বলেন, ইতোমধ্যে আপনারা দেখেছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা মনোনয়ন বাণিজ্যের প্রতিবাদে তাদের চেয়ারপারসনের কার্যালয় ও কেন্দ্রীয় কার্যালয় ঘিরে রেখেছে। এমনকি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ সিনিয়র নেতাদের অপদস্থ করা হয়েছে এবং দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর করতে দেখা গেছে। এ থেকেই প্রমাণিত হয়, বিএনপির মনোনয়ন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ নিয়মবহির্ভূত ও অগণতান্ত্রিক পন্থায় পরিচালিত হয়েছে এবং ব্যাপক মনোনয়ন বাণিজ্য হয়েছে। তাদের নেতাকর্মীদের অভিযোগ অনুযায়ী, পলাতক তারেক রহমান এই মনোনয়ন বাণিজ্য চালিয়েছে।তাহলে দেশবাসীর প্রশ্ন, বিএনপির মনোনয়ন বাণিজ্যে দেশ থেকে কতো টাকা পাচার হয়েছে? আর এই টাকা আগামী নির্বাচনে ব্যবহার হলে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সন্ত্রাসী সংগঠন শিবিরের কয়েকজন নেতা আগ্নেয়াস্ত্র ও বোমাসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে ধরা পড়েছে। যা থেকে বোঝা যায়, বিএনপি এবং জামায়াত নাশকতা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে। জনগণের কাছে ভোট চাওয়ার মতো কোনও অর্জন তাদের নেই। তারা ক্ষমতায় থাকতেও দেশের কল্যাণ ও অগ্রগতিতে কোনও ভূমিকা রাখেনি, বরং দেশকে পিছিয়ে দিয়েছিল এবং বিরোধীদলে থেকে নাশকতা ও অগ্নিসন্ত্রাস করে দেশের শত শত নিরীহ নাগরিককে হত্যা করেছে। জনগণের কাছে ভোট চাওয়ার মতো তাদের কোনও নৈতিক ও যৌক্তিক ভিত্তি নেই। তাই নিজেদের নিশ্চিত পরাজয় জেনে তারা ষড়যন্ত্রের পথে, চক্রান্তের মাধ্যমে, নাশকতা ও সন্ত্রাসের পথ ধরে নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হচ্ছে।

তথাকথিত ঐক্যফ্রন্টের ত্রাণকর্তা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন ড. কামাল হোসেন সাহেবরা উল্লেখ করে নানক বলেন, এসব ব্যক্তি স্বাধীনতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের সংগঠন, আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সন্ত্রাসী সংগঠন, দুর্নীতিবাজ সংগঠন, আগুন সন্ত্রাস, এতিমের টাকা আত্মসাতকারী, বঙ্গবন্ধুকে হত্যাকারী ও চার নেতার খুনিদের পক্ষ অবলম্বন করছে। ধানের শীষ মার্কায় নির্বাচনের মধ্য দিয়ে তাদের ভাঁওতাবাজির মুখোশ উন্মোচিত হয়েছে।আগামী নির্বাচনে বর্ণচোরা রাজনীতিবিদরা জনগণের রায়ে প্রত্যাখ্যাত হবে।নির্বাচনি ইশতেহার প্রসঙ্গে নানক বলেন, আওয়ামী লীগের নির্বাচনি ইশতেহার ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের পর প্রকাশ করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের আরেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, আহমদ হোসেন, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, উপ-দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ।