মাদারীপুর -৩ (মাদারীপুর সদর ও কালকিনি) আসনটিতে আওয়ামী লীগ-বিএনপি দুই দলই এবার নতুন প্রার্থী দিয়েছে। ফলে প্রায় অর্ধ যুগের পর এমপি হিসেবে মাদারীপুরের সদর ও কালকিনিবাসী পাচ্ছে নতুন মুখ। মাদারীপুরে সদর ও কালিকিনি এ আসনিটিতে ১৯৯৬ থেকে টানা চার মেয়াদে এমপি ছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন।এরপর বিনাভোটে ৫ জানুয়ারী ভোটারবিহীন নিবার্চনে সুযোগ বুঝে এমপি হন কৃষিবিদ ও আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম ।মাদারীপুর সদরস্থ নিবাসী বিনাভোটের এমপি হওয়ার পর বাহাউদ্দিন নাসিম এলাকায় বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে হাত দেন। উন্নয়নও করেছেন বেশ কিছু । ভেবেছিলেন এবার তুমুল প্রতিদ্বন্দিতার ভোটে অংশ নিয়ে ভোটযুদ্ধের প্রার্থী হবেন। যেমনটি ইতিপুর্বে হয়েছিলেন সৈয়দ আবুল হোসেন।এমপি থাকাকালে সেও বেশ কিছু উনয়ন করেছেন।কিন্তু বিনাভোটের এমপি বাহাউদ্দিন নাসিম এমপি হবার পর কালিকিনিতে আওয়ামীলীগের দুটি গ্রুপ তৈরী হয়। সেই সুত্র ধরে কালিকিনি উপজেলা আওয়ামীলীগ দুটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে রক্তাক্ত সংর্ঘষের পথে নামে ।তাছাড়া সৈয়দ আবুল হোসেন এর বিরুদ্ধে বহুল আলোচিত পদ্মাসেতু দুর্নীতির কেলেঙকারী তকমা লাগানো হয়েছে(যদি অবশ্য আদালতে তার দুর্নীতি প্রমানিত হয়নি) তথাপি দলীয় গ্রুপিং , পদ্মা সেতু প্রকল্পে অনিয়ম দুর্নীতির তকমায় আওয়ামীলীগের ভোট ব্যাংকের আসনটি যাতে হাতছাড়া যাতে না হয় সেলক্ষকে সামনে এনে দলীয় হাইকমান্ড হতে এবার এদের কারো ভাগ্যে দলীয় মনোনয়ন জোটেনি। দলীয় নেতা-কর্মীরা বলছেন, ‘ভালো’ মানুষ হিসেবে পরিচিত শিক্ষাবিদ হিসাবে খ্যাত সৈয়দ আবুল হোসেন এবার বাদ পড়েছেন বর্নিতকারনে।আর বআহাউদ্দিন নাসিম বাদ পড়েছেন বির্তক ও দলীয় গ্রুপিং এড়ানোর জন্য । কেননা দলীয় কোন্দল ও বির্তকের মধ্যে এ দুজনের যেকোন একজনকে মনোনয়ন দেয়া হলে আওয়ামীলীগের ভোট ব্যাংকের এ আসনটি জয়লাভে অনিশ্চয়তা দেখা দিতে পারে- এ আশংকায় তর্কিতহীন আওয়ামীলীগের দপ্তর সম্পাদক ডা: সোবাহান গোলাপকে দলীয় হাই কমান্ড দলের টিকেট প্রদান করেছেন দলের কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক ড. সোবাহান গোপাল ।তিনি দপ্তর সম্পাদক হিসাবে দলের কেন্দ্রীয় পর্যায়ে ব্যাপক পরিচিতি থাকলেও নিজ এলাকায় তার জনপ্রিয়তা নেই । যেকারনে মাঠ পর্যায়ে ভোটাররা তাকে ভালভালে কম চেনে। সোবাহান গোলাপ নিজেই নির্বাচনী প্রচারনা ক্ষেত্রে বলেন থাকেন আমাকে না চিনলেও আপনার নৌকার প্রতীক দেখে ভোট দিলে আমি পেয়ে যাব ।

অপরদিকে কেন্দ্রীয় বিএনপির গণ-শিক্ষা বিষয়ক সহ-সম্পাদক আলহাজ্ব আনিসুর রহমান খোকন তালুকদার বিএনপি টিকেট নিয়ে এ আসনে প্রার্থী হিসাবে ভোটযুদ্ধে নেমেছে। তিনি কেন্দ্রীয় বিভিন্ন কর্মসুচীতে এলাকায় এসে নেতা-কর্মীদের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলছেন। তার সাথে জেলা বিএনপির নেতাকর্মীদের রয়েছে গভীর সম্পর্ক। তিনি কালকিনির প্রতিটি মাঠ ঘাট চষে বেড়াচ্ছেন। বিএনপি’র এই জনপ্রিয় নেতা কালকিনি তথা মাদারীপুর-০৩ আসনে তৃণমূল নেতাকর্মী ও তরুণদের প্রিয় হয়ে সর্বত্রই সে বিচরণ করছে ।খোকন তালুকদার বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মীদের সুখে দু:খে সবসময় পাশে থাকেন । ভোটাররা শান্পিুর্নভাবে ভোট প্রদান করতে পারলে খোকনের সাথে আওয়ামীলীগের টিকেটপ্রাপ্ত প্রার্থী ড. সোবাহান গোলাপ এর তুমুল প্রতিদন্দিতা হবে প্রতীয়মান হচ্ছে।মাদারীপুর -৩ আসনে আওয়ামীলীগের ২ হেভিওয়েট প্রার্থী বাহাউদ্দিন নাসিম ও সৈয়দ আবুল হোসেন দলীয়ভাবে মনোনয়ন না পেলেও তাদেরকে ভবিষ্যতে দলের পক্ষ থেকে মুল্যায়ন করা হবে বলে দলের হাইকমান্ড থেকে আশ^াস দেয়ায় তারা দলের প্রার্থীও জন্য মাঠে থেকে কাজ করবেন এমনটা দলীয় ভাবে শোনা যাচ্ছে। তবে বিএনপির প্রার্থী ও দলের বিভিন্ পর্যায়ের নেতা কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা মোকদ্দমা থাকায় নির্বাচনী প্রচারনা ব্যাহত হচ্ছে। গ্রেফতার ও পুলিশী হয়রানীর আতংকের মধ্যে চলছে বিএনপি দলীয় নির্বাচনী প্রচারনা । এর মধ্যেই বিএনপি ও আওয়ামীলীগের এই দুই নতুন প্রাথীর্র তুমুল প্রতিদ্বন্দীতা হবে ভোটযুদ্ধে। ভোটারদের মাঝে এই নতুন দুই প্রার্থীর গ্রহনযোগ্যতা সর্ম্পকে আলোচনা সমালোচনা চলছে। বিএনপি প্রার্থী নিজের জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে বিজয়ের ব্যাপারে অগ্রসর হচ্ছে আর আওয়ামীলীগের প্রার্থী দলীয় প্রতীকের প্রতি সম্মান দেখিয়ে বিজয়ের ব্যাপারে ভোটারদের মন জয়ের চেস্টা করছে। অন্যদলের প্রার্থী থাকলেও ৩০ ডিসেম্বর কালকিনি বাসী নতুন এ ২জনের একজনকে সাংসদ নির্বাচিত করবেন।

সাবরীন জেরীন ,মাদারীপুর জেলা প্রতিনিধি