একাদশ জাতীয় নির্বাচন ঘিরে আগামী ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত বৈধ লাইসেন্সধারী অস্ত্র মালিকরা নিজেদের সঙ্গে তাদের অস্ত্র বহন করতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। এসময়ে তারা অস্ত্র প্রদর্শনও করতে পারবেন না বলে জানান তিনি। বুধবার (১২ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ৩টার দিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে একাদশ জাতীয় নির্বাচন উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত এক জরুরি সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যারা একাদশ সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন; তাদের মধ্যে যাদের বৈধ লাইসেন্সের অস্ত্র রয়েছে, তারা নিরাপত্তার প্রয়োজনে নিজেদের কাছে অস্ত্র রাখতে পরবেন, কিন্তু প্রদর্শন করতে পারবেন না।আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার এবং বৈধ অস্ত্রের ব্যবহার সংক্রান্ত নির্দেশনা সংবলিত প্রজ্ঞাপন আগামী দু-এক দিনের মধ্যই জারি করা হবে।স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অত্যন্ত দক্ষ এবং প্রশিক্ষিত। যে কোনও নাশকতা মোকাবেলা এবং তা দমনে যোগ্য। কেউ যদি সন্ত্রাস সৃষ্টি করে ফায়দা লোটার চেষ্টা করে, তা কঠোর হাতে দমন করা হবে। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা মোতাবেক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাজ করছে।

এদিকে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১২ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের সমর্থনে কাওরানবাজার ব্যবসায়ী- পেশাজীবী-জনতা’ এই সমাবেশের আয়োজন করে। সমাবেশে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, নির্বাচন কেন্দ্রে যেকোনও ধরনের হামলা ও বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি মোকাবিলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ মোতাবেক প্রস্তুত রয়েছে তিনি বলেন, নির্বাচন কেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যেকোনও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুত।নির্বাচন কেন্দ্রে বড় ধরনের কোনও নাশতকা বা হামলার আশঙ্কা আছে কিনা জানতে চাইলে স্বরাষ্টমন্ত্রী বলেন, আমাদের গোয়েন্দা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তৎপর রয়েছেন। তাদের কাছে কোনও চ্যালেঞ্জই চ্যালেঞ্জ নয়। অতীতেও তারা জঙ্গি-সন্ত্রাস খুব দক্ষতার সঙ্গে নির্মূল করেছেন। তারা যেকোনও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুত।নির্বাচনি প্রচার-প্রচারণায় দেশব্যাপী হামলা হচ্ছে, এতে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এ বিষয়ে আপনার পদক্ষেপ কী, সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, হত্যার রাজনীতি আওয়ামী লীগ করে না। যারা হত্যার রাজনীতি করে তারা অতীতেও (২০১৪ সালে) জ্বালাও- পোড়াও করে নিরীহ মানুষকে হত্যা করেছে। তারাই আজ এসব হামলা চালাচ্ছে।

তিনি বলেন, জনগণ আমাদের সঙ্গে রয়েছে, আওয়ামী লীগের সঙ্গে রয়েছে। আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী অত্যন্ত দক্ষ। তারা যেকোনও হামলা ও বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে। এসব হামলার ঘটনায় যারাই দায়ী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাদের চিহ্ন তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনবেন।স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দেশের সবচেয়ে বড় শক্তি জনগণ। আর জনগণই সন্ত্রাসীদের রুখে দেবে। ক্ষমতা বদল হয় জনগণের ম্যান্ডেটের মাধ্যমে। আমরা ভোটযুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছি। আগে দেশে কী ছিল, আর এখন কী আছে— সেটি আপনারাই ভালো জানেন, ভালো বলতে পারবেন।কাওরানবাজার একসময় ছিল সন্ত্রাসের দখলে, হত্যা ও চাঁদাবাজিও ছিল। গত ১০ বছরে আমরা এটি নির্মূল করেছি। অনেক সন্ত্রাসীকে আমরা আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করেছি। আর কিছু কিছু সন্ত্রাসী ভয়ে দেশ ছেড়ে বিদেশে পালিয়ে গেছে। এখন কাওরানবাজারে কোনও সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজি নেই।তিনি বলেন, এখানে ব্যবসায়ীরা যারা আছেন, তাদের উপযুক্ত জায়গায় স্থানান্তর করা হবে। এর আগে কেউ এখান থেকে যাবেন না। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আবারও যদি জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে নির্বাচিত হতে পারি, তবে যথাযোগ্যভাবে কাওরানবাজারের ব্যবসায়ীদের স্থানান্তর করা হবে।স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, আমরা একটা আলোকিত দেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়েছি, এর ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে চাই। এর জন্য দেশের জনগণের ম্যান্ডেট প্রয়োজন।