সারা দেশে নেতাকর্মীদের উপর হামলা- গ্রেপ্তার-নির্যাতন, নির্বাচনের কমিশনের বিরূপ মনোভাব, প্রচারকাজ সুষ্ঠুভাবে করতে বাধা দেওয়ার মধ্যেও বিএনপি ভোটের শেষ দিন পর্যন্ত মাঠে টিকে থাকার চেষ্টা করবে বলে প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন দলটির মহাসচিব।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সরকারের যে সংস্থাগুলো রয়েছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তারা নির্বাচন কমিশনের কোনো নির্দেশ মানছেন না বলে স্বয়ং নির্বাচন কমিশনার তিনি বলেছেন। এবং প্রধান নির্বাচন কমিশনার তিনিও বলেছেন যে, অসহায় হয়ে পড়েছেন।আমরা বহুবার তাঁর (সিইসি) সঙ্গে বহু বিষয়ে কথা বলেছি। সরাসরি কেনসেল। কিন্তু এখন পর্যন্ত আমরা কোনো রকমের কোনো সুরাহা পাইনি’, যোগ করেন বিএনপির মহাসচিব। তিনি আরো বলেন, তবে, শেষ পর্যন্ত নির্বাচনের মাঠে থাকবে।

শনিবার বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের জন্মভূমি বগুড়ায় নির্বাচনী প্রচারে যান দলের মহাসচিব। এখানকার দুটি আসন বগুড়া-৬ ও বগুড়া-৭ আসন থেকে বার বার জয়ী হয়েছেন দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। কিন্তু এবার কারান্তরীণ খালেদা জিয়ার নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে কোনো নিষ্পত্তি এখনো হয়নি। একটি আসনে মির্জা ফখরুল নিজেও বিকল্প প্রার্থী ছিলেন।সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার নির্বাচনী এলাকায় প্রচারের অংশ হিসেবে আজ সকাল সাড়ে ১০টায় উডবার্ন পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করেন মির্জা ফখরুল। নির্বাচন নিয়ে দল ও জোটের মনোভাব তুলে ধরেন।

এ সময় আগামী নির্বাচন কতটা সুষ্ঠু হবে এ বিষয়ে প্রশ্ন তুলে মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এত গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন সম্ভবত আর কখনো আসেনি। কারণ দীর্ঘ ১০ বছর পরে একটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। যেটা এখনো পর্যন্ত অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হতে যাচ্ছে এবং এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের কতগুলো মৌলিক সমস্যা নিরসন হবে বলে আমার বিশ্বাস। যদিও এ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হওয়ার ব্যাপারে আমাদের অত্যন্ত গুরুতর প্রশ্ন রয়েছে।রাজনৈতিক সমস্যা, সাংবিধানিক সমস্যা, সেই সমস্যাগুলোর সমাধান করতে পারবে কি, পারবে না এবং সত্যিকার অর্থেই জাতির যে আশা, সেটা পূরণ করতে সক্ষম হবে কি হবে না, এই বিষয়গুলো এই নির্বাচনে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, সরকারি সংস্থাগুলো, তারা নিরপেক্ষভাবে কাজ করবে। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি, সরকারি সংস্থাগুলো নিরপেক্ষভাবে কাজ করছে না। তারা বর্তমান সরকারকে ভোট দেওয়ার ব্যাপারে সরাসরি কথা বলছে। যা আমাদের গণতান্ত্রিক রীতিনীতির সম্পূর্ণ বিরোধী এবং তারা বলেছিলেন, যে তফসিল ঘোষণার পরই লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করা হবে। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তো নেই-ই। একতরফাভাবে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে, সরকার আবারও সেই একদলীয়ভাবে ক্ষমতায় চলে যেতে চায়। একতরফা একটা নির্বাচন করতে চায় এবং তারই আলামত আমরা দেখতে পাচ্ছি।

হামলা মামলায় নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, আজকে যে হামলা সমস্ত কিছু চলছে, আজকে বিরোধী দলের ওপরই হচ্ছে। নির্বাচন কমিশন ঠুঁটো জগন্নাথে পরিণত হয়েছে। সরকারের যে নির্দেশ তার বাইরে তারা কাজ করতে পারছে না।বিএনপি মহাসচিব আরো বলেন, ‘ভয়াবহ। মনে হয়, এটা একটা যুদ্ধাবস্থা। একদিকে সরকার রাষ্ট্রযন্ত্রকে নিয়ে আক্রমণ করছেন। আমরা শুধু জনগণের শক্তি নিয়ে আমরা চেষ্টা করছি, নির্বাচনী প্রচারের। আমরা এখন পর্যন্ত বারবার বলেছি, যে আমরা নির্বাচনী মাঠে আছি। আমরা থাকব। শেষ দিন পর্যন্ত আমরা নির্বাচনী মাঠে থাকার চেষ্টা করব।এ সময় জেলা বিএনপির নেতারা ও বিএনপি মনোনীত প্রার্থীরাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।