প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চালু হচ্ছে ই-মনিটরিং ব্যবস্থা। জানুয়ারি থেকে দেশের প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয় এ পদ্ধতিতে পর্যবেক্ষণ ও পরিদর্শন করবে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর। মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যবেক্ষণ ও পরিদর্শন ব্যবস্থা ডিজিটালকরণে ই-মনিটরিং সিস্টেম নামে এ ব্যবস্থার প্রণয়ন করছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর ও সেভ দ্য চিলড্রেন বাংলাদেশ।শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের মতে, কাগজভিত্তিক স্কুল মনিটরিং সিস্টেমটি স্কুল পর্যবেক্ষণ চিত্রকে যথাযথভাবে প্রতিফলিত করে না। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়ন (এম অ্যান্ড ই) বিভাগে সরবরাহ করার আগে বিভিন্ন স্তর থেকে পর্যবেক্ষণ তথ্য একাধিকবার সমন্বয় করা হয়। এর ফলে কোনো বিদ্যালয়ের মূল অবস্থার বিস্তারিত তথ্য হারিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

অন্যদিকে উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনায় নথি ঘেটে পরিদর্শন প্রতিবেদন বের করতে হয় কর্মকর্তাদের। এ প্রক্রিয়া সময় সাপেক্ষ। তাই প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর ও সেভ দ্য চিলড্রেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা ডিজিটাল করতে ই-মনিটরিং ব্যবস্থার উদ্ভাবন ও চালু করেছে।

এ বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আকরাম আল হাসান জাগো নিউজকে বলেন, সারা দেশের প্রায় ৬৫ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় মনিটরিং করা জটিল কাজ। এ জন্য দীর্ঘ সময় ব্যয় হয়। এ কারণে ই-মনিটরিং পদ্ধতির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে, ২০১৫ সালে গাজীপুর ও মানিকগঞ্জের পাঁচটি উপজেলায় পাইলট প্রকল্প হিসেবে ই-মনিটরিং সিস্টেম চালু হয়। পরে ২০১৬-১৮ পর্যন্ত আরও ৮০টি উপজেলায় ই-মনিটরিং ছড়িয়ে দেয়া হয়। মাঠ পর্যায়ের কার্যক্রম সফলভাবে বাস্তবায়নের জন্য ৬৪ জেলা থেকে তৈরি করা হয়েছে মাস্টার ট্রেইনার।

এ ছাড়া ২০১৭ সালের আক্টোবরে ঢাকা মেট্রোপলিটনের ১২ থানার শিক্ষা কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালকের ঘোষণার মাধ্যমে ২০১৮ সালের মে মাসে এ সব থানা পেপারলেস মনিটরিং এলাকায় পরিণত হয়।প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, দেশব্যাপী কাগজবিহীন স্কুল পরিদর্শন ব্যবস্থা ই-মনিটরিং বাস্তবায়নে অধিদফতর ৩৭২০টি ট্যাব কিনেছে। ই-মনিটরিং কাজে ব্যবহারের জন্য আক্টোবর-নভেম্বরে দেশব্যাপী মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের মাঝে তা বিতরণ করা হয়। ২০১৯ সালে জানুয়ারি থেকে ৬৪টি জেলায় ই-মনিটরিং কার্যক্রম সম্প্রসারিত ও বাধ্যতামূলক করা হবে।

মাঠ পর্যায়ের শিক্ষা কর্মকর্তারা জানান, এ কার্যক্রম সময় ও পেপার ওয়ার্ক কমিয়েছে। এর ফলে শিক্ষাবিষয়ক নীতি নির্ধারকরা আরও সহজে অগ্রাধিকার শনাক্ত করতে পারবেন। শিক্ষা বিভাগের কর্মক্ষমতা, নিরীক্ষণ এবং কার্যকরভাবে নির্দিষ্ট কাজের ফলাফল মূল্যায়নে সাহায্য করবে ই-মনিটরিং।