ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ নির্বাচনের আগে ঘরে ঘরে চাকরির ব্যবস্থা করে দেবে বলে প্রতিশ্রুতি দিলেও ঘরে ঘরে মামলা দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। রোববার ভোটের প্রচারের সময় বিএনপি নেতা বলেন, ছেলেদের চাকরি দেবে বলছিল, ঘরে ঘরে চাকরি। ঘরে ঘরে চাকরি দেওয়া দূরে থাক, ঘরে ঘরে মামলা আর হামলা দিছে। এখন ওই চাকরি নাই। আর যদি খালি বিএনপির গন্ধ পায়, তাইলে আরো নাই। ১৫ লাখ, ১৬ লাখ টাকা ঘুষ দিয়ে চাকরি পাইতে হয়। এই ব্যবস্থাটার আমরা পরিবর্তন চাই।

রোববার সকালে ঠাকুরগাঁও-১ আসনের নিজ নির্বাচনী এলাকা বলিতাপাড়া মাদ্রাসা মাঠে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘ঐক্যজোট-বিএনপি ক্ষমতায় এলে শিক্ষিতদের চাকরি দেবে। আর চাকরি যত দিন হবে না, তত দিন বেকার-ভাতা দেবে। কৃষক ভাইদের সারের দাম কমানো হবে। ধানের দাম যেন পায় তার ব্যবস্থা করব।

এ সময় ভোটারদের উদ্দেশে ফখরুল বলেন, ‘৩০ ডিসেম্বর আপনারা ভোট দিয়ে যদি ঐক্যফ্রন্ট, ২০ দলীয় জোটকে জয়ী করতে পারেন, তাহলে প্রথমে আমরা দেশনেত্রীকে মুক্ত করতে পারব। আর আমাদের হাজার হাজার ভাইয়ের বিরুদ্ধে যে মিথ্যা মামলাগুলো আছে, তুলে নিতে পারব। জেল থেকে বের করতে পারব। আর আমরা যেটা করব, সবচেয়ে বড় কাজ, সারের দাম কমানো, ধানের দাম, কাজ দিতে না পারলে ভাতা, চাকরির ব্যবস্থা, সংখ্যালঘুদের জন্য আলাদা মন্ত্রণালয় করা হবে।ভাইরা, ভোটকেন্দ্রে ভোট দিয়ে ভোটগণনা করে বের হবেন। কারো ধমক, হুমকি-ধমকিতে পরোয়া করবেন না। এবার আমাদের শেষ লড়াই। এই লড়াইয়ে আমাদের জিততে হবে।

মির্জা ফখরুল আরো বলেন, ১০ বছর আগে যারা নির্বাচিত হয়েছিল, তারা ২০১৪ সালে আরেকটা নির্বাচন করছে, যেখানে আমরা কেউ ভোট দিতে যাইনি। আপনারা গেছিলেন ভোট দিতে? (সবাই সমস্বরে না বলে) তাঁরা নিজেরা নিজেরাই দল গঠন করে সরকার হয়ে বসে আছে। দখল করে যারা জোর করে থাকে, তারা কি কখনো মানুষের ভালো করতে পারে? তারা শুধু নিজেদের ভালোটা দেখে। তাই না? তো বন্ধুগণ, আজকে ৩০ তারিখেই একটা সুযোগ আসছে আপনাদের, আপনারা এই পরিবর্তনটা করতে পারেন। পরিবর্তনটা আপনাদের হাতে। এই দেশের মালিক আপনারা। সংবিধানে এবং আল্লাহর প্রদত্ত নিয়মে। আপনারাই হচ্ছেন দেশের মালিক।

এ ছাড়া বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের দুঃখ এই ভোটটা যেন শান্তি, সুষ্ঠুভাবে হয়, এটা আমরা এখন পর্যন্ত করতে পারলাম না। মাঝখানে করছিল, মনে আছে আপনাদের। তত্ত্বাবধায়ক সরকার, কেয়ারটেকার গভর্নমেন্টের সময় কিন্তু নির্বাচনে কোনো মারামারি ছিল না। ভোটের সময় তো গ্রেপ্তার-টেপ্তার ছিল না। এখন আওয়ামী লীগ সরকার আসার পর তারা এটাকে বদলায় দেবে। বদলায় দিয়ে, তারা থাকবে সরকারে আর এদিকে নির্বাচন হবে। বলেননি তো দেখি, শেয়ালের কাছে মুরগি জমা দেওয়ার মতো না? তাই কি না বলেন। শেয়ালকে গিয়ে যদি বলেন ভাই মুরগিটা রাখেন, তো খাইয়া ফালাবে না? তো খাইয়া ফালাইছে তারা। আমাদের ভালো করা তো দূরে থাক, আমাদের কষ্টে রাখছে ভাই।মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এখানে ছেলেদের দেখতেছেন, খুব কম ছেলে আছে, যাদের বিরুদ্ধে মামলা নাই। শুধু মামলা আর হামলা। নিরীহ অসহায় মানুষগুলোর ওপর হামলা। কোনোদিন কোর্টের বারান্দাটা দেখে নাই। কোনোদিন জেলখানা দেখে নাই, তাকে এখন জেলে গিয়ে থাকতে হচ্ছে। এই অবস্থা থেকে মুক্তি চাই। আমার এলাকার বেশিরভাগ মানুষ হচ্ছে কৃষিজীবী। কৃষি করে খায়, তাই না। তো আওয়ামী লীগ কী বলছিল, বিনা পয়সায় সার দেবে বলছিল। বিনা পয়সায় সার দিছে? ৩০০ টাকার ইউরিয়া সার এখন ১২০০ টাকা।