একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচাল করতে আওয়ামী লীগ সরকার সব রকমের অপকর্ম করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ৩০ ডিসেম্বর নির্ধারিত হবে খালেদা জিয়ার মুক্তি হবে কি না, গণতন্ত্র মুক্তি পাচ্ছে কি না। আজ বুধবার বিকেলে বগুড়া সদরের বাঘোপাড়া শহীদ দানেশ উদ্দিন স্কুল ও কলেজ মাঠে নির্বাচনী পথসভায় এ অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বগুড়া-৬ (সদর) আসনে বিএনপির প্রার্থী। এর আগে ১৪ ও ১৫ ডিসেম্বর প্রায় ২৫টি পথসভা করেছিলেন তিনি।নির্বাচনী পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বিএনপির প্রিয় নেত্রী খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। আরেক জনপ্রিয় নেতা তারেক রহমানকে দেশের বাইরে রেখেছে সরকার। তিন দিন পরই জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এ দিন নির্ধারিত হবে খালেদা জিয়ার মুক্তি হবে কি না, গণতন্ত্র মুক্তি পাচ্ছে কি না, স্বাধীনতা মুক্তি পাচ্ছে কি না। এই নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে হবে।বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, ‘এই নির্বাচন শুধু নির্বাচন নয়, এটি বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে। নির্বাচনে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, এবারে গণতন্ত্র মুক্তি পাবে কি না। সরকার আমাদের দলীয় নেতা-কর্মীদের নির্যাতন করছে। এই সরকার জুলুমবাজ। এই সরকার বিরোধী নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করছে। আক্রমণ করছে। আহত করছে। এই সরকার নির্বাচন বানচাল করার জন্য সব রকমের অপকর্ম করছে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়া এই বগুড়ার পুত্রবধূ। তাঁকে মুক্ত করতে হলে সবাইকে ভোটকেন্দ্রে যেতে হবে। ধানের শীষে ভোট দিতে হবে। ভোটের দিনে কেন্দ্রে থাকতে হবে। ভোটকেন্দ্র পাহারা দিতে হবে। এই জুলুমের পরিবর্তন আনতে হবে। ধানের শীষে ভোট দেওয়ার মাধ্যমে সেই পরিবর্তন ঘটবে।

পথসভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন ঐক্যফ্রন্ট নেতা ও নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না। তিনি এবার নির্বাচনে বগুড়া-৩ (শিবগঞ্জ) আসনে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করছেন। পথসভায় তিনি বলেন, ‘জনগণ ১০ বছর ভোট দিতে পারেনি। ২০১৪ সালে নির্বাচনের নামে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। ভোটারবিহীন ভোট করেছে আওয়ামী লীগ। একটি দল মাঠে থেকে ভোট করেছিল। ফাঁকা মাঠে খেলেছিল। এই বারও তারা এ ধরনের ভোট করতে চেয়েছিল। বিরোধী দলকে ছাড়াই নির্বাচনের পরিকল্পনা ছিল। আবার ফাঁকা মাঠে নির্বাচিত হওয়ার ইচ্ছা ছিল। লুটপাট করার ইচ্ছা ছিল তাদের। কিন্তু ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনে অংশগ্রহণের কারণে সেটা আর হচ্ছে না। হতে দেওয়া হবে না। এবার মাঠ ফাঁকা থাকবে না। এবার মাঠে নামা হবে। দেখতে চাই এই সরকার মাঠে কত খেলতে পারে।মান্না আরও বলেন, ঐক্যফ্রন্টের নেতা-কর্মী দেখে সরকার মনে মনে ভয় পেয়ে গেছে। এই কারণে পুলিশ লেলিয়ে দেওয়া হয়েছে। নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। কিন্তু ভুলে গেলে চলবে না, ১০ জন গ্রেপ্তার করলে ১০ নেতা-কর্মী তৈরি হবে। তিন দিন ধৈর্য ধরতে হবে। আর কয়েক দিন পর ৩০ ডিসেম্বর হবে আসল খেলা।মান্না বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দায়িত্ব দেশ রক্ষা করার। আপনারা দেশ রক্ষা করেন। আওয়ামী লীগ দিনে দিনে অনেক ঋণ করেছে। ৩০ তারিখে সেগুলো পুষিয়ে নেওয়ার সময় এসেছে। সবাই ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ধানের শীষে ভোট দেবেন। কথা একটাই, ৩০ ডিসেম্বর লড়াইয়ের দিন। এই লড়াইয়ে জিততে হবে।