সদ্যবিদায়ী বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, এই সংসার আসা-যাওয়ার রঙ্গমঞ্চ। নতুনদের জায়গা করে দিতে হবে। নতুনদের নিয়ে যে মন্ত্রিপরিষদ গঠিত হয়েছে সেটা চমৎকার। আমরা তো এমপি হিসেবে সংসদে থাকবোই। এই সরকারের সফলতা কামনা করি।তিনি আরও বলেন, আমার কাছে মন্ত্রী নয়, এমপিই বড়। আমি পাঁচবার ডব্লিউটিও’র (ওয়ার্ল্ড ট্রেড অর্গানাইজেশন) কনফারেন্সে কো-অর্ডিনেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। আগামী ৫ বছর বাংলাদেশে অর্থনৈতিক বিজয় অর্জিত হবে, যা বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন। ২০২০ সালে বঙ্গবন্ধুর শততম জন্মদিন এবং ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী আমরা জমজমাটভাবে উদযাপন করবো। ২০৩০ সালে বাংলাদেশ হবে বিশ্বের ২৬তম অর্থনৈতিক দেশ।

সোমবার (৭ জানুয়ারি)সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। তোফায়েল বলেন, ২৮ বছর বয়সে প্রথম প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদায় রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধুর পলিটিক্যাল সেক্রেটারি নিযুক্ত হয়েছিলাম। পরবর্তীতে ‘৭২ থেকে ‘৭৫ সাল পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিশেষ সহকারী ছিলাম। এর ২১ বছর পর ‘৯৬ সালের ২৩ জুলাই শপথ নিয়ে ২৪ জুলাই সচিবালয়ে এসেছি। দীর্ঘ ৯ বছর আমি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলাম।তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগসহ মহাজোট বিপুলভাবে জয়ী হয়েছে। এরই মধ্যে তিনি বিশ্ববিখ্যাত, জননন্দিত, আন্তর্জাতিক নেতা হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন। এটি স্বাভাবিক যে নতুনদের জায়গা দিতে হয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সেই কাজটিই করেছেন।

সৈয়দ আশরাফের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের এই শুভক্ষণে সৈয়দ আশরাফ নেই, এটা আমাদের দুর্ভাগ্য। সৈয়দ আশরাফের জায়গা অন্য কাউকে দিয়ে পূরণ করা সম্ভব নয়।সোমবার দুপুরের পর শেখ হাসিনার চতুর্থ মেয়াদের সরকারের সদস্যরা শপথ নেন।এই সরকারে বাদ পড়েছেন গত সরকারের প্রবীণ মন্ত্রীদের প্রায় সবাই।নতুন সরকারের শপথের আগে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, সমাজকল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম আনুষ্ঠানিকভাবে নিজ নিজ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাছ থেকে বিদায় নেন।

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের এই সদস্য নতুন সরকারের সাফল্য কামনা করে বলেন, যারা মন্ত্রী হচ্ছেন তারা সবাই চমৎকার মানুষ, সৎ, পরীক্ষিত এবং দীর্ঘদিনের রাজনীতিক, এটা তাদের প্রাপ্য।বাণিজ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব নিতে যাওয়া টিপু মুনশিকে ‘বিনয়ী মানুষ’ উল্লেখ করে তার সফলতা প্রত্যাশা করেন বিদায়ী বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল।টানা দুই মেয়াদে সরকারে থাকা কামরুল বলেন, নতুনদের জন্য পুরাতনদের জায়গা ছেড়ে দিতে হয়।ভালো মন্ত্রিসভা হয়েছে’ মত দিয়ে তিনি বলেন, আশা করছি, উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে।

খাদ্যমন্ত্রী হিসেবে নতুন সরকারে যোগ দিচ্ছেন নওগাঁর সংসদ সদস্য সাধন চন্দ্র মজুমদার।দায়িত্ব পালনের শেষ দিনেও অটিজম আক্রান্তসহ প্রতিবন্ধীদের যেন কোনোভাবেই অবহেলা না করা হয়, মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন সমাজকল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন।

এ সংক্রান্ত আইন যথাযথভাবে অনুসরণ করতেও কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিয়ে যান তিনি।এতদিন প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা নুরুজ্জামান আহমেদ নতুন সরকারে সমাজকল্যাণমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন। ময়মনসিংহের সংসদ সদস্য শরীফ আহমেদকে করা হয়েছে সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী।