ভোটের ফলাফল প্রত্যাখানের পর এবার আওয়ামী লীগের নতুন সরকারের নতুন মন্ত্রিসভাকেও প্রত্যাখ্যান করার কথা জানিয়েছে বিএনপি।মঙ্গলবার নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, জনগণ এই নির্বাচনের ফলাফল কখনো মেনে নেয়নি। সেই নির্বাচনের ফলাফলের ভিত্তিতে সংসদ গঠন বা সরকার গঠন-এটা নিয়ে মন্তব্য করা তো হাস্যকর ছাড়া কিছু নয়।

গত ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাত্র সাতটি আসন পেয়েছে বিএনপিকে নিয়ে গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। অন্যদিকে ২৫৭ আসনের নিরঙ্কুশ জয় পাওয়া আওয়ামী লীগ টানা তৃতীয় মেয়াদে সরকার গঠন করেছে। বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্ট ভোটের ফল বাতিল করে নির্দলীয় সরকারের অধীনে পুনঃনির্বাচনের দাবি জানালেও নির্বাচন কমিশন তা নাকচ করে দিয়েছে।সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখান করেছি, সংসদ গঠন প্রত্যাখান করেছি এবং সরকার গঠন পুরোপুরিভাবে প্রত্যাখান করেছি।

আওয়ামী লীগের সরকার গঠনের অধিকার নেই- ফখরুলের এমন মন্তব্যের পর সাংবাদিকরা তাকে মনে করিয়ে দেন, ২০১৪ সালের নির্বাচনের পরও বিএনপি একই কথা বলেছিল। তারপরও আওয়ামী লীগ পূর্ণ মেয়াদে সরকার পরিচালনায় ছিল এবং দলীয় সরকারের অধীনেই বিএনপি এবার নির্বাচনে অংশ নিয়েছে।উত্তর দিতে গিয়ে ফখরুল বলেন, সেটা আলাদা ব্যাপার। আপনি দখলদারি। পাকিস্তান থাকে নাই? পাকিস্তান থাকছে তো, দেশ-বিদেশ তাকিয়ে দেখেন। সরকার তো থাকেই একটা; কিছু না কিছু থাকতে হবে। তার সঙ্গে এটাকে মিলিয়ে লাভ নেই।

নতুন সরকার গঠন করা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্বের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আপনি এটা চিন্তা করেন না কেন, গোটা জাতি ডিপ্রাইভড হয়ে গেছে। একবারও ভাবেন না যে গোটা বাংলাদেশ-জাতিটাকে এরা (ক্ষমতাসীনরা) প্রতারণা করল।একবারও আপনাদের মনে আবেগ আসে না যে আমরা ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার যুদ্ধ করেছি যে চেতনার ভিত্তিতে, সেই চেতনাকে আপনি ধুলিসাৎ করে দিয়ে মাত্র কিছু লোকের দখলদারিত্বের জন্য আজকে সরকার গঠন করেছেন, যাদের দিয়ে দেশ চালাবেন।

এ অবস্থায় বিএনপির আগামী রাজনৈতিক পদক্ষেপ নিয়ে জানতে চাইলে ফখরুল বলেন, ‘বিএনপি এখন যা করার তাই করবে।বিএনপি জনগণের দল, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি। গণতান্ত্রিক আন্দোলন করবে গণতান্ত্রিক সরকারের জন্য, জনগণের সরকারের জন্য।সংবাদ সম্মেলনের আগে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, নজরুল ইসলাম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য তৈমুর আলম খন্দকার, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, কেন্দ্রীয় সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, কায়সার কামাল, এবিএম মোশাররফ হোসেন, আবদুস সালাম আজাদ, ইসমাইল হোসেন বেঙ্গল, ফাহিমা নাসরিন মুন্নী, রুমিন ফারহানা, ডা. সাখাওয়াত হোসেন সায়ান্থ, হাফিজ ইব্রাহিম, শাহ নুরুল কবির শাহিন, রাশেদা বেগম হীরা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।