সাত দিনের নোটিস দিয়ে দেশের ২২টি জাতীয় মহাসড়ক থেকে ‘অবৈধ দখল’ উচ্ছেদের ঘোষণা দিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।তিনি বলেছেন, অবৈধ দখল আর অবৈধ পার্কিং এ দুটো উচ্ছেদে যদি আমরা সফল হতে পারি, তাহলে সড়ক পরিবহনে শধঙ্খলা অনেকটাই ফিরে আসবে। সে কাজটি আমরা হাতে নিয়েছি।

শুক্রবার দুপুরে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা ত্রিমোড় এলাকায় নির্মাণাধীন ফ্লাইওভারের কাজ পরিদর্শনে গিয়ে সাংবাদিকদের সামনে এ ঘোষণা দেন মন্ত্রী।তিনি বলেন, আমরা নিদ্ধান্ত নিয়েছি সড়কগুলোকে অবৈধ দখল মুক্ত করব। সাত দিনের নোটিস দিয়ে সারা বাংলাদেশে কাজটি শুরু হবে। আমি আজকেই এ ব্যাপারে নির্দেশ দিয়েছি। পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশকে বলা হয়েছে, কোনো অবস্থাতেই অবৈধ পার্কিং অ্যালাউ করা হবে না।

পদশের মহাসড়কগুলোতে বিভিন্ন জায়গায় রাস্তার পাশের জমিতে অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে হাট-বাজার, দোকানপাট। কোথাও কোথাও এলোপাতাড়ি গাড়ি রেখে ট্রাক স্ট্যান্ড বানিয়ে ফেলা হয়েছে।এসব অবৈধ স্থাপনা ও ট্রাক স্ট্যন্ডের কারণে সড়ক সংকীর্ণ হচ্ছে এবং ভিড়ের কারণে দূর পাল্লার যানবাহনের গতি কমে যাচ্ছে। গাড়ির চাপ সামান্য বাড়লেই তৈরি হচ্ছে দীর্ঘ যানজট, দুর্ঘটনাও ঘটছে অহরহ।

গত সাত বছর ও সেতু মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব চালিয়ে আসা ওবায়দুল কাদের এর আগেও বিভিন্ন সময়ে সড়ক অবৈধ দখলমুক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছেন। কিন্তু অনেক জায়গায় স্থানীয় ব্যবসায়ী ও প্রভাবশালীদের বাধার মুখে পড়তে হয়েছে ম্যাজিস্ট্রেটদের। উচ্ছেদ চালানো হলেও অল্প দিনের মধ্যে রাস্তা ফিরে গেছে আগের চেহারায়। নতুন মেয়াদে একই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিয়ে ওবায়দুল কাদের ইতোমধ্যে সড়কে শৃঙ্খলা ফেরানোর বিষয়ে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলেছেন।

চন্দ্রা ত্রিমোড়ে ফ্লাইওভারের কাজ দেখার পর তিনি সাংবাদিকদের বলেন, জনগণকে স্বস্তি দিতে সড়কে নিরাপত্তার জন্য এটা অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে। এ বার্তাটাই আমি জনগণকে দিতে চাই।মন্ত্রী বলেন, মানুষের জীবন আগে, জীবিকা পরে। আমি যদি বাঁচতেই না পারি তাহলে জীবিকার সন্ধান কী করে হবে! গরিব মানুষ জীবিকার কথা আগে ভাবে। কিন্তু তারা জীবনের কথা ভাবে না।পছাট ছোট যানগুলো যখন এক্সিডেন্ট হয়, তখন চালক ও আরোহী সকলেই মারা যান। বড় গাড়ির সঙ্গে ছোট গাড়ির একটু টোকা লাগলেই মারাত্মক অ্যাক্সিডেন্ট ঘটে। বর্তমানে এক্সিডেন্টের হার কমে গেলেও মৃত্যুর হার বেড়ে গেছে।

নির্বাচন নিয়ে ঐক্যফ্রন্টের সংলাপের দাবিকে হাস্যকর বলে অভিহিত করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, সারা বিশ্ব একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে স্বীকৃতি দিয়েছে। দুনিয়ার সব গণতান্ত্রিক দেশই বাংলাদেশের এই নির্বাচনকে স্বীকৃতি দিয়েছে, প্রশংসা করেছে। এমতাবস্থায় এ নির্বাচন নিয়ে জাতীয় সংলাপের দাবি হাস্যকর ছাড়া আর কিছুই নয়।

মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ কী বললো সেটা হলো বড় কথা। তারা (বিএনপি-ঐক্যফ্রন্ট) কী বললেন তাতে আমাদের কিছু আসে যায় না। ‘৭০-এর পর নৌকার পক্ষে এমন গণজোয়ার কেউ আর দেখেনি। জনগণ বিপুলভাবে শেখ হাসিনার উন্নয়ন, গণতন্ত্র এবং সততার পক্ষে রায় দিয়েছেন। এই নির্বাচন যদি তারা মনে করে সঠিক নয় তারা বলতেই পারে। আমরা বলবো দেশের জনগণ বিপুল ভোটে আওয়ামী লীগ-মহাজোটকে জয়ী করেছে। কাজেই এই নির্বাচন নিয়ে কোনও প্রশ্ন পৃথিবীর কোথাও নেই এবং বাংলাদেশেও নেই। জনগণের মাঝেও নেই। তাদের জনগণ ভোট না দিয়ে প্রত্যাখ্যান করেছে। এখন তারা নানা দাবি জানিয়ে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করছে।’

মন্ত্রী আরও বলেন, ‘তারা যে সংসদে নির্বাচিত হয়ে আসবে না এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এটাও তো অবৈধ। এটার কি বৈধতা আছে? জনগণের রায়কে যারা অসম্মান করেছে সেটা কি বৈধ? আমি যদি প্রশ্ন করি কি জবাব তারা দেবে। তারা আগে সংসদে আসুক। অধিবেশনে যোগ দিক। ৩০ তারিখ আমি তাদের আহ্বান করছি সংসদে যোগ দেওয়ার জন্য।

সড়ক ও জনপথ ঢাকা বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সবুজ উদ্দিন, গাজীপুর সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাইফ উদ্দিন এ সময় মন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন।