নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার আমগ্রাম গ্রামে ডাকাতি ও খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন গ্রেফতারকৃত ময়নুল ইসলাম। ডাকাতির সঙ্গে সরাসরি জড়িত থাকলেও নিজের অপরাধ আড়াল করতে এবং ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকতে ওই রাতেই নিজের বাড়িতে ডাকাতির নাটক সাজায় এই ময়নুল ইসলাম।

গ্রেফতারকৃত ময়নুল ইসলামকে গত বৃহস্পতিবার আদালতে হাজির করলে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দিয়েছে বলে জানিয়েছেন রাণীনগর থানা পুলিশ। গ্রেফতারকৃত মো: ময়নুল ইসলাম উপজেলার কালীগ্রাম ইউনিয়নের সিলমাদার গ্রামের মো: সামাদের ছেলে।

ডাকাতি ও খুনের ঘটনায় সাথে জড়িত থাকায় মো: খুবসুরত (৫০) নামে আরো একজন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার রাতে উপজেলার আবাদপুকুর এলাকা থেকে খুবসুরতকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত খুবসুরতকে রবিবার দুপুরে জেলা হাজতে পাঠানো হয়েছে। গ্রেফতারকৃত খুবসুরত উপজেলার ভেটি উত্তরপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুর রহমান এর ছেলে।

উল্লেখ্য, গত সোমবার রাত অনুমানিক ২ টার দিকে আমগ্রাম গ্রামের আলহাজ্ব মজিবর রহমানের বাড়িতে ২৫-৩০ জনের ডাকাতের দল বাড়ির দরজা ভেঙ্গে বাড়ির মধ্যে প্রবেশ করে। এ সময় নগদ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার লুট করে ডাকাতরা। গ্রামবাসী বিষয়টি জানার পর ডাকাতদের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করলে বাড়িওয়ালার ভাগ্নে মোফাজ্জল হোসেনকে ছুরিকাঘাত করে। আহত অবস্থায় মোফাľল হোসেনকে উদ্ধার করে নওগাঁ সদর হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় আরো ৪ জন আহত হয়েছেন।

রাণীনগর থানার ওসি এএসএম সিদ্দিকুর রহমান জানান, ডাকাতিকালে বাধা দিতে গেলে খুন হয় আমগ্রাম গ্রামের মোফাজ্জল হোসেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ জানতে পারেন পার্শ্ববর্তী সিলমাদার গ্রামেও ময়নুল ইসলামের বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টিকে আমলে নিয়ে সিলমাদার গ্রামে ময়নুলের বাড়িতে গেলে আমগ্রাম গ্রামের ঘটনার সঙ্গে ময়নুলের ঘটনার অনেক মিল পাওয়া যায়। এরপর তদন্তকালে তিনি জানতে পারেন গ্রামের লোকজন তো দুরের কথা নিজের বাড়ির লোকজনও জানে না ময়নুলের বাড়িতে ডাকাতি হয়েছে।

এ বিষয়টি জানার পর আমগ্রাম গ্রামে ডাকাতি ও খুনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে এমন সন্দেহ করে ময়নুলকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য প্রাথমিক ভাবে আটক করা হয়। তাকে বৃহস্পতিবার আদালতে হাজির করলে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে খুন ও ডাকাতির সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে। খুন ও ডাকাতির সঙ্গে কারা জড়িত ছিল তাও জানিয়েছেন। এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকায় শনিবার রাতে খুবছোরত নামে আরো একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়াও পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।