সংলাপে বসার আহবান জানানোর একদিন বাদেই উল্টো খবর দিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।তিনি বলেছেন, নির্বাচন নিয়ে সংলাপের কোনো বিষয় এখন নেই।কেবল শুভেচ্ছা বিনিময়ের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে ডাকা হবে।

সোমবার (১৪ জানুয়ারি) বিকেলে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আগামী ১৯ জানুয়ারি একাদশ সংসদ নির্বাচনের বিজয় সমাবেশ উপলক্ষে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপের কোনো বিষয় নেই। আমাদের দলের সভাপতি শেখ হাসিনা নির্বাচনের আগে ৭৫টি দলের সঙ্গে সংলাপে বসেছিলেন। নির্বাচনের পর সেই দলগুলোর সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়ের জন্য চিঠি দেওয়া হবে।

একাদশ সংসদ নির্বাচনের ফল প্রত্যাখ্যানের পর জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নতুন নির্বাচনের পথ তৈরি করতে সংলাপের আহ্বান জানিয়েছিল সরকারকে। সে প্রেক্ষাপটে কাদের রোববার সাংবাদিকদের বলেছিলেন, যেসব দল ও জোটের সাথে সংলাপ হয়েছিল, তাদেরকে আবার চিঠি দিয়ে সংলাপে ডাকবেন তিনি (প্রধানমন্ত্রী)।এবারের নির্বাচনের আগে বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টসহ বিভিন্ন দলের সঙ্গে সংলাপ করেছিলেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে সেই সংলাপ ‘অর্থবহ হয়নি’ বলে মনে করেন বিএনপি নেতারা।কাদেরের মুখে নতুন করে সংলাপের খবর শুনে তার প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সোমবারই বলেন, আলোচনার বিষয়বস্তু জানা গেলে তারা এই আলোচনার প্রস্তাব বিবেচনা করবেন।এরপর একইদিন ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় বলেন, নির্বাচন নিয়ে সংলাপের কোনো বিষয় নেই।

ওবায়দুল কাদের বলেন, যে নির্বাচন নিয়ে গণতান্ত্রিক বিশ্বে কোনো সংশয় নেই, বিশ্ব নেতারা যেখানে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন, সেখানে নির্বাচন নিয়ে সংলাপের দাবি হাস্যকর। নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলগুলোকে আমাদের সভাপতি আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। তাই সেই দলগুলোকে আবারও আমন্ত্রণ জানাতে চান নির্বাচন পরবর্তী শুভেচ্ছা বিনিময়ের জন্য। দলগুলোকে আবার চিঠি দেওয়া হবে। আবারো বলছি এখানে সংলাপের কোনো বিষয় নেই।দলের ভেতর কিছু সমস্যা রয়েছে বলে উল্লেখ করে বলেন, আমাদের মহানগর ও সারাদেশে দলের ভেতর কিছু সমস্যা রয়েছে। যে সমস্যা অতিক্রমযোগ্য।

স্থগিত হওয়া ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচন খুব শিগগিরই হবে ইঙ্গিত দিয়ে বলেন, আমি আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি শিগগিরই ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া জেলা পরিষদের নির্বাচন আসছে। এজন্য দলকে আরো সংগঠিত করার জন্য নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান কাদের।আগামী ১৯ জানুয়ারি সব নেতাকর্মীকে সারিবদ্ধভাবে সমাবেশস্থলে উপস্থিত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমাদের বিশাল বিজয়, বিশাল দায়িত্ব। এই বিজয়ের পর আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ সরকারের মধ্যে দল যেন হারিয়ে না যায়। আমাদের দলীয় সত্তা সবার উপরে। মেয়র সাঈদ খোকন বলেন, এই বিজয় সর্বকালের সবচেয়ে বড় বিজয়। বিজয়কে স্মরণীয় করে রাখতে এই আয়োজন।সবার অংশগ্রহণে ঐতিহাসিক বিজয় সমাবেশ উদযাপন করতে চাই। সারা শহর জনসমুদ্রে রূপান্তর করে প্রমাণ করতে চাই, ঢাকা শহর শেখ হাসিনার ছিল, আছে, থাকবে।ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ দক্ষিণের সভাপতি আবুল হাসনাতের সভাপতিত্বে বর্ধিত সভায় বক্তব্য রাখেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান।