গাজীপুরে সদ্য সমাপ্ত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ধানের শীষের এমপি প্রার্থী ও জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদলের কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যকরী সভাপতি সালাহ উদ্দিন সরকারসহ মহানগর বিএনপির ৫ নেতাকে মঙ্গলবার কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার একটি মামলায় জামিন চাইতে গেলে আদালত তাদের জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করেন। ইতোপূর্বে এ মামলায় হাজিরা দিয়ে ওই ৫জনসহ বিএনপি’র ২৪ জন নেতা-কর্মী আদালত থেকে পালিয়েছিলেন। মঙ্গলবার কারাগারে প্রেরিত অন্য চারজন হলেন- গাজীপুর মহানগর বিএনপির সহসভাপতি আহমদ আলী রুশদী, সদর থানা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সুরুজ আহমেদ, জেলা শ্রমিক দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আক্তারুজ্জামান বাবুল ও মহানগর বিএনপি নেতা মোঃ দেলোয়ার হোসেন।

গাজীপুর আদালতের আইনজীবী নাহীন আহমেদ মমতাজী জানান, সরকারি কাজে বাধা দেয়ার একটি মামলায় মঙ্গলবার গাজীপুর চিফ জুডিশিয়াল আদালতে জামিন চাইতে যান সালাহ উদ্দিন সরকারসহ ৫ বিএনপি নেতা। শুনানী শেষে আদালত তাদের জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ প্রদান করেন।

উল্লেখ্য, সদ্য অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনের আগে গত ২০ ডিসেম্বর এ মামলায় আদালতে হাজিরা দিয়ে পালিয়ে গিয়ে গ্রেফতার এড়ান গাজীপুর-২ আসনের বিএনপির প্রার্থী সালাহউদ্দিন সরকারসহ ২৪ নেতাকর্মী। এদিন এ মামলার অন্য ১২ জন আদালতে হাজির হয়ে জামিন প্রার্থনা করলে আদালত তাদেরকে কারাগারে প্রেরণ করেন এবং পলাতকদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।

গাজীপুর আদালতের পরিদর্শক মো. রবিউল ইসলাম বলেন, তারা সবাই গাজীপুরের জয়দেবপুর থানার (২০১৪ সালে সরকারি কাজে বাধা প্রদানের) একটি মামলার আসামি। ইতোপূর্বে তারা আদালত থেকে পুলিশ রিপোর্ট (চার্জশিট) প্রদান পর্যন্ত জামিনে ছিলেন। দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর ওই মামলার ৫ জন আসামী মঙ্গলবার আদালতে জামিন প্রার্থনা করলে আদালত তাদের জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করেন।

মামলা ও চার্জশীট সূত্রে জানা গেছে, গাজীপুর শহরের রাজবাড়ি রোডস্থ দলীয় কার্যালয়ের সামনে ২০১৪ সালের ৯ নবেম্বর বিএনপির পূর্ব ঘোষিত কেন্দ্রীয় কর্মসূচী চলাকালে নিজেরা নিজেরা মারামারি করতে থাকে। এসময় পুলিশ আইন শৃংঙ্খলা ও জানমাল রক্ষার স্বার্থে শর্টগানের গুলি এবং টিয়ার সেল নিক্ষেপ করে। এসময় বিএনপির নেতাকর্মীরা পুলিশের উপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ এবং সরকারি কাজে বাধা প্রদান করে। এ ঘটনায় জয়দেবপুর থানার এসআই মাহমুদ হাসান বাদি হয়ে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান অধ্যাপক এমএ মান্নানসহ দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে একটি মামলা [৫২ (১১) ২০১৪] দায়ের করেন। দীর্ঘ তদন্ত শেষে তদন্ত কর্মকর্তা এসআই এনায়েত হোসেন গত ১৯ আগষ্ট এ মামলায় ৪০জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন।

এ দিকে বিএনপির ৫ নেতাকে কারাগারে পাঠানোর নিন্দা জানিয়েছেন গাজীপুর মহানগর বিএনপির সভাপতি হাসান উদ্দিন সরকার, সাধারণ সম্পাদক মোঃ সোহরাব উদ্দিন সরকার ও সহসভাপতি আফজাল হোসেন কায়সার । তারা অবিলম্বে নেতৃবৃন্দের মুক্তি দাবি করেন।