কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে বগুড়া থেকে গণআন্দোলন শুরুর আহ্বান জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।বুধবার দুপুরে ঠাকুরগাঁও থেকে ঢাকা ফেরার পথে বগুড়ার শহরতলির বকুল এলাকায় একটি হোটেলে জেলা বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে তিনি এ আহ্বান জানান।মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের কারণে মিথ্যা মামলায় খালেদা জিয়া আজ জেলে আর তারেক রহমান বিদেশে। তাই খালেদা জিয়াকে জেল থেকে বের করতে, তারেক রহমানকে দেশে আনতে ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে বগুড়া থেকেই ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন শুরু করতে হবে।

৩০ ডিসেম্বর তামাশার নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ গণবিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেশ আজ গভীর সংকটে। এর আগে এ রকম অবস্থা আর হয়নি। একাদশ নির্বাচনে মানুষের আশা-আকাঙ্খার প্রতিফলন হয়নি।নির্বাচনব্যবস্থাকে ধ্বংস করা হয়েছে। নির্বাচনের নামে তামাশা করা হয়েছে। তাই ফল প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। সব দলকে ঐক্যবদ্ধ করে বলেছি- নির্বাচন বাতিল করতে হবে।

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচন বয়কট করার সিদ্ধান্ত যে সঠিক ছিল, ২০১৮ সালের নির্বাচন তা প্রমাণ করেছে।তিনি বলেন, একাদশ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ পরাজিত হয়েছে। কারণ জনগণ ভোট দিতে পারেনি। এমনকি আওয়ামী লীগের ভোটাররাও ভোট দিতে পারেননি। এ কারণে আজ সারা দেশে বিএনপি ও ধানের শীষের গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে।

নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের বক্তব্যকে চোরের মার বড় গলা’ আখ্যায়িত করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ভোট ডাকাতি করে জয়লাভ করে তারা এখন বলছেন- তারা দেশে জনপ্রিয়।কিন্তু জরিপ বলছে, ৯৯ শতাংশ মানুষ বিএনপির পক্ষে। তাই আওয়ামী লীগ এখন গণশত্রুতে পরিণত হয়েছে।আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি।

এদিকে, বগুড়ায় বুধবার দুপুরের শহরতলির গোকুলে হোটেল মম ইন-এ যাত্রা বিরতির সময় ফখরুলের সামনেই লিফটে বাক-বিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন জেলা বিএনপির দুই নেতা। বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি সাইফুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন চাঁন বাক-বিতন্ডায় এক পর্যায়ে হাতাহাতিতে পর্যায়ে পৌঁছান। এসময় ফখরুল ইসলাম সভাপতি সাইফুলকে নিবৃত করেন।এ নিয়ে উভয় নেতার সমর্থকদের মাঝে উত্তেজনা দেখা দেয়। তবে কী কারণে তাদের মধ্যে এ অবস্থার সৃষ্টি হয় সে সম্পর্কে কেউ কিছু বলতে রাজি হননি। ফোন বন্ধ রাখায় জেলা বিএনপির সভাপতি সাইফুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন চাঁনের কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে সাইফুলের সমর্থক আবুল কালাম আজাদ এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন।

ঠাকুরগাঁও থেকে সড়ক পথে ঢাকায় ফেরার পথে বুধবার দুপুরে বগুড়া শহরতলির গোকুলে হোটেল মম ইন-এ যাত্রা বিরতিকালে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি সাইফুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদিন চাঁন, সাবেক এমপি গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট একেএম মাহবুবুর রহমান, সাবেক সভাপতি রেজাউল করিম বাদশাহ, বগুড়া শহর বিএনপির সভাপতি মাববুবুর রহমান বকুল, সাধারণ সম্পাদক হামিদুল হক চৌধুরী হিরু প্রমুখ।