ঢাকা শহরে যারা বায়ুদূষণের কারণ সৃষ্টি করছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সপ্তাহে দুইবার ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে পরিবেশ অধিদপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। জনস্বার্থে করা এক রিট আবেদনের শুনানি শেষে আজ সোমবার বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান এবং বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালত বলেছেন, রাজধানীর যেসব জায়গায় উন্নয়ন ও সংস্কার কাজ চলছে, সেসব জায়গা আগামী ১৫ দিনের মধ্যে এমনভাবে ঘিরে ফেলতে হবে, যাতে ধুলো ছড়িয়ে বায়ু দূষণ বাড়াতে না পারে। পাশাপাশি ‘ধুলোবালি প্রবণ’ এলাকাগুলোতে দিনে দুই বার করে পানি ছিটাতে হবে। ঘেরাওয়ের নির্দেশনা বাস্তবায়নের বিষয়ে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও ঢাকা সিটি করপোরেশনের দুই মেয়র ও নির্বাহী কর্মকর্তাকে প্রতিবেদন দিতে বলেছেন হাইকোর্ট।

বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে ঢাকার বায়ুদূষণ নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে গত রোববার পরিবেশ ও মানবাধিকার সংগঠন ‘হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ’ হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এই রিট আবেদন করেন। আজ এই রিটের শুনানি হয়। রিটের পক্ষে আদালতে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মঞ্জিল মোরসেদ।

মনজিল মোরসেদ রিটের শুনানিতে আদালতে বলেন, সংবিধানের ১৮ অনুচ্ছেদ, পরিশে আইন ১৯৯৫ এবং পরিবেশ বিধিমালা ১৯৯৭-এ বায়ুদূষণ রোধ সংক্রান্ত পদক্ষেপের নির্দেশনা দেওয়া থাকলেও কর্তৃপক্ষ ঢাকা শহরের বায়ূ দূষণ প্রতিরোধে ব্যর্থ হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০১৯ সালের প্রতিবেদনে বিশ্বের সর্বোচ্চ ১০টি বায়ূদূষণকারী শহরের মধ্যে ঢাকা তৃতীয় হয়েছে। বর্তমানে যেভাবে বায়ু দূষিত হচ্ছে তাতে আমাদের সবারই বেঁচে থাকার অধিকার লঙ্ঘিত হবে।

আদালত অন্তর্বর্তীকালীন আদেশের পাশাপাশি হাইকোর্ট একটি রুলও জারি করেছেন। রুলে ঢাকা শহরের বায়ুদূষণ রোধে প্রশাসনের ‘নিষ্ক্রিয়তা’ কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না এবং ঢাকা শহরের বায়ুদূষণ বন্ধে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না- তা জানতে চাওয়া হয়েছে ওই রুলে। পরিবেশ সচিব, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, দুই সিটি করপোরেশনের মেয়র ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাসহ মোট ১১ জন বিবাদীকে দুই সপ্তাহের মধ্যে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।