রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী জাহাজের সুরক্ষায় নতুন একটি আইনের খসড়া অনুমোদন দিয়েছে সরকার, যেখানে এসব জাহাজে ৫০ শতাংশ পণ্য পরিবহনের বিধান রাখা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সোমবার তার কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে বাংলাদেশ পতাকাবাহী জাহাজ (সুরক্ষা) আইন, ২০১৯’ এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম পরে সাংবাদিকদের বলেন, ১৯৮২ সালের অধ্যাদেশ অনুযায়ী সমুদ্রপথে পরিবাহিত পণ্যের ৪০ শতাংশ পতাকাবাহী জাহাজে পরিবহনের বিধান ছিল।

উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী মার্শাল ল’ আমলের আইনকে বাংলায় রূপান্তর করে নতুন করে করা হচ্ছে। নতুন আইনে সমুদ্রপথে পরিবাহিত পণ্যের ৫০ শতাংশ পতাকাবাহী জাহাজে পরিবহনের প্রস্তাব করা হয়েছে।

বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন যেসব জাহাজ পরিচালনা করে সেগুলোতে বাংলাদেশের পতাকা থাকায় এগুলোকে পতাকাবাহী জাহাজ হিসেবে গণ্য করা হয়। বাংলাদেশের ৫০টির মত পতাকাবাহী জাহাজ রয়েছে।সমুদ্রপথে ৫০ শতাংশ পণ্য বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজে পরিবহনের বিধানটি বাধ্যতামূলক নয় জানিয়ে সচিব শফিউল বলেন, যদি পরিবহন করতে না পারে তবে ওয়েবার দেওয়া হবে। এর মধ্য দিয়ে মূলত সরকারি করপোরেশনকে প্রোমোট করা হবে।”

কোনো জাহাজ এই আইনের কোনো বিধান লঙ্ঘন করলে ওই জাহাজ কর্তৃপক্ষকে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা হবে। অধ্যাদেশে জরিমানার পরিমাণ নির্ধারণ করা ছিল না।

রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের (ইপিজেড) কারখানাগুলোতে ট্রেড ইউনিয়নের আদলে ‘শ্রমিক কল্যাণ সমিতি’ গঠনে শ্রমিকদের সমর্থনের হার ১০ শতাংশ কমানোর প্রস্তাবে গত ৩ ডিসেম্বর সায় দেয় মন্ত্রিসভা।

ওই সময় সংসদ অধিবেশন বহাল না থাকায় ‘বাংলাদেশ ইপিজেড শ্রম আইন, ২০১৯’ গত ১৫ জানুয়ারি অধ্যাদেশ আকারে জারি করে সরকার।ওই অধ্যাদেশকে বিল আকারে সংসদে তুলতে সোমবারের মন্ত্রিসভায় তোলা হলে তা অনুমোদন দেওয়া হয় বলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান।

এদিকে, গত বছরের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর মাসে মন্ত্রিসভায় নেওয়া সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের হার তার আগের বছরের একই সময়ের থেকে ১০ দশমিক ৪৭ শতাংশ পয়েন্ট কমেছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সোমবার তার কার্যালয়ে মন্ত্রিসভা বৈঠকে ২০১৭ ও ২০১৮ সালের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর মাসে মন্ত্রিসভায় নেওয়া সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের হারের তুলনামূলক প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।

সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম জানান, গত অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর মাসে নয়টি মন্ত্রিসভা বৈঠকে ৮৩টি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর মধ্যে বাস্তবায়ন হয়েছে ৫৬টির, ২৭টি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নাধীন। সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের হার ৬৭ দশমিক ৪৬ শতাংশ।

২০১৭ সালের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর মাসে আটটি মন্ত্রিসভা বৈঠক হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ওই সময়ে সিদ্ধান্ত হয় ৬৮টি, যার মধ্যে বাস্তবায়িত হয়েছে ৫৩টি। আর ১৫টি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নাধীন। বাস্তবায়নের হার ছিল ৭৭ দশমিক ৯৪ শতাংশ।শফিউল জানান, গত অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর মাসে মন্ত্রিসভা বৈঠকে পাঁচটি চুক্তি বা সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) এবং সাতটি নীতি বা কর্মকৌশল অনুমোদিত হয়েছে। আর সংসদে পাস হয়েছে ১৯টি আইন। আর ২০১৭ সালের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর মাসে মন্ত্রিসভা বৈঠকে আটটি চুক্তি বা সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) এবং একটি নীতি বা কর্মকৌশল অনুমোদিত হয়েছিল। ওই সময়ে সংসদে তিনটি আইন পাস হয়।