২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের জনসভায় ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা মামলায় দুই বছরের দ-প্রাপ্ত সাবেক দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে আত্মসমর্পণের পর কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। আসামিরা হলেন, ঢাকা মহানগর পুলিশের সাবেক ডিসি (পূর্ব) মো. ওবায়দুর রহমান ও সাবেক ডিসি (দক্ষিণ) খান সাইদ হাসান। সোমবার (২৮ জানুয়ারি) তারা ঢাকার দ্রুত বিচার-১ নম্বর ট্রাইব্যুনালে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন।

শুনানি শেষে সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্রুনালের বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।গত ১০ অক্টোবর একই আদালত এ দুই আসামিকে তিন ধারার প্রত্যেকটিতে দুই বছর করে কারাদ- দেন।

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের জনসভায় ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায় প্রয়াত প্রেসিডেন্ট জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আওয়ামীলীগ নেত্রী আইভি রহমানসহ ২৪জন নির্মমভাবে নিহত হন। আহত হন আরও শতাধিক নেতাকর্মী।২১ আগস্ট গ্রেনেড মামলা মামলায় মোট আসামি ৫২ জন। তবে মামলা বিচারকালীন জামায়াত নেতা আলী আহসান মুহাম্মাদ মুজাহিদের মানবতা বিরোধী অপরাধের মামলায় এবং হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি হান্নান ও শরিফ শাহেদুল ইসলাম বিপুলের ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর উপর হামলার মামলায় মৃত্যুদ- কার্যকর হওয়ায় ৪৯ আসামির বিচার হয়।

আসামিদের মধ্যে ৩১ জন কারাগারে আছেন। তারা হলেন, সাবেক স্বরাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টুসহ, মুফতি হান্নানের ভাই মুহিবুল্লাহ মফিজুর রহমান ওরফে অভি, মাওলানা আবু সাইদ ওরফে ডাক্তার জাফর, আবুল কালাম আজাদ ওরফে বুলুবুল, মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, হাফেজ মাওলানা আবু তাহের, শাহাদত উল্যাহ ওরফে জুয়েল, হোসাইন আহমেদ তামিম, মইনুদ্দিন শেখ ওরফে আবু জান্দাল, আরিফ হাসান সুমন, মো রফিকুল ইসলাম সবুজ, মোঃ উজ্জল ওরফে রতন, হরকাতুল জিহাদ নেতা আব্দুল মালেক ওরফে গোলাম মোহাম্মাদ ওরফে জিএম, শেখ আব্দুস সালাম, কাশ্মিরী নাগরিক আব্দুল মাজেদ ভাট, আব্দুল হান্নান ওরফে সাব্বির, মাওলানা আব্দুর রউফ ওরফে পীর সাহেব, মাওলানা শাওকত ওসমান ওরফে শেখ ফরিদ, আবু বকর ওরফে হাফেজ সেলিম হাওলাদার, হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া, জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআই এর সাবেক মহাপরিচালক আবদুর রহিম, রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ভাগ্নে লে. কমান্ডার (অব.) সাইফুল ইসলাম ডিউক, সাবেক আইজিপি মো. আশরাফুল হুদা, শহিদুল হক ও খোদা বক্স চৌধুরী এবং মামলাটির তিন তদন্ত কর্মকর্তা সাবেক বিশেষ পুলিশ সুপার রুহুল আমিন, সিআইডির সিনিয়র এএসপি মুন্সি আতিকুর রহমান, এএসপি আব্দুর রশীদ ও সাবেক ওয়ার্ড কমিশনার আরিফুল ইসলাম।

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ভাগ্নে লে. কমান্ডার (অব.) সাইফুল ইসলাম ডিউক, সাবেক আইজিপি মো. আশরাফুল হুদা, শহিদুল হক ও খোদা বক্স চৌধুরী এবং মামলাটির তিন তদন্ত কর্মকর্তা সাবেক বিশেষ পুলিশ সুপার রুহুল আমিন, সিআইডির সিনিয়র এএসপি মুন্সি আতিকুর রহমান, এএসপি আব্দুর রশীদ ও সাবেক ওয়ার্ড কমিশনার আরিফুল ইসলাম জামিনে ছিলেন। মামলার যুক্তিতর্কের শেষদিন তাদের জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানো হয়।

এ মামলায় ১৮ আসামি পলাতক ছিলেন। তারা হলেন, বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, বর্তমান বিএনপির এমপি কাজী শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন কায়কোবাদ, সাবেক উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টুর ভাই মাওলানা তাজউদ্দিনসহ, মহিবুল মুত্তাকিন ওরফে মুত্তকিন, আনিসুল মুরছালিন ওরফে মুনছালিন, মো. খলিল, জাহাঙ্গীর আলম বদর, মোঃ ইকবাল, লিটন ওরফে মাও. লিটন, সবেক ডিসি পূর্ব মো. ওবায়দুর রহমান, সবেক ডিসি দক্ষিণ খান সাইদ হাসান, লে. কর্নেল (অব.) সাইফুল ইসলাম জোয়ারদার, মেজর (অব.) এটিএম আমিন, হানিফ এন্টার প্রাইজের মালিক মো. হানিফ, শফিকুর রহমান, আব্দুল হাই ও বাবু ওরফে বাতুল বাবু।