ঢাকার ধামরাই উপজেলায় অপহরণের চারদিন পর শিশু মনির (৫) হোসেনের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকালে আফাজ উদ্দিন স্কুল এন্ড কলেজের পাশের একটি পুকুরের পাশ থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।

নিহত শিশু উপজেলার ছোট আশুলিয়া গ্রামের সোনা মিয়া ওরফে কালা মিয়ার ছেলে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন-উপজেলার ছোট আশুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা মুদি দোকানদার মাজেদুল ইসলাম (৩০) ও জয়পুরা গ্রামের বাসিন্দা মানছুর মিয়া (৩৫)। তবে অপহরণের মূলহোতা রাব্বিকে এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।

ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. সাইদ হোসেন জানান, গত ২৬ জানুয়ারি শনিবার সকাল ১০টার দিকে শিশু মনির হোসেন খেলতে যায়। এ সময় মনিরকে ডেকে নিয়ে নেশা জাতীয় চকলেট খাওয়ানোর পর তাকে অচেতন করে রাব্বি, মাজেদুল ও মানছুর। পরে তার হাত-পা ও মুখে স্কচটেপ পেঁচিয়ে বস্তার ভেতর ঢুকিয়ে রাব্বিদের বাড়ির পাশে একটি পুকুরে ফেলে রাখা হয়।

এরপর সন্ধ্যায় মনির বাড়ি না ফেরায় তাকে সব জায়গায় খোঁজাখুজি করতে থাকে তার পরিবার। পরে রাত ৮টার দিকে মনির হোসেনের বাবা বিদেশ ফেরত সোনা মিয়ার মোবাইলে ফোন করা হয়। এ সময় তার কাছে ছেলের মুক্তিপণ হিসেবে ১০ লাখ টাকা দাবি করে অপহরণকারীরা। কিন্তু মুক্তিপণ না দিলে ছেলেকে মেরে ফেলা হবে বলে জানানো হয়। পরে রাত ১১টার দিকে সোনা মিয়া ধামরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দিপক চন্দ্র সাহার কাছে বিষয়টি খুলে বলে। পরে ওসির পরামর্শে তিনি থানায় একটি মামলা দায়ের করেন বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।

এএসপি আরও জানান, মঙ্গলবার সকালে জয়পুরা এলাকা থেকে অপহরণকারী মানছুরকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার কথার পরিপ্রেক্ষিতে অপর অপহরণকারী মাজেদুলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাদের সঙ্গে নিয়ে শিশু মনিরের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ সময় লাশটির হাত-পা ও মুখ লাল রংয়ের স্কচটেপ দিয়ে পেঁচানো ছিল। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।

ধামরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দিপক চন্দ্র সাহার বলেন, ‘এ ঘটনায় তিনজনকে এজাহারভুক্ত ও কয়েকজনেক অজ্ঞাতনামা আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। মামলা নম্বর (৩৪)। ইতিমধ্যে আমরা দুজনকে গ্রেপ্তার করেছি, বাকিদেরও গ্রেপ্তার করা হবে। ধামরাই সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাহাবুদ্দিন বলেন, ‘এমন মর্মান্তিক ঘটনা যারা ঘটিয়েছে সেই খুনিদের মৃত্যুদণ্ড দাবি করছি। তাদের শাস্তি দেখে যেন আর কোনো নিষ্পাপ শিশুর অকাল মৃত্যু না হয়।’