৫ দিন অপহরণ করে আটক করে রাখার পর জনৈক এক চেয়ারম্যানের মাধ্যস্থতায় উদ্ধার আদিবাসী তরুনী। মেয়েকে অপহরণ ও সর্বস্ব লুটে নেয়ার ঘটনায় মা ফরিদা কুবি বাদী হয়ে থানায় মামলা করলেও এখনো অধরা আসামী। উল্টো এখন মোবাইলে মামলা তুলে নেয়ার জন্য হুমকি ধামকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে মেয়েটির অসহায় পরিবার। ভয় আর আতংক নিয়ে শুরু হওয়া এস এস সি পরিক্ষায় শনিবার অংশ গ্রহন করেছে অপহৃতা আদিবাসী তরুনী। ঘটনাটি ঘটেছে ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া উপজেলার আদিবাসী গ্রাম হাতিলেইটে।

উপজেলা আদিবাসী গ্রাম হাতিলেইটে বাদল জেংচাম ও ফরিদা কুবির দ্বিতীয় মেয়ে (১৬) লেখাপড়া করে হাতিলেইট উচ্চ বিদ্যালয়ে। ২০১৯ সালের এস এস সি পরিক্ষার্থী আদিবাসী তরুণী গত ১৭ জানুয়ারী বিদ্যালয় থেকে আসার সময় মধুপুর উপজেলার বেড়ীবাইদ ইউনিয়নের দানকবান্দা গ্রামের মহির উদ্দিনের বখাটে পুত্র হেলাল উদ্দিনসহ ২/৩ জন আদিবাসী মেয়েকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। দিনমজুর বাদল বিকাল গড়িয়ে সন্ধ্যার পরও মেয়েটি বাড়ীতে না আসায় ৩ দিন পর মেয়ের মা ফুলবাড়ীয়া থানায় একটি সাধারন ডায়েরী করেন। সাধারন ডায়েরীর পর ঘটনার ৫ দিনের মাথায় জনৈক এক চেয়ারম্যানের মধ্যস্থতায় অপহৃত আদিবাসী মেয়েটি উদ্ধার হয়। মেয়ের মা ফরিদা কুবি হেলালকে আসামী করে থানায় নারী ও শিশ র্নিযাতন দমর আইনে মামলা দায়ের করেন। অপহৃত আদিবাসী মেয়েটি আদালতে তার জবানবন্দিতে ৫ দিন তাকে অপহরণ করে আটকে রাখার পর হেলাল তাকে ধর্ষনও করেছে বলে জানায়। মামলা হওয়ার পরও পুলিশ ঘটনার মূলহোতা হেলালকে গ্রেফতার করতে পারেনি। বখাটে হেলাল আদিবাসী মেয়েকে মোবাইলে মামলা তুলে নেয়ার জন্য নানা ভাবে হুমকি দিচ্ছে।

আদিবাসী মেয়ে মা ফরিদা কুবি জানায়, আমরা দরিদ্র আদিবাসী মানুষ। আমার ৪ মেয়ে ১ ছেলের মধ্যে অপহৃত মেয়েটি বেশ মেধাবী। তাকে নিয়ে আমাদের স্বপ্ন ছিল অনেক বড়। কিন্তু সে স্বপ্ন পূরন হতে দিল না। থানায় মামলা করার পরও বখাটে হেলাল এখনো গ্রেফতার হয়নি। মোবাইলে মামলা তুলে নেয়ার জন্য নানা ভাবে হুমকি দিচ্ছে। আমার মেয়ের লেখাপড়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। ট্রাইবাল এসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান লুইস জেংচাম শনিবার এস এস সি পরিক্ষার প্রথম দিন মেয়েকে নিয়ে পরিক্ষা কেন্দ্রে গেছে। আমরা দরিদ্র মানুষ পরের বাড়ীতে কাজই করবো না মেয়ে পাহাড়া দিব।

ট্রাইবাল এসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান লুইস জেংচাম জানান, অপহরণ করে ধর্ষনের সুনির্দ্দিষ্ট অভিযোগ থাকার পরও ১২ দিনেই পুলিশ মূল আসামীকে গ্রেফতার করতে পারেনি। উল্টো ঐ বখাটে অপহরণকারী হেলাল অসহায় মেয়ের পরিবারকে নানা ভাবে হুমকি দিচ্ছে।

অপহৃতা আদিবাসী মেয়ে জানান, অপহরণকারী হেলালের বড় ভাই এক চেয়ারম্যান মাধ্যমে থানায় নিয়ে এসেছিল। সে সময় পুলিশ হেলালের বড় ভাইকে ৩ ঘন্টার মধ্যে অপহরণকারী হেলালকে পুলিশের কাছে সোপর্দের কথা বলে ছিল। ১২ দিনেও হেলাল গ্রেফতার হয়নি উল্টো মামলা তুলে নেয়ার জন্য আমার অসহায় পরিবারকে হুমকি দিচ্ছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সাব ইন্সপেক্টর (এস আই) ফেরদৌস আলম জানান, মেয়েটির যাতে পরিক্ষা দিতে কোন সমস্যা না হয় আমি নিজে খোজখবর নিয়েছি। অপহরণকারী হেলালকে গ্রেফতারের জন্য পুলিশি তৎপরতা চলছে।